কৃমি, জ্বর, কোষ্ঠকাঠিন্য ও ম্যালেরিয়া দূর করবে চিরতার পানি

আমাদের মধ্যে অনেকেই তেতো কিছু খেতে বা পান পছন্দ করেন না। সুতরাং চিরতা বা চিরায়তা ভেষজটি আপনি উপভোগ করবেন, সেটা জোর দিয়ে বলা যায় না।

তবে, এই যাদুকরী ভেষজটির অসংখ্য স্বাস্থ্য সুবিধার কারণে আপনি যেকোনো উপায়ে এটি গ্রহণ করতে চাইবেন সে সম্ভাবনা রয়েছে। যদি আপনি এই ফ্লু’র মৌসুমে কিংবা অন্য যেকোনো মৌসুমে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে চান, তবে অবশ্যই ভেষজটিকে আপনার প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাসে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

দীর্ঘদিন ধরে ভেষজ চিকিৎসায় চিরতা ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বিশ্বাস করা হয় যে- এতে এমন একটি রাসায়নিক রয়েছে, যা প্রদাহ হ্রাস করতে পারে এবং ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধেও লড়াই করতে কার্যকর। যদি আপনি জ্বর, কোষ্ঠকাঠিন্য, পেটের সমস্যা, অন্ত্রের কৃমি বা ক্ষুধা মন্দার মতো সমস্যায় জর্জরিত থাকেন, তবে আপনার খাদ্যাভ্যাসে এই ভেষজটি যোগ করতে পারেন।

যদিও চিরতা নিয়ে এখনো আরও বৈজ্ঞানিক গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে, তবে সাধারণত চিরতাকে পানীয় হিসেবে গ্রহণ করা নিরাপদ বলেই মনে করা হয়। একইসঙ্গে মনে রাখতে হবে যেকোনো কিছুর অতিরিক্ত ব্যবহার স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হতে পারে। আপনার পানীয়তে কতটা চিরতা মেশাচ্ছেন সে বিষয়ে যত্নবান হতে হবে; অন্যথায় পানীয়টি অবিশ্বাস্যভাবে তেতো হতে পারে।

পরিচিতি
চিরতার বৈজ্ঞানিক নাম ‘স্বের্তিয়া চিরতা’ (Swertia Chirata)। এছাড়াও এটি ‘বিটার স্টিক’, ‘পূর্ব ভারতীয় বালমনি, ‘কৈরতা’, ‘কিরতা’, ‘চিরায়তা’ প্রভৃতি নামেও পরিচিত। এই বিশেষ গাছটি ভারত ও ভুটানের পার্বত্য অঞ্চলে জন্মায়। সাধারণত তিন থেকে চার ফুট উচ্চতা পর্যন্ত বেড়ে উঠতে পারে। স্বাদে এটি বেশ তিক্ত এবং সামান্য তীব্র।

পুষ্টিগুণ
চিরতা বিভিন্ন স্বাস্থ্যকর উপাদানের একটি অনন্য সমন্বয়, যা একে শক্তিশালী ভেষজ হিসেবে গড়ে তুলেছে। এতে জ্যানথোনস, চিরাটানিন, চিরাটল, প্যালমিটিক অ্যাসিডের মতো বেশ কয়েক প্রকার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ক্ষারকোষ ও গ্লাইকোসাইড রয়েছে।

স্বাস্থ্য সুবিধা সমূহ
নিয়মিত পান করা হলে এই ওষুধটি শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ নিষ্কাশনের মধ্য দিয়ে লিভারের সুরক্ষা নিশ্চিত করে। এটি লিভারে নতুন কোষ তৈরির ক্ষেত্রেও সহায়তা করতে পারে। এছাড়াও চিরতাকে পরজীবীবিরোধী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এটি দেহ থেকে গোলকৃমি ও টেপকৃমি দূর করতে খুবই কার্যকর।

চিরতা ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী। আপনি যখন প্রতিদিন এক গ্লাস চিরতার পানি পান করবেন, এটি আপনি শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেবে। ফলে, চুলকানি, জ্বলুনি, সংবেদন প্রভৃতি ত্বকের সমস্যার সমাধান হবে। ভেষজটি আমাদের শরীরে রক্ত উৎপাদন বৃদ্ধি করে, যার ফলে রক্ত স্বল্পতা দূর হয়। তথ্যসূত্র: দ্যা ইন্ডিয়ান টাইমস

 

টাইমস/এনজে/জিএস 

Share this news on: