গর্ভবতী গাভীর যত্ন

গাভীর গর্ভকাল সাধারণত ২৮২ +/- ৫ দিন বা প্রায় সাড়ে ৯ মাস। অন্যান্য সময়ের তুলনায় এই সময়ে গাভীর বিশেষ যত্ন নিতে হয়। এই পরিচর্যার উপর নির্ভর করবে আগত বাছুর ও দুধের উৎপাদন কেমন হবে, গাভীর সুস্থতা, প্রসব পরবর্তী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি ইত্যাদি। তাই প্রতিটি গাভীর প্রজননের সঠিক সময় জানা অত্যন্ত জরুরী।

গর্ভকাল নির্ণয়ের জন্য বীজ দেয়ার (ষাঁড় দেখানোর) আড়াই থেকে তিন মাস পর প্রাণী চিকিৎসক দ্বারা পরীক্ষা করে গর্ভধারণ নিশ্চিত করতে হবে। তা থেকে বাচ্চা প্রসবের সম্ভাব্য দিন নির্ণয় করা হয়। গর্ভবতী হওয়ার পর থেকে বাচ্চা প্রসবের দু’মাস পূর্ব পর্যন্ত গাভীকে যথেষ্ট পরিমাণ সুষম ও সহজ পাচ্য খাদ্য সরবরাহ করতে হবে। সেইসঙ্গে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ও মিনারেল থাকা বাঞ্ছনীয়।

গাভীকে যথাসম্ভব আলাদা রাখার ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে কোনো রকম দৌড়ঝাঁপ বা অন্য প্রাণীর সঙ্গে লড়াই করতে না পারে। গর্ভকালীন গাভীকে তাজা ঘাস সরবরাহ করতে হবে। দানাদার খাদ্যের পাশাপাশি আশ জাতীয় খাবার খাওয়াতে হবে। গর্ভবতীর গাভীর দ্বারা হালটানা, শস্য মাড়াই এর কাজ করানো যাবে না।

গর্ভাবস্থার শেষ দুই মাস গাভীর দেহে সঞ্চিত ভিটামিন, খনিজ পদার্থ, চর্বি ও অন্যান্য পুষ্টিকর উপাদানসমুহ প্রায় নিঃশেষ হয়ে যায়। তাই এই দু’মাসে অতিরিক্ত পরিচর্যার প্রয়োজন। এই সময়ে গাভীকে পূর্ণ বিশ্রামে রাখতে হবে। স্বাস্থ্যের উপর বিবেচনা করে দানাদার খাদ্যের পরিমাণ কমিয়ে সহজ পাচ্য খাদ্যের পরিমাণ বাড়াতে হবে। সঙ্গে কাচা ঘাস খাওয়ালে ভালো হয়। এই সময় গাভীকে অবশ্যই পাল থেকে সরিয়ে আলাদা জায়গায় রাখতে হবে এবং সপ্তাহে দু'দিন গোসল করানো উত্তম।

প্রসব পূর্ববর্তী উপসর্গ বা লক্ষণ দেখা দিলে গাভীকে একটি বিশেষ ঘরে খড় বিছানো মেঝেতে নিতে হবে। প্রসব ঘরে পর্যাপ্ত আলো বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা থাকতে হবে। স্বাভাবিক প্রসবে বাচ্চার সামনের দুটি পা এবং নাক মুখ একসঙ্গে যোনি দারে প্রথমে বের হয় এবং ক্রমশ ধীরে ধীরে ঘাড়, দেহের মধ্যাংশ, কোমরের নিম্নভাগ এবং অবশেষ পিছনের পা বের হয়ে আসে। এর ব্যতিক্রম ঘটলে তা প্রসবকালীন সমস্যা ধরা হয়। তখন প্রসবে অভিজ্ঞ বা ভেটেরিনারিয়ানের সাহায্য নিতে হয়।

গাভীর গর্ভাবস্থায় উপরোক্ত পরিচর্যাগুলো মেনে চললে আমরা পেতে পারি একটা সুন্দর বাছুর আর সুস্থ গাভী। সেই গাভী থেকে পেতে পারি পর্যাপ্ত পরিমাণে দুধ। যা আমাদের নিজেরদের চাহিদা যেমন পূরণ হবে, সঙ্গে সঙ্গে দেশের জাতীয় চাহিদা পূরণে সামান্য হলেও অবদান রাখা যাবে।

 

টাইমস/জিএস

Share this news on:

সর্বশেষ

img

কাতারে হামলা

নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকে বসছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী Sep 15, 2025
img
দেশবাসী আন্দোলনের প্রস্তুতি গ্রহণ করুন : জামায়াত সেক্রেটারি Sep 15, 2025
img
লেভেল ফোর কোচিং শেষ করলেন মঞ্জু Sep 15, 2025
img
ওমানকে হারিয়ে প্রথম জয় আমিরাতের Sep 15, 2025
img
বিসিবি নির্বাচনে খেলোয়াড় প্রতিনিধি চায় কোয়াব! Sep 15, 2025
img
নয় ঘণ্টার ম্যারাথন জেরা শেষে ইডির দপ্তর থেকে বের হলেন মিমি Sep 15, 2025
img
আমরা ১৭ বছর ক্ষমতায় নাই, তবুও মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি: শামা ওবায়েদ Sep 15, 2025
img
আদালতকেন্দ্রিক ড্রামায় শাহ্‌ বানু চরিত্রে ইয়ামি গৌতম Sep 15, 2025
img
মাঝআকাশে যাত্রীর প্রাণ বাঁচালেন রাশিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী Sep 15, 2025
রানীর মতো ফিরলেন অপু বিশ্বাস, ব্রাইডাল লুকে মুগ্ধ ভক্তরা Sep 15, 2025
‘আমি স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম’ হেনস্তা নিয়ে মুখ খুললেন সোহা Sep 15, 2025
আশা টিকে আছে! সুপার ফোরে উঠতে বাংলাদেশের সামনে তিনটি পথ Sep 15, 2025
ইউরোপে তিন পরাশক্তির জয়ের হ্যাটট্রিক Sep 15, 2025
গতকালের ঘটনার যে ব্যাখ্যা দিলেন সূর্যসেন হলের ভিপি Sep 15, 2025
৪৫বছরেও আলোর মুখ দেখেনি কুমিল্লা-ঢাকা সরাসারি রেল যোগাযোগ Sep 15, 2025
রাশিয়া জানালো, ভারত-বিরোধী যে কোনো পদক্ষেপ ফলহীন! Sep 15, 2025
img
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের উপকরণ সংগ্রহ শুরু করেছে ইসি Sep 15, 2025
img
মহারাষ্ট্রীয় সংস্কৃতি ঘিরে আসছে শ্রদ্ধার বড় বাজেটের সিনেমা Sep 15, 2025
img
অতিরিক্ত আইজি সরদার তমিজউদ্দীন আহমেদের বিদায় সংবর্ধনা Sep 15, 2025
img
কুয়েতে পৌঁছেছেন বাংলাদেশের ব্যবসায়ী নেতারা Sep 15, 2025