ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরীফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুর খবরে চট্টগ্রামে উত্তাল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। হাদির হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবিতে বৃহস্পতিবার রাত ১১ টার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকা দুই নম্বর গেইটে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভে নেমেছেন জুলাই আন্দোলনের কর্মী-সমর্থকরা।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সিঙ্গাপুর থেকে শরীফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুর খবর চট্টগ্রামে পৌঁছালে ক্ষোভে ফেটে পড়েন তার অনুসারীরা। রাত সাড়ে ১১টার দিকে কয়েকশ বিক্ষোভকারী দুই নম্বর গেইট মোড়ে জড়ো হয়ে সড়কের মাঝখানে অবস্থান নেন। এতে নগরীর এই ব্যস্ত সড়কে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায় এবং সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট।
বিক্ষোভকারীরা ‘হাদির হত্যার বিচার চাই’, ‘খুনিদের আশ্রয়দাতাদেরও বিচার চাই’, ‘ইনকিলাব মঞ্চের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’—এমন নানা স্লোগান দিতে থাকেন। বিক্ষোভ চলাকালে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলেও এখন পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ইনকিলাব মঞ্চের চট্টগ্রাম মহানগরের এক সংগঠক বলেন,'শরীফ ওসমান বিন হাদি শুধু একজন নেতা ছিলেন না, তিনি আমাদের আন্দোলনের সাহস ও অনুপ্রেরণা ছিলেন। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই—হাদির হত্যার সুষ্ঠু বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।'
তিনি আরও বলেন, প্রশাসন যদি এই ঘটনায় গড়িমসি করে, তাহলে আন্দোলন আরও কঠোর কর্মসূচির দিকে যাবে।
এদিকে আন্দোলনে অংশ নেওয়া তরুণ কর্মী মাসুদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,আমরা বারবার দেখেছি, রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের বিচার হয় না। এবার আর চুপ থাকব না। রাতের আঁধারে হলেও আমরা রাজপথে নেমেছি, কারণ হাদির রক্তের দায় রাষ্ট্রকে নিতেই হবে। বিচার না পাওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরব না।'
বিক্ষোভকারীদের দাবি, হাদির মৃত্যুর পেছনে সুস্পষ্ট ষড়যন্ত্র রয়েছে এবং এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে। তারা অভিযোগ করেন, এখন পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কোনো পরিষ্কার বক্তব্য না আসায় জনমনে আরও সন্দেহ ও ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংখ্যা কিছুটা বাড়তে দেখা যায়। আশপাশের এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ করে দেন। অনেক যাত্রী বিকল্প সড়ক ব্যবহার করে গন্তব্যে যাওয়ার চেষ্টা করেন।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বিক্ষোভকারীরা দুই নম্বর গেইট থেকে একটি মিছিল জিইসি মোরের দিকে যাচ্ছেন।
ইউটি/টিএ