কোভিড-১৯ : নিষেধাজ্ঞা শিথিল হলেও সচেতনতা জোরদার করতে হবে

বিশ্বজুড়ে কোভিড-১৯ ঠেকাতে মানুষের চলাচলের উপরে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা শিথিল হতে শুরু করেছে। আমাদের দেশেও এই নিষেধাজ্ঞা এখন অনেক শিথিল। এমন পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন যে তথাকথিত “সুপার স্প্রেডার” ইভেন্টগুলি রোধ করার জন্য বাড়তি সতর্কতা প্রয়োজন।

‘সুপার স্প্রেডার ইভেন্ট’ বলতে এমন ঘটনাকে বোঝায় যখন সার্স কোভ-২ বা করোনাভাইরাস বহনকারী কেউ কোনো ইভেন্ট বা জমায়েতে একাধিক ব্যক্তির কাছে ভাইরাসটির সংক্রমণ ঘটায়।

উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনের স্ক্যাগিট কাউন্টিতে গেল মার্চ মাসে এক অনুশীলনে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৫২ জনের কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়েছিল। এদের মধ্যে ৩জন এই রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন এবং দু’জন মারা যান।

আবার শিকাগোর ইলিনয়ের ১৬ টি নিশ্চিত ও সম্ভাব্য কোভিড-১৯ শনাক্তের ঘটনার সঙ্গে একটি শেষকৃত্য এবং একটি জন্মদিনের উৎসব জড়িত ছিল, একই ব্যক্তিরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

অর্থাৎ এ সময়ে অনুষ্ঠিত কোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে যদি কোনো কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী উপস্থিত হন, তাহলে তা থেকে বহু লোকের আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা থাকে।

এ বিষয়ে ওহিও’র ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের পালমোনোলোজি ও ক্রিটিক্যাল কেয়ার স্পেশালিষ্ট ড. জোসেফ খাব্বাজা বলেন, “যদি এই ধরণের সমাবেশগুলিতে কোনো মৃদু উপসর্গ ধারী বা এমনকি উপসর্গ দেখা যায়নি এমন কোনো সুপার স্প্রেডার থাকে তবে এই ভাইরাসটি অন্য লোকদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়বে।”

অনেকের মধ্যেই উপসর্গের বিকাশ ঘটে না, ফলে তাদের অজান্তেই খুব সহজে ভাইরাসটি তাদের বাবা-মা, দাদা-দাদী বা যাদের ঝুঁকি বেশি তাদের মধ্যে ছড়িয়ে যেতে সক্ষম হয়, বলেও মনে করেন তিনি।

আবার যেসব সমাগম বদ্ধ জায়গায় অনুষ্ঠিত হয় সেগুলিতে ভাইরাসটি ছড়িয়ে যাবার সম্ভাবনা বেশি। কারণ বদ্ধ জায়গায় মানুষ বেশি কাছাকাছি অবস্থান করে, কিন্তু খোলা জায়গায় পরস্পরের মধ্যে দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব। তবে বর্তমান পরিস্থিতি এসব এড়িয়ে যাওয়া উচিৎ বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

এই অবস্থায় ভাইরাসের বিস্তারকে সীমাবদ্ধ রাখতে মানুষকে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার অনুশীলন চালিয়ে যেতে হবে। একই সাথে ঘন ঘন হাত ধোয়া এবং যতটা সম্ভব নাক-মুখ স্পর্শ এড়াতে হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এছাড়াও মাস্কের ব্যবহার ভাইরাসটির সংক্রমণ সীমাবদ্ধ করতে সক্ষম।

চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা শিথিল হচ্ছে, বাজার, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান প্রভৃতি চালু হচ্ছে তার মানে কিন্তু এই নয় যে ভাইরাসটি দুর্বল হয়ে পড়েছে কিংবা সংক্রমণের ঝুঁকি কমে গেছে। ব্যক্তিগত ও সামাজিক পর্যায়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এখন আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তথ্যসূত্র: হেলথলাইন.কম

 

টাইমস/এনজে/জিএস

Share this news on:

সর্বশেষ