ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি হত্যাকারীদের বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর না করা হলে আন্দোলন আরও তীব্র হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সাবেক যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) গভীর রাতে রাজধানীর শাহবাগে ওসমান হাদির মৃত্যুর প্রতিবাদে আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ শাহবাগে জড়ো হয়ে বিক্ষোভে অংশ নেন।
সমাবেশে আসিফ মাহমুদ বলেন, হাদিকে যারা হত্যা করেছে, তাদের অবিলম্বে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করতে হবে। তা না হলে স্বাধীনতাকামী জনগণের লড়াই কোনোভাবেই থামবে না। এই আন্দোলন সময়ের সঙ্গে আরও কঠোর ও সংগঠিত রূপ নেবে।
তিনি অভিযোগ করেন, শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যার মাধ্যমে জনগণের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য যুদ্ধ ঘোষণা করেছে নিষিদ্ধ ও পলাতক রাজনৈতিক শক্তি এবং তাদের সহযোগীরা। আসিফ মাহমুদের ভাষায়, তারা ভুলে গেছে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে এই দেশের মানুষ রক্ত দিয়ে রাজপথ দখল করেছিল, কিন্তু মাথা নত করেনি।
সাবেক এই উপদেষ্টা আরও বলেন, ওসমান হাদি যে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছিলেন, তা ছিল নিয়মতান্ত্রিক ও গঠনমূলক। সেই লড়াইয়ে সন্ত্রাস, বিশৃঙ্খলা কিংবা সুবিধাভোগী গোষ্ঠীর কোনো জায়গা নেই। হাদির আদর্শ অনুসরণ করেই আন্দোলনকে সামনে এগিয়ে নিতে হবে।
ছাত্র-জনতার প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসিফ মাহমুদ বলেন, সবাইকে ঐক্যবদ্ধ, শান্তিপূর্ণ ও সংগঠিতভাবে আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। তার কথায়, হাদির খুনিদের হস্তান্তর না হওয়া পর্যন্ত এই প্রতিবাদ চলবে। উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর নির্বাচনী প্রচারণা শেষে রিকশায় ফেরার পথে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। প্রথমে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা শেষে ওই দিনই এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সিঙ্গাপুর নিয়ে যাওয়া হয়। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর জানার সঙ্গে সঙ্গে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে ছাত্র-জনতা। বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শাহবাগসহ রাজধানীর বিভিন্ন মোড়ে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করছেন ছাত্র-জনতা।
এ সময় ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা-ঢাকা,’ ‘ভারতের আগ্রাসন, ভেঙে দাও-গুড়িয়ে দাও,’ ‘ইনকিলাব ইনকিলাব, জিন্দাবাদ-জিন্দাবাদ’, ‘শহীদের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’, ‘আমরা সবাই হাদি হবো, গুলির মুখে কথা বলব’- প্রভূতি স্লোগান দেন বিক্ষোভকারীরা।
ইউটি/টিএ