কুয়েত মৈত্রী হসপিটাল থেকে লিখছি : করোনার সাথে বসবাস (প্রথম পর্ব)

গত ২১ জুন রাতে আব্বার (আকরাম হোসেন মুক্তা)জ্বর সর্দি কাশি দেখা দেয় সাথে গায়ে ব্যাথা। তারপর একে একে আমি আমার স্ত্রী জ্বর সর্দি কাশিত্ আক্রান্ত হলে আমরা বাসার সকল সদস্য গফরগাঁও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা টেস্ট করানো হয় যার রেজাল্ট ৩ দিন পর নেগেটিভ আসে। কিন্তু কারোও শরীরের লক্ষণ ভালো মনে হয়নি এবং সকল সদস্যদের মাঝে করোনার প্রায় সকল উপসর্গ বিদ্যমান বলে বিদ্যমান উপসর্গ নিয়েই আমরা ৮ দিন বাসায় অবস্থান করছিলাম পাশাপাশি ফুফাতো ভাই প্রফেসর ডা এ জেড এম জাহিদ হোসেন, বড় দুলাভাই প্রফেসর ড. নজরুল ইসলাম, মামা এম হাবিবুর রহমান, আরেক ফুফাতো ভাই লে কর্নেল (অব) এম এইচ সাদেক বিন সাঈদ এবং মিরপুর লাল কুঠির করোনা হসপিটালের চিকিৎসক জাবেদ হোসেন ভাইয়ের পরামর্শে চিকিৎসা চলছিল।

এর মাঝে ২৮ জুন রাতে হঠাৎ আমার স্ত্রীর শরীর অত্যন্ত খারাপ হয়ে যায় এবং প্রচণ্ড কাশির সাথে শ্বাস কষ্ট শুরু হয়। আল্লাহর রহমতে তাকে ঐ রাতে এবং পরের দিন সকালে নেব্যুলাইজ করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া গেলেও পরের দিন বড় ভাইজানের পরামর্শে উত্তরার কুয়েত মৈত্রী হসপিটালে দ্রুত ভর্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

২৯ তারিখ ঢাকা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছোট ভাই Abdullahil Mamun Niloy গাড়ি পাঠালে আমার স্ত্রীর ছোট ভাই ঐ গাড়ী তে এসে তাকে নিয়ে সন্ধ্যায় হসপিটাল রওনা হয়।

আমার স্ত্রী হসপিটালে রওনা হবার ঘণ্টা খানেক পরেই আমার বাবার শরীরটাও বেশ খারাপ হয়ে যায় উনিও অস্থির হয়ে ওঠে। ভাইজানের পরামর্শে রাতেই কুয়েত মৈত্রী থেকে পাঠানো এম্বুল্যান্সে আমি ঢাকা রওনা হই। রাত ১২ টায় আমার স্ত্রী ভর্তি হলে ভোর ৪ টায় আমি এবং আমার বাবা কুয়েত মৈত্রী হসপিটালে ভর্তি হই। পরের দিন বাসার গৃহ পরিচারিকা অসুস্থ হলে তাকেও আমাদের সাথে ভর্তি করা হয়।

এখানে আমাদের প্রথমে করোনা নেগেটিভ ইউনিটে (যেহেতু গফরগাঁও থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বাসার সবার করোনা রেজাল্ট নেগেটিভ আসে) এক সাথে একটি ৪ বেডের ওয়ার্ডে রেখে করোনার চিকিৎসা শুরু হয়। পরের দিন সবার করোনা, এক্সরে, এবং ব্লাড টেস্ট করানো হয়। ২ দিন পর সকলের রেজাল্ট পজিটিভ আসলে আমাদের করোনা পজিটিভ ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়।

আজ ১০ দিন পর আল্লাহর রহমতে আব্বা, আমার স্ত্রী বাসার গৃহ পরিচারিকা এবং আমি আগের থেকে অনেকটা সুস্থ আর প্রথম থেকেই আমার পেটের সামান্য পীড়া, হালকা জ্বর ব্যতীত তেমন কোনও সমস্যা দেখা দেয়নি। তাই সাহস নিয়ে সকলের সেবা করে যেতে পেরেছি।

আল্লাহ চাওয়াতে সুস্থ থাকলে এবং সব কিছু স্বাভাবিক থাকলে পরবর্তীতে এখানকার ভর্তি, পরিবেশ, ট্রিটম্যান্ট নিয়ে লিখে লেখাটি চালিয়ে নেওয়ার ইচ্ছা আছে।

সবার কাছে দোয়া কামনা করছি আল্লাহ যেনও আমাদের সকলকে সুস্থতা দান করেন।

লেখক কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে কুয়েত মৈত্রী হসপিটালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। 

লেখক: ডিরেক্টর, ডেলটা হেলথ কেয়ার, যাত্রাবাড়ী লি.

 

টাইমস/টিএইচ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
আরও ১ মাস বাড়লো ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ Sep 16, 2025
img
আগস্টে ৪৯ মামলায় জড়িত ৩১১ দুর্নীতিবাজ Sep 15, 2025
img
১৫ কেজির কোরাল মাছ বিক্রি ১৮ হাজারে Sep 15, 2025
img
শ্রীলঙ্কার সামনে হংকংয়ের ১৫০ রানের চ্যালেঞ্জ Sep 15, 2025
img
নিকুঞ্জে নাগরিক জাগরণ: হারানো শান্তি ফিরে পাওয়ার গল্প Sep 15, 2025
img
সুপার ফোরে খেলবে বাংলাদেশ, আত্মবিশ্বাসী কোচ Sep 15, 2025
img
ম্যাচের আগে বাংলাদেশের প্রশংসায় জনাথন ট্রট Sep 15, 2025
img
অসুস্থ অমিতাভকে ২০০ জন ৬০ ব্যাগ রক্ত দিয়েছিলেন Sep 15, 2025
img
অতিরিক্ত ৬ বছরের কারাভোগ শেষে ভারতে ফিরলেন রামাতা Sep 15, 2025
এশিয়া কাপে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই, সুপার ফোর নিশ্চিত কার? Sep 15, 2025
img
আলোচনা ভেস্তে দিতেই দোহায় হামলা : কাতারি আমির Sep 15, 2025
img
তিস্তা প্রকল্পে আগ্রহী চীন, পাঠাচ্ছে কারিগরি বিশেষজ্ঞ দল Sep 15, 2025
img
ভাঙ্গায় পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর, ক্ষতিগ্রস্ত ৮ গাড়ি ও ১৯ মোটরসাইকেল Sep 15, 2025
img

কাতারে হামলা

নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকে বসছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী Sep 15, 2025
img
দেশবাসী আন্দোলনের প্রস্তুতি গ্রহণ করুন : জামায়াত সেক্রেটারি Sep 15, 2025
img
লেভেল ফোর কোচিং শেষ করলেন মঞ্জু Sep 15, 2025
img
ওমানকে হারিয়ে প্রথম জয় আমিরাতের Sep 15, 2025
img
বিসিবি নির্বাচনে খেলোয়াড় প্রতিনিধি চায় কোয়াব! Sep 15, 2025
img
নয় ঘণ্টার ম্যারাথন জেরা শেষে ইডির দপ্তর থেকে বের হলেন মিমি Sep 15, 2025
img
আমরা ১৭ বছর ক্ষমতায় নাই, তবুও মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি: শামা ওবায়েদ Sep 15, 2025