হলুদ খেলে কি লাভ হয়?

হলুদ আমাদের দৈনন্দিন রান্নার কাজে ব্যবহৃত একটি অতি প্রয়োজনীয় মশলা। প্রায় সব ধরণের তরকারি রান্নার ক্ষেত্রে হলুদ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এতে কারক্যুমিন নামক এক ধরণের প্রদাহনাশক উপাদান রয়েছে। বলা হয়ে থাকে স্বাস্থ্যের জন্য হলুদ অত্যন্ত উপকারী।

আসুন জেনে নিই হলুদ খাওয়ার মধ্যদিয়ে কি কি স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়া সম্ভব:

ওজন হ্রাস করতে সহায়তা করে

‘ইউরোপিয়ান স্টাডি ফর মেডিকেল এন্ড ফার্মালোজিকেল রিভিউ’ জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে, হলুদ ওজন কমাতে কিংবা মেদ ঝরাতে সহায়তা করে। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত পুষ্টিবিদ পেত্রিকা ব্যানান বলেন, ‘শুধুমাত্র বেশি পরিমাণে হলুদ খেলেই ওজন কমে যাবে বিষয়টি এমন নয়। তবে এটি স্থূলতার সাথে জড়িত প্রদাহ প্রশমিত করে এবং আপনার চর্বি ঝরানোর প্রক্রিয়া গতিশীল করে।’

আর্থ্রাইটিসের উপসর্গ হ্রাসে সহায়ক

‘জার্নাল অব মেডিকেল ফুড’ কর্তৃক প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়েছে হলুদে বিদ্যমান পলিফেনল নামক উপাদানটি অস্থিসন্ধির ব্যথা ও ফোলাভাব উপশম করতে সহায়তা করে। আর্থ্রাইটিস ফাউন্ডেশনের পরামর্শ অনুযায়ী, এক্ষেত্রে হলুদের নির্যাশ সমৃদ্ধ ৫০০ এমজি ক্যাপসুল দিনে দু’বার খাওয়া যেতে পারে।

মেজাজ ভাল রাখতে সাহায্য করে

রক্তে প্রদাহের উপস্থিতির ফলে ডিপ্রেশন দেখা দিতে পারে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, হলুদ ডিপ্রেশন জনিত উপসর্গ হ্রাস করে। পেত্রিকা ব্যানানের মতে “যারা অ্যান্টিডিপ্রেশন ওষুধ গ্রহণ করছেন, হলুদ তাদেরকে দ্রুত ফলাফল পেতে সহায়তা করবে।

ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সহায়তা করে

ধারণা করা হয় হলুদে বিদ্যমান কারক্যুমিন রক্তে শর্করার ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণে রাখার মধ্যদিয়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। তবে পেত্রিক মনে করেন, এ বিষয়ে আরও গবেষণা ও ক্লিনিকাল ট্রায়ালের প্রয়োজন আছে।

অ্যালঝেইমার প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে

হলুদ অ্যালঝেইমার ডিজিজ প্রতিরোধে সহায়তা করে। এর স্বপক্ষে গবেষকরা বলছেন, ইউরোপ কিংবা আমেরিকার তুলনায় ভারতীয় উপমহাদেশে রোগটিতে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা কম। এর পেছনে অন্য আরও কারণের পাশাপাশি হলুদেরও অবদান রয়েছে। এছাড়াও হলুদে বিদ্যমান বিভিন্ন উপাদান মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বজায় রাখতে সহায়তা করে। যা অ্যালঝেইমার সহ অন্যান্য রোগ প্রতিরোধে সহায়ক।

কোলেস্টেরল কমায়

হলুদ আমাদের দেহের জন্য ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ব্যানান বলেন, ‘হলুদ আমাদের রক্তে টাইগ্লিসারিন নামক এক ধরণের নেতিবাচক কোলেস্টেরলের মাত্রা কম করে। এর ফলে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি হ্রাস পায়।’

হৃদরোগের ঝুঁকি কম করে

হৃদরোগের অন্যতম একটি কারণ রক্তে বিদ্যমান প্রদাহ। কারক্যুমিন প্রদাহ হ্রাসের মধ্যদিয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কম করে। এ বছর ‘বায়োটেকনোলজি অ্যাডভান্স’ জার্নালে এ সংক্রান্ত গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে।

এছাড়াও গবেষকদের ধারণা, হলুদে বিদ্যমান নানা উপাদান ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করতে, মলত্যাগ সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনে এবং দেহের জন্য ক্ষতিকর ফ্রি র্যা ডিক্যালস দূর করতে সাহায্য করে। তবে গবেষকগণ মনে করেন হলুদ নিয়ে ভবিষ্যতে আরও গবেষণা প্রয়োজন যাতে করে এর উপকারিতা নিশ্চিত ভাবে প্রমাণ করা সম্ভব হয়।

তথ্যসূত্র: দ্যা হেলদি

 

টাইমস/এনজে/এসএন

Share this news on: