ইনফ্লুয়েন্সার সোহিনী গঙ্গোপাধ্যায়ের জীবনে গত কয়েক মাস যেন একের পর এক দুঃস্বপ্ন। কিছু মাস আগেই মৃত সন্তান প্রসবের খবরে সোশ্যাল মিডিয়ায় তোলপাড় হয়েছিল। সেই সময় চিকিৎসকের গাফিলতি নিয়ে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগও সামনে আসে। এরপর ২ সেপ্টেম্বর স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে একটি দীর্ঘ ভিডিয়ো পোস্ট করেন সোহিনী। তারপর দীর্ঘদিন সমাজমাধ্যম থেকে নিজেকে আড়াল করে রাখেন তিনি। অবশেষে ধীরে ধীরে ফেরার সময়ই সামনে এল আরও এক কঠিন বাস্তব—ফের হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল তাঁকে।
সম্প্রতি একাধিক ছবি পোস্ট করে নিজের শারীরিক ও মানসিক অবস্থার কথা খোলাখুলি জানিয়েছেন সোহিনী। তিনি লেখেন, সি-সেকশন অপারেশনের ৯০ দিনের মাথায় গত মাসে তাঁর গলব্লাডার স্টোনের অপারেশন হয়। অপারেশনের এক মাস পেরোলেও যন্ত্রণা কমেনি। শরীরের ব্যথার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মানসিক অসুখও। IBS-এর কারণে জরায়ুতে চাপ পড়লে সেলাইয়ের জায়গায় অসহ্য যন্ত্রণা হচ্ছিল বলে জানান তিনি। পুজোর সময় উঠে দাঁড়ানো, বসা বা শোয়া—কিছুই সম্ভব হচ্ছিল না। ব্যথায় শুধু কাঁদতেন আর ভাবতেন, শরীরে প্রাণ কেন এখনও রয়েছে!
সোহিনীর কথায়, সন্তানহারা হওয়ার পর তাঁর শরীর ও মনে একসঙ্গে বাসা বেঁধেছে হরমোনাল ডিসব্যালেন্স, স্ট্রেস, ট্রমা, প্যানিক অ্যাটাক ও ডিপ্রেশন। এরই সঙ্গে ফ্যাটি লিভার, IBS ও গলব্লাডার স্টোনের সমস্যাও দেখা দেয়। সবচেয়ে যন্ত্রণাদায়ক ছিল সেলাইয়ের জায়গায় প্রবল ব্লোটিং ও চাপ।
পোস্টে হৃদয়বিদারক স্মৃতিও ভাগ করে নেন তিনি। লেখেন, যিনি সবচেয়ে বেশি সময় সন্তানকে গর্ভে রেখেছিলেন, তিনিই ঠিক করে তাকিয়ে দেখার সুযোগ পাননি। শুধু একমাথা চুল আর নরম হাত ছুঁয়ে দেখেছিলেন। আজও ঘুমের মধ্যে মনে হয় সেই ছোট্ট হাত তিনি ধরে আছেন। তখন কান্না চেপে আসে, শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। তবে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করছেন তিনি। এই লড়াইয়ে সবসময় পাশে আছেন তাঁর স্বামী।
সবশেষে সোহিনী লেখেন, সন্তান হারানোর শোকের থেকেও বেশি কষ্ট পেয়েছেন মানুষের অসংবেদনশীলতায়। সমাজ ও আত্মীয়দের গোপন দোষারোপ তাঁদের আরও শক্ত করেছে। বছরের শেষে সকলকে ভালো থাকার বার্তা দিয়ে স্পষ্ট জানান, আপাতত তিনি কাজে ফিরতে পারবেন না। এই পোস্ট করা সব ব্র্যান্ডের উদ্দেশেই সেই বার্তা।
এবি/টিকে