আপনি তেমন, যেমন আপনার খাদ্যাভ্যাস– এরকম কথা হয়তো আপনি অনেকবার শুনেছেন। সুষম খাদ্যাভ্যাস আপনার সুস্বাস্থ্য রক্ষায় এবং প্রয়োজনীয় পুষ্টিগ্রহণে সাহায্য করে।
সঠিক পুষ্টি উপাদান আমাদের স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে সঠিক খাবারও যদি অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ করা হয় তবে তা যেকোনো বয়সের মানুষের জন্যই ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে।
সুস্বাস্থ্য ও আদর্শ ওজনের জন্য পুষ্টিবিদরা সুষম খাদ্যাভ্যাসের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কারণ দেহের সর্বাত্মক উন্নতি ও তত্ত্বাবধানের জন্য সঠিক পরিমাণে পুষ্টি উপাদান গ্রহণ করা প্রয়োজনীয়।
সুষম খাদ্যাভ্যাস সেই প্রয়োজনীয় খনিজ উপাদানগুলো গ্রহণে সহায়তা করে। কিন্তু অনেকেই সুষম খাদ্য গ্রহণ ও প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান গ্রহণের বিষয়ে মোটেও সচেতন নয়।
শর্করা
শর্করা জাতীয় খাবার শক্তির অন্যতম উৎস। ভাত, গম, ভুট্টা, বার্লি, শুকনো ফল, মধু, গুড় ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণে শর্করা জাতীয় খাদ্য উপাদান থাকে।
প্রোটিন বা আমিষ
আমিষ বা প্রোটিন আমাদের শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। পেশি, অন্তঃস্রবী গ্রন্থি, অঙ্গ, চামড়া, চুল, নখ, সিরাম ইত্যাদি গঠনে প্রোটিন অত্যাবশ্যকীয়।
শরীরের বৃদ্ধি ও ভারসাম্যের জন্য আমাদের শরীরে প্রোটিন তৈরি হওয়া আবশ্যক। গরুর দুধ, টফু, ডিম, সয়াবিন, খিচুড়ি, মুরগী, পনির ইত্যাদি প্রোটিনের ভাল উৎস।
প্রোটিনকে দেহ গঠনের একক বলা হয়।
স্নেহ জাতীয় খাবার
স্নেহ জাতীয় খাবার দেহে তাপ সরবরাহ করে এবং স্নেহে দ্রবণীয় ভিটামিন এ, ডি ও কে এর বাহক হিসেবে কাজ করে। স্নেহ জাতীয় খাবারের উৎসগুলো হলো- চিনাবাদাম, তিল, নারকেল, কাজু, বাদাম, মাছ ও দুগ্ধজাতপণ্য প্রভৃতি।
গৌণ পুষ্টি উপাদান
ভিটামিন এ, ডি, কে, বি গ্রুপ ও ভিটামিন সি দেহের বৃদ্ধি ও ভারসাম্য রক্ষায় সামান্য পরিমাণে প্রয়োজন।
ভিটামিনের উৎস- তাজা ফল, দুগ্ধজাত খাদ্য, ডিম, জলপাই, গম, শস্যদানা ও বাদাম।
খনিজ
খনিজ কোষ গঠনে সাহায্য করে এবং সুষম খাদ্য তালিকায় সামান্য পরিমাণে প্রয়োজন। বিভিন্ন খনিজের মধ্যে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, আয়োডিন, সোডিয়াম, আয়রন, কপার ও ম্যাগনেসিয়াম বেশি দরকারি।
খনিজের উৎস- সবুজ শাক সবজি, খাদ্যশস্য, ডাল, বাদাম ইত্যাদি।
অপুষ্টি
অপুষ্টি বলতে সাধারণত পুষ্টির মাত্রাধিক্যতা বা অভাবকে বুঝায়। এটার কারণ মূলত পুষ্টির স্বল্পতা, প্রাচুর্যতা বা ভারসাম্যহীনতা। যার ফলশ্রুতিতে শারীরিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয় এমনকি মানসিক সমস্যাও দেখা দেয়। উদাহরণসরূপ দেখা যায়, আয়রনের অভাবে রক্তস্বল্পতা এবং আয়োডিনের অভাবে রাতকানা রোগ হয়।
প্রত্যেকের আদর্শ খাদ্য তালিকা মেনে চলা উচিত যার মধ্যে সব উপাদান সঠিক পরিমাণে থাকবে। অতিরিক্ত চিনি, লবণ ও মশলা, অতিরিক্ত শর্করা, দ্রবণীয় চর্বি পরিহার করা উচিত এবং বিশেষত মৌসুমি খাবার ও মিষ্টান্নের ক্ষেত্রেও একই খাদ্যাভ্যাস মেনে চলা উচিত।
পরিশেষে, ওজন কমানোর জন্য খাদ্যাভ্যাসের অযাচিত পরিবর্তন শরীরে বিভিন্ন উপাদানের ঘাটতি সৃষ্টি করে। তাই সুস্বাস্থ্যের জন্য স্বাস্থ্যকর ও ভারসাম্যপূর্ণ খাদ্যাভ্যাস অতীব জরুরী। এছাড়াও আপনার প্রতিদিন কতটুকু ক্যালরি প্রয়োজন তা জানার জন্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে পারেন।
তথ্যসূত্র: এনডিটিভি।
টাইমস/আনিকা/এনজে