বাড়িতে করোনা আক্রান্ত রোগী থাকলে কী করবেন?

শীত আসার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়েছে কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় ঢেউ। আবারও বিশ্বব্যাপী করোনা আক্রান্তের হার বাড়তে শুরু করেছে। এমন পরিস্থিতিতে পরিবারের কেউ রোগটিতে আক্রান্ত হওয়া অসম্ভব কিছু নয়।

করোনা আক্রান্ত সবার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন নেই। অনেকেই বাড়িতে থেকে করোনার চিকিৎসা করাচ্ছেন। যেহেতু আমরা পরিবারের সাথে খুব ঘনিষ্ঠভাবে বসবাস করি তাই পরিবারের কোনও সদস্য আক্রান্ত হলে অন্য সদস্যদেরও রোগটি আক্রান্ত হবার ঝুঁকি বেড়ে যায়।

বাড়িতে করোনা আক্রান্ত কোনও রোগী থাকলে অন্যদের করণীয় কী-

কোভিড-১৯ পরীক্ষা করুন

পরিবারের কোনও একজন সদস্য কোভিড-১৯ পজিটিভ হলে যত দ্রুত সম্ভব বাকী সদস্যদেরকেও পরীক্ষা করাতে হবে। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসের সলিস হেলথ এর পরিচালক ড. স্কট ব্রাউনস্টেইন বলেন, ‘প্রথমবার যদি পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ আসে, তাহলে পরিবারের অন্য সদস্যদের ৫-৭ দিন পর আবারও পিসিআর টেস্ট করাতে হবে। কারণ ভাইরাসটির সংস্পর্শে আসার বেশ কিছুদিন পর রোগটির অস্তিত্ব প্রকাশ পেতে শুরু করে।’

সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে

সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশনের নীতিমালা অনুযায়ী-

  • পরিবারের কোনও সদস্য কোভিড-১৯ আক্রান্ত হলে তাকে অন্য সদস্যদের থেকে আলাদা থাকতে হবে।
  • সম্ভব হলে আলাদা শয়নকক্ষ এবং শৌচাগার ব্যবহার করা কর্তব্য।
  • পরিবারের সকল সদস্যদেরকে আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে অন্তত ৬ ফুট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।

ব্রাউনস্টেইনের মতে, ‘উপসর্গ দেখা দেয়া বা টেস্ট পজিটিভ আসার পর থেকে অন্তত ১৪ দিন আক্রান্ত ব্যক্তিকে কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। এছাড়াও রোগীর পরিবারের সদস্যদের উচিত বাইরের লোকেদের সাথে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা ‘

ঘরের জানালা খোলা রাখুন

যথা সম্ভব ঘরের দরজা জানালা খোলা রাখুন যাতে পর্যাপ্ত বাতাস চলাচল বাধাগ্রস্ত না হয়। ড. ব্রুস ই হির্চ এর মতে, ‘এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ, কারণ বদ্ধ বাতাসে ভাইরাস বেশিক্ষণ ভেসে থাকে এবং সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।’

মাস্ক ব্যবহার করুন

সিডিসি’র নির্দেশনা অনুযায়ী আক্রান্ত ব্যক্তির আশেপাশে কেউ থাকলে অবশ্যই রোগীকে মাস্ক পরিধান করতে হবে। সেই সাথে পরিবারের অন্য সদস্যদেরকেও মাস্ক পরিধান করতে হবে। হির্চের মতে, ‘সার্জিক্যাল মাস্ক ব্যবহার করা ভাল, তবে কাপড়ের তৈরি মাস্ক ব্যবহার করা উত্তম।’

হাত এবং আসবাবপত্র জীবাণুমুক্ত রাখুন

বারবার সাবান দিয়ে ২০ সেকেন্ড সময় নিয়ে হাত ধুতে হবে। ঘরের বিভিন্ন আসবাবপত্র এবং বারবার ব্যবহার হয় এমন স্থান জীবাণুমুক্ত করতে হবে। মুখমণ্ডল স্পর্শ করা থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে।

এছাড়াও এ সময় স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করতে হবে, যাতে করে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার কার্যকারিতা বজায় থাকে। শুধুমাত্র বিশ্বাসযোগ্য উৎস থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্বাস করুন, অনেক ভ্রান্ত তথ্য ছড়িয়ে পড়ছে সেগুলি এড়িয়ে চলতে হবে। এই কঠিন সময়ে কোনও কাছের বন্ধুর সাথে আপনার অনুভূতি শেয়ার করুন, এটি আপনাকে মানসিক ভাবে ভারমুক্ত হতে সহায়তা করবে।

তথ্যসূত্র: হেলথলাইন

 

টাইমস/এনজে/এসএন

Share this news on: