কোভিড-১৯ এর প্রভাবে কী ডেঙ্গুর সংক্রমণ বাড়তে পারে?

কোভিড-১৯ এর ফলে বিশ্বজুড়ে মানুষের চলাচল অভূতপূর্ব উপায়ে পরিবর্তিত হয়েছে। গবেষকরা ধারণা করছেন, এই পরিবর্তন অন্যান্য সংক্রমণকেও প্রভাবিত করতে পারে।

সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা গেছে, কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে থাইল্যান্ডে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। তবে সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়াতে রোগটি সংক্রমণের হার অপরিবর্তিত আছে।

গবেষকরা বলছেন, এডিস মশার মাধ্যমে মানব দেহে ছড়িয়ে পরা অন্যতম একটি প্রাণঘাতী রোগ ডেঙ্গু। এই রোগের ভাইরাসটির মোট ৪টি প্রজাতি রয়েছে। সাধারণত গরম-আর্দ্র গৃষ্মমন্ডলীয় এবং ক্রান্তীয় অঞ্চলে এই রোগটির প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যায়।

বিশ্বের ১০০টি দেশে ডেঙ্গু রোগের সংক্রমণ ঘটে থাকে এবং প্রতিবছর রোগটিতে ৪০ কোটি লোক আক্রান্ত হন। এই রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে প্রতি বছর গড়ে প্রায় ২২ হাজার মানুষের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।

গবেষণায় দেখা গেছে, লকডাউনের ফলে থাইল্যান্ডে ডেঙ্গু সংক্রমণের হার প্রতি ১০ হাজার জনে ০.৪৩১ জন হিসেবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা গত বছরের থেকে ২ হাজার ৮ জন বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে মালয়েশিয়া কিংবা সিঙ্গাপুরে এক্ষেত্রে খুব একটা পার্থক্য দেখা যায়নি।

গবেষকরা জানিয়েছেন, কর্মক্ষেত্রে সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকলেও প্রধানত বাড়িতে অবস্থানকালে রোগটিতে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি বেশি। কোভিড-১৯ এর ফলে যেহেতু লোকজন বাড়িতে বেশি সময় কাটাচ্ছেন তাই ডেঙ্গুর সংক্রমণ কিছুটা বেড়ে যেতে পারে।

ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরের উদ্যোগে গবেষক জু তাও লিম সহকর্মীদের নিয়ে এই গবেষণাটি পরিচালনা করেছেন। গবেষণায় ২০১০ থেকে ২০২০ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার ডেঙ্গু সংক্রমণের তথ্য এবং ২০১২ থেকে ২০২০ সালের মধ্যবর্তী সময় পর্যন্ত সিঙ্গাপুরের ডেঙ্গু সংক্রমণের তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০০০ সালের পর থেকে বাংলাদেশেও প্রতিবছর ডেঙ্গু রোগের সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। গতবছরও ডেঙ্গু সংক্রমণের হার অন্যান্য বছরকে ছাড়িয়ে যায়। প্রায় লক্ষাধিক সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছিল ২০১৯ সালে।

ধারণা করা হচ্ছে, কোভিড-১৯ মহামারী চলাকালীন সময়ে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব ঘটলে সাধারণ মানুষের জন্য তা উভয় সংকট হয়ে দেখা দেবে। তাই ডেঙ্গুর বিস্তার রোধে দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ এবং জনসাধারণকে এখনই উদ্যোগ নিতে হবে। তথ্যসূত্র: মেডিক্যাল নিউজ টুডে

 

টাইমস/এনজে/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বাগেরহাটে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১ Nov 09, 2025
img
বিপিএলে নিলাম চায় গভর্নিং কাউন্সিল Nov 09, 2025
img
আইন মন্ত্রণালয়ের সংস্কার কার্যক্রম Nov 09, 2025
img
‘ফজু পাগলা’ উপাধি পেয়ে আনন্দিত ফজলুর রহমান Nov 09, 2025
img
জনগণ গণভোট-সনদ বোঝে না : মির্জা ফখরুল Nov 09, 2025
img
আইএমএফ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বিএনপি প্রতিনিধিদলের বৈঠক Nov 09, 2025
img
চানখারপুলের হত্যা মামলার ১৪তম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ Nov 09, 2025
img
বয়স্ক খেলোয়াড় হিসেবে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার রেকর্ড গড়েছেন জোকোভিচ Nov 09, 2025
img
স্বরাষ্ট্র ও প্রাথমিক শিক্ষা উপদেষ্টার পদত্যাগ চান শিক্ষকরা Nov 09, 2025
img
ঘরের ছেলে শান্তকে দলে ভেড়াল রাজশাহী Nov 09, 2025
img
দেশজুড়ে আগামী তিন দিন কমতে পারে তাপমাত্রা Nov 09, 2025
img
ঝড় তুলেছে বিজয়ের নতুন গান ‘থালাপতি কাচেরি’ Nov 09, 2025
img
ঢাকা-১০ আসনের ভোটার হতে যাচ্ছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ Nov 09, 2025
img
এবার অ্যানিমেশন সিনেমায় শ্রদ্ধা কাপুর Nov 09, 2025
img
আর্জেন্টিনা দলে থেকে নাম সরিয়ে নিলেন এনজো ফার্নান্দেজ Nov 09, 2025
img
ম্যারাডোনা স্টেডিয়ামকে ‘আবর্জনার ভাগাড়’ বললেন নাপোলি মালিক Nov 09, 2025
img
যুক্তরাষ্ট্রে চলমান শাটডাউনের কারণে বিমানবন্দরগুলোয় বাড়ছে ভোগান্তি Nov 09, 2025
img
জাতীয় দলের ক্যাম্পে যোগ দিচ্ছেন কিউবা মিচেল Nov 09, 2025
img
হাবিবুরসহ ৮ আসামির বিরুদ্ধে ১৪তম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে Nov 09, 2025
img

বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তা

ভয়াবহ হতে পারে ডেঙ্গু পরিস্থিতি Nov 09, 2025