করোনা: যেসব পরামর্শ দিলেন আফরান নিশো

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আতঙ্কিত পুরো বিশ্ব। এরই মধ্যে এই ভাইরাস হানা দিয়েছে বিশ্বের ১৮৮টি দেশে। ফলে করোনার আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র।

এই ভাইরাসে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি আতঙ্কিত তারকারাও। এর মধ্যে করোনা আতঙ্কে অনেকেই স্বেচ্ছায় কোয়ারেন্টাইনে গিয়েছেন। আবার অনেকেই কাজ কর্ম বাতিল করে নিজ এলাকায় অবস্থান করছেন।

এদিকে এবার করোনা থেকে বাঁচতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিলেন দেশিয় জনপ্রিয় অভিনেতা আফরান নিশো। ফেসবুক লাইভে এসে করোনাভাইরাস ও এর পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন নিশো। করোনাভাইরাস থেকে বাঁচার নানা উপায়ও তুলে ধরেন তিনি।

রোববার প্রায় ২৬ মিনিটের লাইভে বিস্তারিত কথা বলেছেন। মানুষকে আহ্বান করেছেন করোনা মোকাবেলা করতে।

তিনি বলেন, আমি আফরান নিশো। একজন অভিনেতা। এ মুহূর্তে বিশ্বের যে অবস্থা, আমি কোনো কাজ করছি না বাসায় বসে আছি। একজন অভিনেতা হিসেবে আমার ওপর কিছু দায়িত্ব বর্তায়। আমি কিছু কথা বলার জন্য আপনাদের সামনে এসেছি। এই কথাগুলো বলা খুব প্রয়োজন। আমি করোনা ভাইরাস নিয়ে কথা বলবো।

আফরান নিশো বলেন, করোনা একটা ভাইরাস। এটা মহামারীর আকার নিতে পারে। করোনা ব্যাকটেরিয়ার থেকেও ছোট ফর্ম। ব্যাকটেরিয়াকে এন্টিবায়োটিক দিয়ে দমন করা যায় কিন্তু করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে সেটা সম্ভব না। সুতরাং বলা যেতে পারে এটিতে আক্রান্ত হলে কোনো নিস্তার নাই।

আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যদি বেশি থাকে তাহলে আপনি কুলিয়ে উঠতে পারবেন। না হলে পারবেন না। যে রোগের কোনো চিকিৎসা নেই। সেই রোগ হওয়া পর্যন্ত কি আমরা অপেক্ষা করবো, নাকি যেনো না হয় সেই প্রতিকারের ব্যবস্থা করবো সেটা আমাদের চিন্তা করতে হবে। যেনো আমাদের ভাইরাস অ্যাটাক করতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

অভিনেতা বলেন, এটা ছোঁয়াচে। আমাদের অভ্যাস আছে যেখানে সেখানে থুতু ফেলা, হাঁচি দেওয়া, নাকে মুখে হাত দেওয়া, দাঁতে নখ কাটা। কেউ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে তার মাধ্যমে এটা খুব দ্রুত ছড়িয়ে যাবে। এটা নিয়ে এখনই ভাবতে হবে।

আমাকে পছন্দ করেন আর নাই করেন যারা নিজেদের মা, ছেলে, মেয়ে, পরিবারকে পছন্দ করেন, নিজেকে ভালোবাসেন। তাদের দ্বারা এটা দূর করা সম্ভব। আমি বলছি একমাত্র ভালোবাসার মাধ্যমেই করোনা জয় করা সম্ভব। আড্ডা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। কারো সঙ্গে কথা বলতে ইচ্ছে করলে ভিডিও কলে কথা বলেন।

পরিবারের কাউকে না কাউকে হয় তো বাড়ির বাইরে বের হওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। পরিবারের কে বাইরে যাবে ঠিক করুন। কেউ বাইরে গেলে তাকে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে।

বেশি করে স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে। হাতে গ্লোভস পরা যেতে পারে। বাইরে থেকে এসে প্রথমেই গোসল সেরে নিতে পারেন। তার আগে সাবান দিয়ে ভালো করে হাত ধুয়ে নিতে হবে। বাইরের কাপড়টা, জুতাটা আলাদা করে রাখতে হবে। কারো সঙ্গে কথা বললে অবশ্যই দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।

আমরা খুব ফুড হ্যাভিট পরিবর্তন করতে পারি। আমরা যেভাবে চলাফেরা করি আমাদের শরীর খুব বেশি স্ট্রং না। বেশি ভিটামিন সি খেতে হবে। ধূমপান করা ছেড়ে দেন। ঠাণ্ডা খাবার খাবেন না। এসব নিয়ম মেনেই এই ভাইরাসকে দাবিয়ে রাখতে হবে।

করোনাভাইরাস নিয়ে অনেকেই হাসি ঠাট্টা করছেন। নেগেটিভ কথা বলছেন। নেগেটিভিটি ছড়াবেন না। এটা কেন হচ্ছে না? ওটা কেনো হচ্ছে না? এসব না ভেবে আমাদের যতোটুক আছে তা নিয়েই ফাইট করতে হবে।

নিশো বলেন, আমি আফরান নিশো। এর বাইরেই আমার কতোগুলো পরিচয় আছে। আমি এখন অভিনেতা, আমি একজন বাবা, আমি একজন নাগরিক, আমি একজন মুসলিম।

এরকম একটা ক্রাইসিস মোমেন্টে আমাদের সবকিছু নিয়ে ভাবার সময় এসেছে। আমি অভিনেতা, আমার সোশ্যাল রেসপন্সিবলিটি আছে, আমি বাবা, সন্তানের প্রতি আমার দায়িত্ব আছে, আমি নাগরিক রাষ্ট্রের প্রতি আমার দায়িত্ব আছে।

আমি মুসলিম। ইসলাম প্র্যাক্টিস করা আমার উচিত। বাসায় বসে বোর ফিল করছেন, মুভি দেখছেন, গেইম খেলছেন সময় কাটছে না। এর চেয়ে চমৎকার সময় কী পাবেন ইসলাম প্র্যাকটিস করার! কোরআন পড়েন, সবার জন্য দোয়া করেন, আল্লাহকে ডাকেন।

অনেকেই ভাবতে পারেন এতে লাভ হবে না। আমি বলতে পারি এতে লাভ না হলেও ক্ষতি হবে না। বাবা হিসেবে আমার দায়িত্ব কী? আমার পাঁচ বছরের এক বাচ্চা। আমি কি চাইবো ও ইফেক্টেড হোক। আমি বাইরে যাই। আমাকেই বেশি সেইভ থাকতে হবে। আমার দ্বারা ওরা ইভেক্টেড হতে পারে। নাগরিক হিসেবে আমার কী কর্তব্য সেগুলোওতো ভাবা উচিত।

নিশো বলেন, যদি কেউ করোনা আক্রান্ত হয়ে যান তাহলে নিজেকে সবার থেকে আলাদা করে ফেলতে হবে। লুকাবেন না প্লিজ। আল্লাহ না করুক আমি যদি আক্রান্ত হই। তাহলে তো আমি বাসায় আর ফিরবো না। কারণ আমি আমার বাসার মানুষদের ভালোবাসি।

আমি নিজেকে প্রোটেক্ট করবো। আমার থেকে যেনো আর কারো না হয়। ব্যাপারটাকে যদি আমরা যুদ্ধ হিসেবে নিই। আমরা কি এটা জয় করতে পারব না! আমরা পারবো। আমাদের জাগ্রত হতে হবে। আমি জানি আমরা হারবো না। আল্লাহর রহমতে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।

 

টাইমস/জেকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ঐকমত্য কমিশন ব্যর্থ হলে সবাই ব্যর্থ হবে, ব্যর্থ হওয়ার সুযোগ নেই : আলী রীয়াজ Jul 15, 2025
img
বরগুনায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ৪ হাজার ছাড়াল, হাসপাতালে ভর্তি ১৭৫ জন Jul 15, 2025
img
'ইসলামি প্রজাতন্ত্র যুদ্ধবিরতিতে বিশ্বাস করে না, যেকোনো অভিযানের জন্য রয়েছে সম্পূর্ণ প্রস্তুত' Jul 15, 2025
img
ঢাকাসহ ১৫ জেলায় সন্ধ্যার মধ্যে ৬০ কি.মি. বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস Jul 15, 2025
img
ফিটনেস ধরে রাখতে সপ্তাহে পাঁচ দিন খিচুড়ি খান কারিনা কাপুর Jul 15, 2025
img
সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান কাজ : ড. কামাল Jul 15, 2025
সৌদিতে নিখোঁজ বাংলাদেশি কর্মকর্তা, রহস্য ঘনীভূত Jul 15, 2025
img
আগস্ট মাস থেকে ১৫ টাকা কেজি দরে চাল পাবে ৫৫ লাখ পরিবার Jul 15, 2025
img
বুলবুল আহমেদকে হারানোর ১৫ বছর Jul 15, 2025
img
জুলাই কেন্দ্র করে ঢাবিতে দুটি নতুন দিবসের সূচনা Jul 15, 2025
img
বাংলাদেশ টেস্ট দলের অধিনায়কত্ব নিতে আগ্রহী তাইজুল! Jul 15, 2025
img
বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করতে চায় সৌদি আরব Jul 15, 2025
img
প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলির ক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনা Jul 15, 2025
img
মার্কিন সুপ্রিম কোর্টের রায়ে শিক্ষা বিভাগ বন্ধের অনুমতি পেলেন ট্রাম্প Jul 15, 2025
img
জনসংখ্যার বড় অংশ তরুণ, এটা জাতির জন্য সুবর্ণ সময়: সিরাজ উদ্দিন Jul 15, 2025
img
জাতীয় সনদ তৈরিতে দ্রুত সিদ্ধান্ত জরুরি: আলী রীয়াজ Jul 15, 2025
img
ইউক্রেনের নতুন প্রধানমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করলেন জেলেনস্কি Jul 15, 2025
img
মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় উদ্ধার হলেন স্টার জলসার অভিনেত্রী Jul 15, 2025
img
ইন্দোনেশিয়ায় যাত্রীবাহী নৌকাডুবে নিখোঁজ ১১ জন Jul 15, 2025
img
চলতি বছরের শেষে তিস্তা মহাপরিকল্পনা চূড়ান্ত হবে : পরিবেশ উপদেষ্টা Jul 15, 2025