বাস্তবেই খলনায়কের কাঠগড়ায় আল্লু অর্জুন

ভারতের দক্ষিণী সিনেমার অভিনেতা আল্লু অর্জুন এখন বাস্তবেই খলনায়কের কাঠগড়ায়। তার অভিনীত ব্লকবাস্টার সিনেমা 'পুষ্পা ২: দ্য রুল'-এর প্রিমিয়ার শো চলাকালীন সংঘটিত সেই ভয়াবহ পদদলনের ঘটনায় অভিনেতাসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে চার্জশিট গঠন করা হয়েছে। হায়দারাবাদের নামপল্লী আদালতের ৯ম অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (এসিজেএম)-এর কাছে এই নথি জমা দিয়েছে পুলিশ।

২০২৪ সালের ৪ ডিসেম্বর হায়দরাবাদের আরটিসি এক্স রোডসের সন্ধ্যা থিয়েটারে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। প্রিয় তারকাকে এক নজর দেখতে আসা হাজারো ভক্তের চাপে পদদলিত হয়ে রেবতী (৩৫) নামের এক নারী প্রাণ হারান। এ সময় তার শিশুসন্তান শ্রীতেজ গুরুতর আহত হয়ে দীর্ঘ সময় অক্সিজেন সংকটে ভোগে, যা তার শরীরে দীর্ঘমেয়াদী জটিলতা তৈরি করেছে।
তদন্ত প্রতিবেদনে পুলিশ জানিয়েছে, এই ট্র্যাজেডি কোনো সাধারণ দুর্ঘটনা ছিল না বরং এটি ছিল চরম অবহেলা ও নিরাপত্তা বিধি লঙ্ঘনের চূড়ান্ত উদাহরণ। চার্জশিটে আল্লু অর্জুনকে অভিযুক্ত করার মূল কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, পরিস্থিতি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও তিনি থিয়েটারে উপস্থিত হয়েছিলেন। এমনকি পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে আগেভাগে সতর্ক করা হলেও তিনি তা আমলে নেননি এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কোনো সমন্বয় ছাড়াই সেখানে যান।



চার্জশিটে আল্লু অর্জুন ছাড়াও সন্ধ্যা থিয়েটারের মালিক ও ব্যবস্থাপনা কমিটি, অভিনেতার ব্যক্তিগত ব্যবস্থাপক এবং আটজন ব্যক্তিগত বাউন্সারের নাম রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, থিয়েটার কর্তৃপক্ষ ভিআইপিদের জন্য আলাদা প্রবেশপথের ব্যবস্থা করেনি। পাশাপাশি অভিনেতার বাউন্সারদের কিছু আচরণ ও অঙ্গভঙ্গি উত্তেজিত জনতাকে আরও বেপরোয়া করে তোলে, যা শেষ পর্যন্ত পদদলনে রূপ নেয়।

অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪-এ (অবহেলাজনিত মৃত্যু) এবং ভারতীয় ন্যায় সংহিতার (বিএনএস) একাধিক ধারায় মামলা করা হয়েছে। এর আগে ডিসেম্বরে আল্লু অর্জুনকে সাময়িকভাবে গ্রেপ্তার করা হলেও পরে তিনি জামিনে মুক্তি পান।

এদিকে ভুক্তভোগী পরিবার তাদের স্বজন হারানোর বিচারের পাশাপাশি আহত শিশুর চিকিৎসার জন্য উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দাবি করে আসছে। এই চার্জশিট দাখিলের মাধ্যমে মামলাটি এখন বিচারিক পর্যায়ে প্রবেশ করল, যা আল্লু অর্জুনের ক্যারিয়ারে এক বড় আইনি ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

আরপি/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
নিকুঞ্জের বটতলায় শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ Dec 27, 2025
img
ভোটাধিকার নিশ্চিত হলেই রাষ্ট্রের মালিক হবে জনগণ : হাবিব Dec 27, 2025
img
সংকটকালে দেশ রক্ষায় বিএনপির বিকল্প নেই: রবিউল আলম Dec 27, 2025
img
অঙ্কনের ফিফটি ও জাকেরের ক্যামিওতে লড়াইয়ের পুঁজি পেল নোয়াখালী Dec 27, 2025
img
ঢাকায় জনঘনত্ব আরও বাড়ানো আত্মঘাতী পদক্ষেপ : ড. আদিল Dec 27, 2025
img
জানা গেল তাসনিম জারার পদত্যাগ করার কারণ! Dec 27, 2025
img
আর্জেন্টিনায় ভূপৃষ্টে আঘাত হানল ভূমিকম্প Dec 27, 2025
img
মুস্তাফিজের আইপিএলে অংশগ্রহণে মাঠে ভাঙচুরের হুমকি Dec 27, 2025
img
আওয়ামী লীগ সংখ্যালঘুদের নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে : প্রেসসচিব Dec 27, 2025
img
পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রথম নারী গভর্নর শামশাদ আখতার আর নেই Dec 27, 2025
img
মনোনয়ন না পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন বিএনপি নেতা Dec 27, 2025
img
ওসমান হাদি হত্যার বিচারের দাবিতে উত্তাল চট্টগ্রাম Dec 27, 2025
img
সুকেশের পরে নোরা ফাতেহির জীবনে নতুন প্রেমের আগমন! Dec 27, 2025
img
এনসিপি থেকে পদত্যাগ করলেন তাসনিম জারা Dec 27, 2025
img
চট্টগ্রাম-১০ নয়, অন্য যে আসন থেকে লড়বেন আমীর খসরু Dec 27, 2025
img
কোচ জাকিরের সন্তানদের পড়াশোনার দায়িত্ব নিল ঢাকা ক্যাপিটালস Dec 27, 2025
img
স্বতন্ত্র নির্বাচন করার ঘোষণা দিলেন এনসিপির তাসনিম জারা Dec 27, 2025
img
ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল বাংলাদেশের পাশের দেশ ভারত Dec 27, 2025
img
কেউ বাড়াবাড়ি করলে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না: মিষ্টি জান্নাত Dec 27, 2025
img
সমাবেশের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানে বৃক্ষরোপণ করল বিএনপি Dec 27, 2025