টিজার মুক্তির পর থেকেই ‘হোক কলরব’ যেন আচমকাই ঢুকে পড়েছে বিতর্কের কেন্দ্রে। একটি সংলাপ, আর তাতেই উত্তাল সামাজিক মাধ্যম থেকে শুরু করে রাজনৈতিক মহল। পুলিশের উর্দি পরা শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়ের মুখে শোনা যায়, “নমস্কার, আমি ক্ষুদিরাম চাকী। না, আমি ঝুলি না, ঝোলাই!” এই কথাটুকুই যথেষ্ট হয়ে ওঠে নতুন করে ক্ষোভ উসকে দেওয়ার জন্য। অনেকের অভিযোগ, বাংলার বীর শহিদ ক্ষুদিরাম বসুর স্মৃতিকে অসম্মান করা হয়েছে।
বিতর্কের আগুন ছড়াতেই ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামেন পরিচালক রাজ চক্রবর্তী। তাঁর বক্তব্যে সুর নরম, তবে অবস্থানে অনড়। রাজ স্পষ্ট জানান, ছবির চরিত্রের নাম ক্ষুদিরাম চাকী, যিনি একজন পুলিশ অফিসার। কোন পরিস্থিতিতে ওই সংলাপ বলা হয়েছে, তা পুরো ছবি না দেখলে বোঝা যাবে না। প্রয়োজনে সংলাপ ছেঁটে ফেলার কথাও জানান তিনি। একই সঙ্গে জোর দিয়ে বলেন, বাঙালিরা কখনও মনীষীদের অসম্মান করে না।
এরপরই রাজের তোপ গিয়ে পড়ে রাজনৈতিক প্রচারের দিকে। তাঁর দাবি, একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের তথ্যপ্রযুক্তি শাখা ইচ্ছাকৃতভাবে ক্ষুদিরাম চাকীর সঙ্গে ক্ষুদিরাম বসুকে মিলিয়ে দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। পরিচালক বলেন, যেমন নরেন্দ্রনাথ দত্তের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদিকে এক করে দেখা যায় না, তেমনই এই দুই ক্ষুদিরামের মধ্যেও আকাশপাতাল তফাত। টিজারের কয়েক সেকেন্ডের দৃশ্য দেখে পুরো ছবির বিচার করা অন্যায় বলেই মনে করেন তিনি।
এই বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়ও। সংলাপটি যাঁর মুখে শোনা গিয়েছে, সেই অভিনেতার প্রতিক্রিয়া সংক্ষিপ্ত কিন্তু স্পষ্ট। শাশ্বতের কথায়, পুরো ছবি না দেখে যাঁরা মন্তব্য করছেন, তাঁদের কথা ভেবে সময় নষ্ট করার কোনও মানে নেই। তাঁর মতে, গল্প ও প্রেক্ষাপট না জেনে রায় দেওয়াই আসল সমস্যা।
সব মিলিয়ে ‘হোক কলরব’ মুক্তির আগেই রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক আর আবেগের সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে। এগারো বছর আগে যে স্লোগান রাজ্যের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে আন্দোলিত করেছিল, সেই নামেই ছাত্র রাজনীতির গল্প বলতে গিয়ে আবারও বিতর্কের আগুনে ঘি পড়ল। আগামী তেইশে জানুয়ারি ছবি মুক্তির পরই স্পষ্ট হবে, এই সংলাপ আসলে গল্পের প্রয়োজনে, না কি বিতর্কই হয়ে উঠবে ছবির সবচেয়ে বড় পরিচয়।
এমকে/টিএ