বর্তমান পৃথিবীর জটিল সমাজ ব্যবস্থায় বিষণ্নতা বা ডিপ্রেসনের মতো সমস্যাগুলি উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। ডিপ্রেসন হচ্ছে মেজাজ পরিবর্তন জনিত একটি সমস্যা যার সাথে হতাশা ও শূন্যতা জাতীয় অনুভূতি যুক্ত থাকে।
সাধারণত ওষুধ ও সাইকোথেরাপির মাধ্যম এর চিকিৎসা করা হয়। একইসাথে জীবনযাত্রার পরিবর্তন ও নির্দিষ্ট খাবার গ্রহণের মাধ্যমে এটি নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
গবেষণায় দেখা গেছে বিভিন্ন ভিটামিন, মিনারেল, ভেষজ এবং অন্যান্য উপাদান ডিপ্রেসন নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম।
আসুন এমন কয়েকটি বিষয় সম্পর্কে জেনে নিই, যা ডিপ্রেসন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করবে-
ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড
ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড একধরণের অ্যাসেনসিয়াল ওয়েল যা সাধারণত খাবারের মাধ্যমে আমরা গ্রহণ করে থাকি। এই উপাদানটি ডিপ্রেসন কাটিয়ে ওঠতে বা মেজাজ উৎফুল্ল রাখতে সহায়তা করে।
সাধারণত বিভিন্ন ধরণের মাছে তেলে প্রচুর পরিমাণ ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড থাকে। এটি সাপ্লিমেন্ট হিসেবেও বাজারে পাওয়া যায়, তবে প্রাকৃতিক উৎস থেকে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড গ্রহণ করাই সর্বোত্তম।
স্যাফ্রন
অতি উপকারী মশলা হিসেবে আদিকাল হতেই স্যাফ্রনের ব্যবহার হয়ে আসছে। এটি বিভিন্ন ধরণের অতিপ্রয়োজনীয় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ, বিশেষ করে এতে ক্যারোটিনোয়েড ক্রোসিন ও ক্রোসেটিন রয়েছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, স্যাফ্রন আমাদের মস্তিষ্কে মেজাজ উৎফল্লকারী সেরোটোনিন নিঃসরণ বৃদ্ধি করে ডিপ্রেসন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
ভিটামিন ডি
আমাদের দেহ সুস্থ ও সবল রাখতে একটি অতিপ্রয়োজনীয় উপাদান ভিটামিন ডি। সকালের রোদে ভিটামিন ডি থাকে, তাই খুব সহজে প্রাকৃতিক উপায়েই আমাদের দেহ এই ভিটামিনটি গ্রহণ করতে সক্ষম।
তবে দুঃখজনক ভাবে আমাদের অনেকের দেহে ভিটামিন ডি এর ঘাটতি রয়েছে। বিশেষত ডিপ্রেসনে ভোগা রোগীদের দেহে ভিটামিন ডি স্বল্পতা লক্ষণীয়। স্বাস্থ্য গবেষকদের মতে, ভিটামিন ডি এর স্বল্পতার কারণে অনেক সময় ডিপ্রেসন দেখা দেয়।
ভিটামিন বি সমূহ
ভিটামিন বি সমূহ আমাদের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে অনেক প্রয়োজনীয় ভূমিকা পালন করে। নিউরোলোজিক্যাল ফাংশন ও মেজাজ নিয়ন্ত্রণে ভিটামিন সমূহ গুরুত্বপূর্ণ।
বিশেষ করে ভিটামিন বি-৬ ও বি-১২ সেরোটোনিন ও ডোপামিন নিঃসরণকে প্রভাবিত করে। তাই ডিপ্রেসন নিয়ন্ত্রণে ভিটামিন বি সমূহ কার্যকর হতে পারে।
জিংক
জিংক এমন একটি খনিজ যা মস্তিষ্ককে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে এবং মস্তিষ্কের যোগাযোগ অংশকে কর্মক্ষম রাখে। এছাড়াও এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও প্রদাহনাশক উপাদান বৃদ্ধিকে প্রভাবিত করে।
শরীরে জিংক স্বল্পতা দেখা দিলে সাধারণত ডিপ্রেসন দেখা দেয় এবং আগে থেকেই ডিপ্রেসনের উপসর্গ থেকে থাকলে তা মারত্মক আকার ধারণ করে। তথ্যসূত্র: হেলথলাইন.কম
টাইমস/এনজে