কোভিড-১৯ ছড়াচ্ছে তরুণরা, দাবি মার্কিন অধ্যাপকের

ইউনিভার্সিটি অব ম্যাসাচুসেট ডার্টমুটের তুলনামূলক রোগপ্রতিরোধ বিশেষজ্ঞ ও অধ্যাপক ইয়ান ব্রমেজ দাবি করেছেন, করোনা ভাইরাসের এই ব্যাপক বিস্তারের পেছনে মূল ভূমিকায় রয়েছেন ২০ থেকে ৩০ বছরের তরুণেরা। এই বিষয়ে তার গবেষণামূলক প্রবন্ধটি মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন কর্তৃক প্রকাশিত হয়েছে।

তার মতে, কোভিড-১৯ মহামারী বিস্তারের প্রথম দিকে শুধু সংক্রমিত বয়স্ক জনগোষ্ঠীকে অধিকমাত্রায় শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। আমেরিকা, ইতালি কিংবা স্পেনে অধিকাংশ আক্রান্ত ব্যক্তিদের বয়স ছিল ৪০-৬০ এর মধ্যে। অন্যদিকে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আইসিইউ কিংবা কৃত্রিম শ্বাস সহায়তার প্রয়োজন হয়েছে বয়স্কদের। আবার রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে বয়স্কদেরই মৃত্যু হার বেশি। কিন্তু এর মানে এই নয় যে তরুণরা আক্রান্ত হননি।

তবে, দ. কোরিয়ায় ব্যাপকভাবে কোভিড-১৯ টেস্ট পরিচালনা করে দেখা যায় ৭৫ শতাংশ আক্রান্তের বয়স ৬০ বছরের কম, এর মধ্যে ৪৫ শতাংশের বয়স ৪০ বছরেরও কম। এর মানে হচ্ছে, অন্যান্য দেশেও ব্যাপক হারে কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা সম্ভব হলে প্রকৃত অবস্থা বোঝা সম্ভব হতে পারত।

ব্রমেজ বলেন, যুক্তরাষ্ট্র কিংবা অন্য অনেক দেশে টেস্টিং কিট স্বল্পতার কারণে শুধু গুরুতর অসুস্থ কিংবা তাদের কন্টাক্টে আসা লোকদের টেস্ট করা হচ্ছে। ফলে সংক্রমিত অনেকেই প্রকৃত হিসাবের বাইরে থেকে যাচ্ছেন। ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সী তরুণেরাও সমানভাবে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হচ্ছেন। তবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অপেক্ষাকৃত শক্তিশালী থাকার ফলে আক্রান্ত হলেও এই বয়সের লোকেরা মৃদু উপসর্গ অনুভব করছেন কিংবা অনেকক্ষেত্রে উপসর্গ একেবারেই দেখা যাচ্ছে না। ফলে নিজের অজান্তের কোভিড-১৯ ছড়িয়ে দিচ্ছেন অন্যদের মাঝে।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বজুড়ে বয়স্কদের আক্রান্ত হবার সংখ্যা কমে এলেও তরুণদের ক্ষেত্রে তেমনটি ঘটছে না। কোথাও কোথাও তরুণদের সংক্রমিত হবার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে, কোথাও সংক্রমণের সংখ্যার আগের অনুপাত বজায় রয়েছে।

সম্প্রতি জাপানে প্রকাশিত এক জরিপে দেখা গেছে, দ্বিতীয় ধাপে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লে তাতে আক্রান্ত ৫০ শতাংশের বয়স পঞ্চাশের কম। তাছাড়া স্প্রেডর বা যাদের দ্বারা ছড়াচ্ছে তাদের অধিকাংশের বয়স ২০ থেকে ৪০ এর মধ্যে এবং অধিকাংশেরই কোনো উপসর্গ বা সিম্পটম দেখা দেয়নি।

এছাড়াও বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, এই বয়সের লোকদের মধ্যে তুলনামূলকভাবে সতর্কতা অবলম্বনের হার কম এবং রিস্ক গ্রহণের প্রবণতা বেশি। এই বয়সের লোকেরা রোগটিতে আক্রান্ত হয়েও হোটেল, রেস্টুরেন্ট, বাজার প্রভৃতি জনসমাগমপূর্ণ জায়গায় বেশি গেছেন। ফলে এদের দ্বারা কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পরার মাত্রাও অনেক বেশি বা এই বয়সের লোকেরাই রোগটি ছড়িয়ে পড়ার পেছনে মূল ভূমিকায় রয়েছেন বলেও দাবি করেছেন ব্রমেজ। তথ্যসূত্র: সিএনএন

 

টাইমস/এনজে/জিএস

Share this news on: