'লকডাউনে' যাচ্ছে সূর্য, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের শঙ্কা

মহামারি করোনা ভাইরাসের মধ্যেই আরও এক দুঃসংবাদ দিলেন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার বিজ্ঞানীরা। সূর্যের কার্যকারিতা হ্রাস পাওয়ায় পৃথিবী ধ্বংস বা কেয়ামতের দিন ঘনিয়ে আসার আশঙ্কা করছেন তারা।

সূর্যের উপরিভাগের কার্যকারিতা হ্রাস হওয়ার অবস্থাকে জোতির্বিজ্ঞানীরা সূর্যের ‘লকডাউন’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। সূর্যের এমন অবস্থার ফলে পৃথিবীতে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন তারা। তারা বলছেন, সূর্য লকডাউনে চলে যাওয়ায় পৃথিবীতে ঠাণ্ডা আবহাওয়া, ভূমিকম্প ও দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে।

এতে বরফযুগের সৃষ্টিরও আশঙ্কা করছেন তারা। বর্তমানে ‘সোলার মিনিমাম’ পর্যায়ে সূর্য অবস্থান করায় পৃথিবীতে তার কার্যকারিতা নাটকীয়ভাবে হ্রাস পেয়েছে। খবর দ্য ডেইলি মেইল

নাসার গডডার স্পেস ফ্লাইট সেন্টারের ডিন পেসনেল বলেছেন, ১১ বছর পরপর সূর্যের কালো দাগ ফিকে হয়ে যায়। এই ফিকে হয়ে যাওয়াকে ‘সোলার মিনিমাম’ বলা হয়। এটি সূর্যের কালো দাগ আবর্তের একটি অংশ। তিনি বলেন, সূর্য এখন সোলার মিনিমাম পর্যায়ের দিকে যাচ্ছে। ২০১৪ সালে তুলনামূলকভাবে সবচেয়ে বেশি কালো দাগ গণনা করা হয়। বর্তমানে এর সংখ্যা অনেক কম।

বিশেষজ্ঞদের বিশ্বাস, আমাদের সূর্য সবচেয়ে খারাপ অবস্থার মধ্যে পড়তে যাচ্ছে। আগে কখনও সূর্যের এমন অবস্থা দেখা যায়নি। সূর্যপৃষ্ঠের কালো দাগ (সৌরকলঙ্ক) কখনও মিলিয়ে যেতে দেখা যায়নি।

বিশ্বখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী ড. টনি ফিলিপ বলেন, ‘সোলার মিনিমাম’ নিম্নগামী। সূর্যের কালো দাগ গণনায় দেখা গেছে, গত শতাব্দীতে সূর্যের চম্বুকক্ষেত্র দুর্বল হয়ে পড়ে। এ কারণে সৌরজগতে অতিরিক্ত মহাজাগতিক রশ্মি প্রবেশ করছে।

এ রশ্মি নভোচারী ও মেরুদেশীয় অঞ্চলে বিমান ভ্রমণকারীদের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। অতিরিক্ত রশ্মি পৃথিবীর উপরিভাগে ইলেকট্রো-ক্যামেস্ট্রিতে প্রভাব ফেলে এবং বজ্রপাত সৃষ্টিতে সহায়তা করে।

নাসার বিজ্ঞানীদের ভয়, ‘সোলার মিনিমাম’ আবার ডাল্টন মিনিমামের পুনরাবৃত্তিও হতে পারে। ১৭৯০ ও ১৮৩০ সালের মধ্যে ডাল্টন মিনিমাম ঘটেছিল। এ সময় পৃথিবীতে মারাত্মক ঠাণ্ডা, শস্য উৎপাদনে বিপর্যয়, দুর্ভিক্ষ ও শক্তিশালী অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনা ঘটেছিল। ২০ বছরে তাপমাত্রা দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস কমেছিল। এতে সারা বিশ্বে খাদ্য উৎপাদন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

১৮১৫ সালের ১০ এপ্রিল ইন্দোনেশিয়ার মাউন্ট টামবোরায় দ্বিতীয় বৃহৎ অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনা ঘটে। এতে ৭১ হাজার মানুষ মারা যায়। ডাল্টন মিনিমামের কারণে ১৮১৬ সালে তথাকথিত গ্রীষ্মবিহীন বছর (ইয়ার উইদাউট এ সামার) এসেছিল। একে এইটিন হান্ডেড অ্যান্ড ফ্রোজেন টু ডেথ বলেও ডাকা হয়। এ বছর সূর্য প্রায় কালো দাগ শূন্য। এ সময়ে শূন্যের (ব্ল্যাঙ্ক) পরিমাণ ৭৬ শতাংশ কম। এ সময়ে গত বছর ছিল ৭৭ শতাংশ।

 

টাইমস/জিএস

Share this news on:

সর্বশেষ

img
দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচন : আজ মাঠে নামবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী May 19, 2024
img
বেরিয়ে এলো জুজুৎসুর নিউটনের ‘ভয়ংকর’ যৌন নিপীড়নের তথ্য May 19, 2024
img
চেন্নাইকে বিদায় করে টানা ছয় ম্যাচ জিতে প্লে-অফে বেঙ্গালুরু May 19, 2024
img
রাসায়নিক খাতের উন্নয়নে দেশেই কারখানা তৈরি করতে চান ব্যবসায়ীরা May 19, 2024
img
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক দেখে বিএনপির মাথা খারাপ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী May 18, 2024
img
কেন্দ্র দখলতো দূরের কথা, একটি জাল ভোট পড়লেও কেন্দ্র বন্ধ : ইসি হাবিব May 18, 2024
img
আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম May 18, 2024
img
ইন্টারনেট ব্যবহারে এশিয়ায় বেশি পিছিয়ে বাংলাদেশের নারীরা May 18, 2024
img
বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে বাধা নেই : খুরশিদ আলম May 18, 2024
img
বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকরা কেন ঢুকবেন, প্রশ্ন ওবায়দুল কাদেরের May 18, 2024