জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচনের দুই দিন আগে ছাত্রী হলে শিক্ষার্থীদের ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল টাকা দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘অদম্য জবিয়ান ঐক্য’ প্যানেল।
রোববার (২৮ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার মোস্তফা হাসান বরাবর অভিযোগপত্র জমা দেন প্যানেলটির জিএস প্রার্থী আব্দুল আলিম আরিফ।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, মনোনয়নপত্র সংগ্রহের সময় থেকেই কয়েকজন প্রার্থী ধারাবাহিকভাবে জকসু নির্বাচন আচরণবিধি লঙ্ঘন করে আসছেন। বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে একাধিকবার অবহিত করা হলেও এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে আচরণবিধি লঙ্ঘনের এই প্রবণতা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, গত ২৬ ডিসেম্বর (শুক্রবার) রাত আনুমানিক ১১টার দিকে নওয়াব ফয়জুন্নেছা হলে ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেলের জিএস প্রার্থী খাদিজাতুল কুবরা শিক্ষার্থীদের মধ্যে টাকা বিতরণ করেন এবং এজিএস প্রার্থী আতিকুর রহমান তানজিল উপঢৌকন হিসেবে চকলেট বিতরণ করেন। অথচ জকসু নির্বাচন আচরণবিধির ১১-এর ‘ঙ’ ধারায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে ভোটারদের কোনো প্রকার পানীয়, খাদ্য বা উপঢৌকন প্রদান করা যাবে না।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে অভিযোগপত্রে বলা হয়, সংশ্লিষ্ট প্রার্থীদের কাছে আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে জানতে চাইলে তারা তা স্বীকারও করেছেন। প্রকাশ্যে এমন অনিয়ম সংঘটিত হওয়ার পরও নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
একইসঙ্গে অভিযোগপত্রে উদ্বেগ জানিয়ে বলা হয়, এ ধরনের অনিয়ম চলতে থাকলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা সুষ্ঠুভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা হারাবে, যা পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে।
বিষয়টি স্বীকার করে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের জিএস প্রার্থী খাদিজাতুল কোবরা বলেন, টাকা দেওয়ার বিষয়টি সত্য। তবে ছাত্রদল থেকে কয়েক মাস আগেই ঘোষণা দিয়েছি যে আমরা মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেব। সেজন্য আমাদের তালিকা অনুযায়ী সেই লিস্টটা দিয়েছি।
জকসু নির্বাচনের কয়েক দিন আগে এভাবে সরাসরি অর্থ বিতরণের মাধ্যমে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনো উত্তর না দিয়ে কল কেটে দেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে নৃবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, ছাত্রদল সমর্থিত জিএস প্রার্থী খাদিজাতুল কুবরা এসে আমাদের বৃত্তির নাম করে টাকা দিয়ে গেছে। শুনেছি কাউকে দুই হাজার আবার কাউকে তিন হাজার টাকা দিয়েছে ছাত্রদল প্যানেলের নামে। আমাদের রুমেও এসেছিল টাকা নিয়ে কিন্তু আমরা তাদের টাকা ফিরিয়ে দেই।
আরপি/টিএ