দেশে পানের বরজ খুব বেশি দেখা না গেলেও এর অর্থনৈতিক গুরুত্ব কোনো অংশে কম নয়। দেশে-বিদেশে পানের রয়েছে ব্যাপক চাহিদা। এতে বিদ্যমান অনেক ওষধিগুণ। কিন্তু রোগবালাই পান উৎপাদনের একটি প্রধান অন্তরায়। পানের একটি মারাত্মক রোগ হল কাণ্ড পচা রোগ। Sclerotium rolfsii নামক ছত্রাকের আক্রমণে পানে এ রোগ হয়ে থাকে। এ রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে ফলন অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে। তাই চাষিদের এই রোগের লক্ষণ ও দমন ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে জানতে হবে।
পানের কাণ্ড পচা রোগের লক্ষণ
- পান গাছের যেকোনো বয়সে এ রোগ হতে পারে। বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে মাটির ওপর শায়িত লতার গোঁড়ায় মাটির কাছের একটি বা দুটি পর্ব মধ্যে কালো বর্ণ ধারণ করে।
- এই রোগে আক্রমণের ফলে পান গাছের উপরের লতার পাতা হলুদ হয়ে ঝরে পড়ে। এছাড়াও মাটি সংলগ্ন লতার ওপর সাদা সুতার মত ছত্রাক মাইসেলীয় দেখা যায়।
- পরবর্তীতে হালকা বাদামি থেকে বাদামি রঙ এর সরিষার ন্যায় অসংখ্য দানার মত স্ক্লেরোসিয়াম দেখা যায় এবং মাটি সংলগ্ন লতা পচে গাছ ঢলে পড়ে মারা যায়।
পানের কাণ্ড পচা রোগ দমন ব্যবস্থাপনা
- উক্ত রোগাক্রান্ত লতা-পাতা পানের বরজ থেকে তুলে মাটিতে পুঁতে বা পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
- রোগ প্রতিরোধী পানের জাত যেমন- বারি পান-৩ এর চাষ করতে হবে।
- পান চাষের পূর্বে জমি গভীরভাবে চাষ দিয়ে রোদে ভালো করে শুকাতে হবে।
- পানের বরজে সবসময় আগাছামুক্ত ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
- যদি বরজে পানি বা বৃষ্টির পানি জমে তাহলে দ্রুত নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে। তা না হলে পান গাছের গোঁড়া পচে যেতে পারে।
- পানের বরজে যেন সরাসরি রোদ না পড়ে সে জন্য সার্বক্ষণিক ছায়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়াও সুস্থ সবল রোগমুক্ত পানের লতা সংগ্রহ করতে হবে।
- ট্রাইকোডার্মা কম্পোস্ট সার প্রতি গাছে পাঁচ গ্রাম হারে জমিতে প্রয়োগ করতে হবে।
- লতা রোপণের পূর্বে প্রতি লিটার পানিতে দুই গ্রাম হারে কার্বোক্সিন (১৭.৫%) + থিরাম (১৭.৫%) গ্রুপের যেমন- প্রোভাক্স বা কার্বেনডাজিম গ্রুপের যেমন- ব্যভিস্টিন দ্বারা লতা শোধন করে নিতে হবে।
- বরজে রোগ দেখা দিলে হেক্সাকোনাজল গ্রুপের যেমন- কনটাফ ৫ ইসি ছত্রাকনাশক ১ মিলি/ লিটার অথবা মেনকোজেব (৬৪%) + মেটালাক্সিল (৮%) গ্রুপের যেমন- পদ্মমিল ৭২ ডব্লিউপি ২ গ্রাম/লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। তথ্য সূত্র- উদ্ভিদ সংরক্ষণ উইং, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর
টাইমস/জিএস