ভুল থেকে শেখার সুযোগ থাকুক বোর্ড পরীক্ষাও

প্রতিবছর দেশে দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির পরে বোর্ড পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। যা এসএসসি - এইচএসসি নামে পরিচিত।

পরীক্ষাগুলোতে শিক্ষার্থীরা আর শিক্ষার্থী থাকে না।তারা হয়ে যায় পরীক্ষার্থী আর তাদের কাছে পরীক্ষায় যেন সবকিছু। গাইড পড়েই হোক কিংবা কোনো নোট মুখস্থ করেই হোক পরীক্ষায় নাম্বার পেতেই হোক। শেখার ইচ্ছেটা নেই বললেই চলে আর থাকবেই বা কি করে, যেখানে শুধু নাম্বার আর জিপিএ দেয়া হয় কিন্তু কি ভুল করলো জানানো হয় না। এতে ভুল থেকে শিক্ষা নেয়ার প্রচলিত কথায় যেন মিথ্যে হয়ে যায়। 

বোর্ড পরীক্ষায় সাধারণত জিপিএ এবং নাম্বার দেয়া হয় কিন্তু কেন নাম্বার কাটা গেল। কোথায় কি ভুল করেছে শিক্ষার্থীদের তা জানার কোনো সুযোগ থাকে না। এমনকি শিক্ষকও যে ভুল উত্তরকে সঠিক ধরে নাম্বার দিয়েছেন নাকি তাও যাচাইয়ের সুযোগ নেই।

তিন চার স্তরে যাচাই করেও যে সঠিক উত্তর ঠিক করা হয় সেই উত্তরও শিক্ষার্থীদের জানানো হয় না। জানালে তারা অন্তত নিজেদের ভুল বুঝতে পারতো।

স্কুল কিংবা কলেজের অভ্যন্তরীণ পরীক্ষায় শিক্ষকেরা ছাত্রদের নিজেদের খাতা দেখার সুযোগ করে দেয় এবং তাতে কোনো ভুল হলে ছাত্ররা তা নিয়ে শিক্ষককে প্রশ্ন করতে পারে,সংশোধনীর অনুরোধ করতে পারে। 

কিন্তু এত বড় বোর্ড পরীক্ষা যার ফলাফলের উপর ভিত্তি করে পরবর্তীতে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি ,চাকরি নির্ভর করে সেখানে খাতার মুল্যায়ন নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও নেই সন্তোষজনক কোন ব্যবস্থা।

পুনরায় মূল্যায়নের আবেদন করলে দিতে হয় টাকা। কিন্তু সেই শিক্ষকেরাই আবার খাতার যোগ বিয়োগ ভুল আছে কিনা দেখে আবারো ফলাফল দিয়ে দেয়। এতে অবমুল্যায়ন হয়েছে কিনা তা প্রকাশের সুযোগই থাকে না। আর কোন শিক্ষকই বা কেন চাইবে নিজের ভুল মেনে নাম্বার বাড়িয়ে দিতে, এতে তো তাদের অদক্ষতা প্রকাশ পেতে পারে! 

এত বেশি শিক্ষার্থীর খাতা দেখানো সম্ভব না হলেও যারা খাতা পুনরায় মূল্যায়নের জন্য আবেদন করে তাদের খাতা দেখানোর জোর দাবি জানাই।

এতে শিক্ষার্থীরা অন্তত নিজেদের ভুল বুঝতে পারবে এবং সত্যিকার অর্থেই ভুল থেকে প্রকৃত শিক্ষা অর্জন করবে। নাম্বার কিংবা জিপিএ নয়, প্রকৃত শিক্ষায় জাতির মেরুদন্ড মজবুত হোক এটাই সকলের কাম্য।



Share this news on: