করোনা কাভার করা সাংবাদিকের জন্য ১০ পরামর্শ

সাধারণ মানুষের কাছে পরিষ্কারভাবে নির্ভরযোগ্য তথ্য পৌঁছে দেয়া একজন সাংবাদিকের দায়িত্ব। বিশেষ করে এমন একটা বৈশ্বিক সংকটের সময়, এই দায়িত্ব পালন জটিল হয়ে দাঁড়িয়েছে, যখন নোভেল করোনাভাইরাসের কারণে কোভিড-১৯ রোগটি ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ছে।

এ বিষয়ে সেনজেন ভিত্তিক ফ্রিল্যান্সার সাংবাদিক মিশেল স্ট্যান্ডার্ট মন্তব্য করেন, ‌‘এরকম একটা ঘটনায় প্রচুর ধোঁয়াশা থাকে, ‍এই বাঁধা অতিক্রম করে, যা ঘটছে তার একটা পরিষ্কার ছবি বের করে আনা সাংবাদিকদের দায়িত্ব।’ মি. স্ট্যান্ডার্ট ব্লুমবার্গ, দ্যা গার্ডিয়ান, আল-জাজিরাসহ বিভিন্ন মিডিয়াতে লেখালেখি করেন। ২০১৯ সালে করোনাভাইরাসের ব্যাপক বিস্তারের সময় থেকে স্ট্যান্ডার্ড চীনে অবস্থান করে ভাইরাসটি নিয়ে রিপোর্টিং করছেন।

বিশেষত সংকট চলাকালীন সাংবাদিকদের জনসাধারণকে অবহিত করা এবং আতঙ্ক জাগানোর মধ্যে একটি কঠিন ভারসাম্য বজায় করে চলতে হয়। এ বিষয়ে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মহামারী বিভাগের অধ্যাপক ড. স্টিফেন মোর্স বলেন, ‘আপনি মানুষের আত্মতুষ্টিতে ঝুঁকে পড়া (অসচেতনতা) এড়াতে চান। তবে, আপনি এটিকে এতো বেশি ছড়িয়ে দিতে চান না, যাতে করে ভিত্তিহীন ভয় বা আতঙ্ক সৃষ্টি হতে পারে।’

চীনে সরকারি নিয়ন্ত্রণের (সেন্সরশিপের) মুখে এই কাজটি অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়িয়েছে। চীনা নাগরিকরা সরকারি সাবধানবাণী বা তিরস্কারের আশঙ্কা করায় স্ট্যান্ডার্টের পক্ষে ক্রমশ সংবাদের উৎস লিপিবদ্ধ করা কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে। স্ট্যান্ডার্ট বলেন- “চীনের একজন সাধারণ নাগরিক মনে করেন যে, স্থানীয় সরকার কর্মকর্তাদের অনুমোদন ছাড়া তারা মনের কথা খুলে বলতে পারবেন না। এটি একটি পাগলামী এবং একইসঙ্গে উদ্বেগের কারণ।”

এরকম কঠিন পরিস্থিতিতেও স্ট্যান্ডার্টের মতো সাংবাদিকদের ভাইরাসের ‘স্টোরি’ কাভার করা চালিয়ে যেতে হয়। যারা স্বাস্থ্য সেবাতে আছেন তারা থেকে শুরু করে যারা অর্থনীতি, পরিবহন প্রভৃতি কাভার করেন এমন লেখক-সাংবাদিকরা বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে এ বিষয়টি নিয়ে রিপোর্ট করছেন।

যেসব সাংবাদিক এই সংক্রান্ত স্টোরি কাভার করছেন তাদের সহায়তার উদ্দেশ্যে, কোভিড-১৯’এর উপর রিপোর্ট করার জন্য অভিজ্ঞ সাংবাদিকরা সহায়ক একটি পরামর্শ তালিকা করেছে।

মাঠের পরিস্থিতি বুঝুন, আপনার কাজের মাধ্যমে তা প্রতিফলিত করুন
অন্য যে কোনো বৈশ্বিক সংকটের মতো, প্রচুর তথ্য চারদিকে ঘুরপাক খাচ্ছে এবং এর সবগুলো ভালো খবর নয়। ইন্টারনেটে তথ্যের বিস্তার ভোক্তাকে বিভ্রান্ত করতে পারে। যেমন একটি ছবিতে দেখা যায়- ওহানের রাস্তায় একজন মৃত লোক পড়ে আছে আর চিকিৎসাকর্মীরা তাকে ঘিরে রেখেছে। দ্য গার্ডিয়ান ছবিটিকে ‘করোনাভাইরাস সংকটে জর্জিত উহানের প্রতিচ্ছবি’ হিসেবে বর্ণনা করে। তবে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েই যে লোকটি মারা গেছে এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

সংকট সম্পর্কে ভিজ্যুয়াল প্রতিবেদন গুরুত্বপূর্ণ, তবে এই কাজটি দায়বদ্ধতার সঙ্গে পরিচালনা করা দরকার। রিপোর্টারদের অবশ্যই নিশ্চিত হওয়া উচিত যে, তাদের চিত্রগুলো যা চলছে তা সঠিকভাবে চিত্রিত করেছে। স্পর্শকাতর ছবি, যেমন রাস্তায় পড়ে থাকা লোকটির ছবি, একটি অসম্পূর্ণ চিত্র দেয় এবং আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়। ‘উহান থেকে উঠে আসা ছবিগুলোর একটি টাইমলাইন এবং সংরক্ষণাগার তৈরি করা গুরুত্বপূর্ণ। চীনে তথ্যের উপর গড়ে ওঠা সাধারণ অবিশ্বাসের কারণে, এর উপর বিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে হলে কী ঘটছে তা মানুষের জানা উচিত।’ বেইজিং ভিত্তিক ফ্রিল্যান্স রিপোর্টার ও ফটো জার্নালিস্ট বেটিং জোলস এমন মন্তব্য করেন। জোলস কলম্বিয়া জার্নালিজম রিভিউ, ন্যাশনাল পাবলিক রেডিও, আল-জাজিরাসহ বিভিন্ন মাধ্যমের সঙ্গে তিনি যুক্ত।

এমনকি ছবি তোলা বা লেখা লেখা শুরু করার আগে, লোকদের সঙ্গে কথা বলা এবং মাঠের পরিস্থিতি বুঝে নেয়া গুরুত্বপূর্ণ। তারপরে এটিকে আপনার প্রতিবেদনে ফুটিয়ে তুলুন এবং এমন বিষয়বস্তু এড়িয়ে চলুন, যা চলমান পরিস্থিতির সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।

স্ট্যান্ডার্ট বলেন, ‘যদি পরিস্থিতি সেরকমই হয়, তাহলে কোনো স্টোরির ফলে ভয় বা উদ্বেগ সৃষ্টি হলেও আমি মনে করিনা সেটা ভুল। তবে আপনি যদি ঘটনাস্থলের বাইরে থাকেন এবং গোটা কয়েক লোকের কাছে সেটা শুনে থাকেন, তবে আপনার সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত।’

বিশ্লেষণ নয়, রিপোর্টিংয়ে ফোকাস করুন
‘মতামত ও বিশ্লেষণের আলাদা ভূমিকা রয়েছে, তবে এ রকম বড় আকারের বিপর্যয় বুঝতে সত্যিই সময়ের প্রয়োজন। আমি এই পর্যায়ে আন্দাজের উপর মতামত দেয়া এড়িয়ে চলতে চেষ্টা করেছি। কারণ, এখনো অনেক রিপোর্ট করার দরকার আছে।’ মন্তব্য করেন স্ট্যান্ডার্ড।

উদাহরণস্বরূপ, ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের পথ অনুসরণ করবেন না এবং এমন একটি উপসম্পাদকীয় প্রকাশ করবেন না, যা চীনকে ‘এশিয়ার প্রকৃত অসুস্থ মানুষ’ হিসেবে চিহ্নিত করে। যা বর্ণবাদী আচরণ হিসেবে ব্যাপক সমালোচিত হয়েছে এবং ভাইরাসের কারণে দেশটির অর্থনৈতিক পতন নিয়ে জল্পনা তৈরি করেছে। দীর্ঘমেয়াদী আর্থিক প্রভাব বোঝার জন্য এটি অত্যধিক তাড়াহুড়া।

স্ট্যান্ডার্ট এমন সব বিষয়ের বিরুদ্ধে সতর্ক করেছেন যেগুলো চীনের অভ্যন্তরে বা বাইরে যে কোনো রাজনৈতিক প্ররোচনা প্রজেক্ট করার চেষ্টা করে। তিনি বলেন- ‘আমরা কেবল বলগেমের তৃতীয় ইনিংসে আছি এবং সত্যিই জানি না জিনিসটা কীভাবে খেলা হবে।‘

উল্লেখ করা উচিত যে, চীন উল্লেখিত এই নিবন্ধটির প্রতিক্রিয়া হিসেবে তিনজন ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল সাংবাদিককে বহিষ্কার করেছে। তবে নিবন্ধটি ত্রুটিপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য এটি একটি উদ্বেগজনক পদক্ষেপ।

আপনার শিরোনাম নিয়ে সচেতন হোন
এই পরামর্শটি সব সম্পাদকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। শিরোনাম দিয়ে পাঠকদের বিভ্রান্ত করবেন না। প্রচুর তথ্য সোশ্যাল মিডিয়াতে দ্রুত গতিতে ঘুরতে থাকার কারণে অনেকেই শুধু শিরোনাম থেকে সংবাদ গ্রহণ করেন। এরকম একটি সংকটপূর্ণ মুহূর্তে ক্লিকের জন্য সত্য বিসর্জন করবেন না।

জোলস বলেন- ‘আমি সক্রিয়ভাবে আমার গল্পগুলোর এমন শিরোনাম দেয়ার চেষ্টা করি, যা পরিস্থিতির প্রতিফলিত ঘটায় এবং সংবেদনশীল নয়।’

মনে রাখবেন : সব পরিসংখ্যান নির্ভুল নয়
সাংবাদিকরা সংখ্যার উপর নির্ভর করেন এবং ডেটা রিপোর্টিংয়ের একটি জটিল অংশ। তবে ডা. মোর্স সতর্ক করেছেন যে, ডেটা সর্বদা নির্ভরযোগ্য নাও হতে পারে।

‘আপনি যখন কোনো মহামারী বা কোনো রোগের পরিসংখ্যান দেখেন সেগুলো নির্ভুল নয়। শুরুর দিকে এগুলো আরও অনিশ্চিত ছিল।’

আপনার উপলব্ধ ডেটা অবহেলা করবেন না, তবে পাঠক যেন সংখ্যাগুলির পেছনে সীমাবদ্ধতা ও অনিশ্চয়তা রয়েছে তা জানতে পারে সেটা নিশ্চিত করুন।

সংক্রমণটির আনুমানিক ইনকিউবেশন পিরিয়ড ১৪ দিন অবধি থাকে। যার অর্থ কেউ ভাইরাসে সংক্রমিত হলে দু’সপ্তাহের মধ্যে কোনো লক্ষণ না দেখা দেয়া সম্ভব। ফলে সংখ্যা প্রকৃত অবস্থার থেকে কম হয় বলে মন্তব্য করেছেন ডা. মোর্স।

বিভিন্ন লোকের সঙ্গে কথা বলুন
ভাইরাসটি দেশ, শহর ও সামাজিক স্তরের মানুষকে প্রভাবিত করেছে। চীনে ক্ষতিগ্রস্তদের অভিজ্ঞতা সিঙ্গাপুরের মতো হবে না, আবার ইতালির অবস্থা অন্যদের মতো হবে না। এমনকি কোনো দেশ বা শহরের মধ্যেও প্রচুর পার্থক্য রয়েছে।

‘লকডাউনের আওতায় থাকা লোকেরা সবাই অসুস্থ ও মারা যায় এমনটা নয়। তাদের মধ্যে কিছু লোক অবসাদে ভুগছেন’ মন্তব্য করেন জোলস।

লোকেরা যে বিভিন্ন বাস্তবতার মধ্যে বাস করছেন সেটা ধরতে (বুঝতে) যথাসাধ্য চেষ্টা করা সাংবাদিকদের দায়িত্ব। তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিবেদনের জন্য সাংবাদিকদের বৃহৎ জাল তৈরি করতে হবে। এমনকি জালটির বিস্তার যদি কেবল একটি শহরের মধ্যেও সীমাবদ্ধ থাকে, তবুও বিভিন্ন সামাজিক স্তর জুড়ে এটি বিস্তৃত থাকবে।’

স্ট্যান্ডার্ট যতটা সম্ভব বেশি লোকের সঙ্গে কথা বলার গুরুত্বকে জোর দিয়েছেন, বিশেষত যে দেশগুলোতে সেন্সরশিপ বেশি সুনির্দিষ্ট। এই পরিস্থিতিতে তিনি চীনে এমন কোনো উৎস খুঁজে বের করতে আরও বেশি অসুবিধায় পড়ছেন, যা থেকে নির্ভরযোগ্যভাবে সম্পূর্ণ চিত্রটি পাওয়া যাবে।

উদাহরণস্বরূপ তিনি বলেন- ‘আমরা জানি যে অনেক কারখানা নতুন করে শুরু করার জন্য খুব কঠিন সময় পার করছে। তবে অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান এটি ঢেকে রাখার চেষ্টাও করছে।’

বর্ণবাদী ফাঁদ এড়িয়ে চলুন
বৈশ্বিক মহামারী থেকে বর্ণবাদ ও জেনোফোবিয়ার বিস্তার ঘটার ইতিহাস রয়েছে এবং কোভিড-১৯ বর্তমানে একটি মহামারী। এই সপ্তাহে, লন্ডনে চীনা বংশোদ্ভূত একজন সিঙ্গাপুরীয় ব্যক্তিকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। তার আক্রমণকারীরা তাকে বলেছিল যে তারা ‘তার করোনাভাইরাস’ চায় না।

সান ফ্রান্সিসকো, লস অ্যাঞ্জেলস, নিউ ইয়র্কসহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরের চায়নাটাউনগুলোও তাদের বাজার হারিয়েছে। গণমাধ্যমকে অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে, যাতে তাদের স্টেরিগুলো থেকে স্টেরিওটাইপ বা বর্ণবাদ উৎসারিত না হয়।

সাংবাদিকদের জন্য একটি পরামর্শ তালিকা প্রকাশ করেছে এশিয়ান আমেরিকান সাংবাদিক সমিতি। তাতে বলা হয়েছে- ফেস মাস্কযুক্ত লোকের ছবিতে কনটেক্স/ প্রসঙ্গ যুক্ত করা উচিত এবং চায়নাটাউনের সঙ্গে সম্পর্ক নেই এমন স্টোরিতে ওই স্থানের ছবি ব্যবহার করা উচিত নয়। পাশাপাশি ভাইরাসের নামের সঙ্গে কোনো ভৌগোলিক তথ্যসূত্র ব্যবহার এড়িয়ে চলতে বলা হয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের সাক্ষাৎকার নেয়ার উপায় বিবেচনা করুন
আপনি অসাধারণ লেখক হতে পারেন, তবে আপনি যদি সঠিক উৎস না পান তবে আপনার কাজ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সুতরাং বিশেষজ্ঞ এবং তাদের মতামতগুলো গবেষণার ব্যাপারে যত্ন নিন।

মোর্সের মতে ‘একজন ভালো বিশেষজ্ঞের সন্ধান পাওয়া একমাত্র সমস্যা নয়। এমন লোকদের সন্ধান পাওয়া কঠিন, যারা পক্ষপাতিত্ব থেকে নিজেকে দূরে রাখতে সক্ষম হন বা তাদের নিজস্ব পক্ষপাতিত্ব ঘোষণা করেন। কারণ আমাদের সবার পক্ষপাতিত্ব রয়েছে।’

কোনো বিশেষজ্ঞকে নির্দিষ্ট করার পর তার পক্ষপাতদুষ্টতা সম্পর্কে খোজ নিন এবং শুধু চেহারা দেখে কাজের মূল্যায়ন করবেন না। এটি আপনাকে তাদের বিশ্বদর্শন বুঝতে সহায়তা করবে এবং আপনার স্টোরিটি শক্তিশালী করবে।

কীভাবে কোনো রোগ ছড়িয়ে পড়ে তা বোঝার জন্য অনেক সাংবাদিক মডেলারের উপরেও নির্ভর করেন। তবে, মডেলগুলো অনুমানের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডা. সীমা ইয়াসমিন। ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া আনেনবার্গের সেন্টার ফর হেলথ জার্নালিজমের (সিএইচজে) সাম্প্রতিক ওয়েবিনার চলাকালীন সাংবাদিক ও জেএসকে ফেলো ডা. ইয়াসমিন এই মন্তব্য করেন। তাই তারা কোন অনুমানের উপর নির্ভর করছে তা সর্বদা জিজ্ঞাসা করুন।

উত্তেজনাপূর্ণ নয় এমন গল্পগুলোকে অবহেলা করবেন না
কোভিড-১৯ এর মতো একটি বিশ্বব্যাপী আলোচিত বিষয় হার্ড-হিট রিপোর্টিং, গভীর তদন্তসহ আরও অনেক কিছুর দাবি রাখে। তবে আপনি যে স্টোরিগুলো লিখতে যাচ্ছেন তার প্রতিটিই পুলিৎজার পুরষ্কারের যোগ্য নয়, লস অ্যাঞ্জেলস টাইমসের চিকিৎসক প্রতিবেদক এমিলি বাউমগার্টনার এমন মন্তব্য। এমনকি হাত ধোয়ার উপর আপনার একটি পূর্ণ স্টোরি লেখার প্রয়োজন হতে পারে।

আপনার পাঠকের প্রশ্নের উত্তর দেয়ার জন্য আপনার প্রচেষ্টাকে গুরুত্ব দিন। লোকেরা কী ধরণের তথ্য সন্ধান করছে তা আরও ভালোভাবে বুঝতে গুগল ট্রেন্ডস ব্যবহার করুন এবং তারপরে মানসম্মত কন্টেন্ট তৈরি করুন, যাতে তারা উত্তর পেতে পারেন।

আপনার সীমা নির্ধারণ করুন
সম্পাদকরা সম্ভবত স্টোরির জন্য আপনার সঙ্গে ঘন ঘন যোগাযোগ করবেন। কখনো কখনো না বলা গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি আপনার কাজের স্বার্থেই করা উচিত। ২৪ ঘণ্টার জন্য কম্পিউটার থেকে দূরে সরে গেলে আপনি মানসিকভাবে বিশ্রাম নিয়ে ফিরে আসতে পাবেন। এটি নতুন স্টোরি লেখার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে।

“আপনি কোন গল্পগুলো বলতে চান তা মূল্যায়নের জন্য সময় নিন। এটি আপনাকে গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসানো থেকে রক্ষা করবে। পরিবর্তে আপনি কয়েকটি গল্প ভালো করে বলার চেষ্টা করতে পারেন’ বলেন জোলস।

দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া দরকারি সরঞ্জাম হতে পারে। বিশেষত যদি আপনাকে ভ্রমণ বা বড় সমাবেশ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে। তবে এটি কখনো কখনো বেশি ক্ষতির কারণ হতে পারে।

জোলসের পরামর্শ হলো- ‘টুইটারে আপনার সময় কমান, এটি একটি উদ্বেগের কারণ।’

হাওয়া পড়ে গেলেও স্টোরি চালিয়ে যান
ঘটনাচক্রে যখন বিষয়টি নিয়ে আগ্রহের পারদ নেমে যাবে, তখন আপনার কাজ শেষ হয়ে যাচ্ছে না। ডা. ইয়াসমিন বলেন- ‘একটি মহামারী হওয়ার পরে অনেক কিছু ঘটেছে, যা কাভার করতে হবে।’

ডা. ইয়াসমিনের পরামর্শ হলো- রাজনীতিবিদ ও স্বাস্থ্য আধিকারিকরা এই সংকট কীভাবে পরিচালনা করেছেন, কী শিখেছেন তা চিহ্নিত করুন। বেঁচে থাকা ব্যক্তিরা এখনো সংক্রমণের জটিলতার সঙ্গে বেঁচে আছেন কিনা তা নির্ধারণ করুন এবং ‘স্বাভাবিক অবস্থায়’ ফিরে আসার অর্থ কী তা আবিষ্কার করুন। তথ্যসূত্র: ইন্টারন্যাশনাল জার্নালিস্টস নেটওয়ার্ক

 

টাইমস/এনজে/জিএস

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ধান কাটা, ঝড়-বৃষ্টির কারণে ভোটার উপস্থিতি কম ছিল, তবে সন্তোষজনক : ওবায়দুল কাদের May 08, 2024
img
২৩ ফুট লম্বা শাড়ির আঁচলে রূপকথার পরী আলিয়া! May 08, 2024
img
সাকিব-সৌম্য-মুস্তাফিজকে নিয়ে বাংলাদেশের দল ঘোষণা May 08, 2024
img
প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে ৩০-৪০ শতাংশ ভোট পড়েছে: সিইসি May 08, 2024
img
জনগণের কষ্ট লাঘবে সরকার সবসময় সচেষ্ট: প্রধানমন্ত্রী May 08, 2024
img
এক লাফে ৭ টাকা বেড়ে ডলারের দাম উঠল ১১৭ টাকায় May 08, 2024
img
শুধু ইসলাম নয়, সব ধর্মাবলম্বীদের কল্যাণে কাজ করছে সরকার’ May 08, 2024
img
বাংলাদেশে করোনা টিকা চলবে, জানালেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী May 08, 2024
img
হজ কার্যক্রম উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী May 08, 2024
img
পঞ্চগড়ে বিএসএফের গুলিতে ২ বাংলাদেশি যুবক নিহত May 08, 2024