বিশ্ব রাজনীতিতে নানা খেলা চলছে, সামনে চ্যালেঞ্জ আরও কঠিন: ওবায়দুল কাদের

বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে বলেছেন, বিশ্বপরিস্থিতি অনেক খারাপ, ক্রমেই আরও খারাপ হচ্ছে। সামনে চ্যালেঞ্জ আরও কঠিন হতে পারে। বিশ্ব রাজনীতিতে এখন নানা খেলা চলছে এবং তার দল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সব সামাল দিয়ে যাচ্ছে বলেও জানান কাদের।

রবিবার ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক কার্যালয়ে সম্পাদকমণ্ডলীর সঙ্গে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের যৌথসভায় এসব বলেন ওবায়দুল কাদের।

বিএনপির সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ নয়, নির্বাচনে বাধা দেয় বিএনপি। তারা ঘোষণা করেই নির্বাচনে বাধা দিচ্ছে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা খুব চ্যালেঞ্জিং সময় অতিক্রম করছি। চ্যালেঞ্জ আরও কঠিন হতে পারে। বিশ্ব আজ সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। শুধু রাশিয়া ইউক্রেন নয়, সুদানও অস্থিতিশীল। সোমালিয়ার অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। ইউরোপেও শান্তি নেই। ফ্রান্সে আন্দোলন চলছে, জার্মানি, চেক প্রজাতন্ত্রে আন্দোলন। সারা ইউরোপ সংকটে। যুক্তরাষ্ট্র ক্যাশশূন্য হয়ে যাচ্ছে। এখন সর্বত্র সংকট।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিশ্ব রাজনীতিতে নানা খেলা চলছে। তারপর আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিস্থিতি সামাল দিয়ে চলছি। এরমধ্যে বাংলাদেশের কেউ খাদ্যাভাবে মারা যায়নি। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি আছে তবে খাদ্যসংকট নেই। শেখ হাসিনা দেশে দেশে যাচ্ছেন দেশের প্রয়োজনে, নিজের প্রয়োজনে নয়।’

কাদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফরে যে সফলতা ও সহযোগিতার আশ্বাস আসছে তা দেখে বিএনপি অন্তর্জ্বালায় ভুগছে। তারা বিদেশিদের কাছে নালিশ করল, এতে কী হলো? ভিসানীতি হলো। এতে সরকারের কিছুই হলো না। বিদেশে আমাদের বন্ধু আছে, প্রভু নেই। ভিসানীতি নিয়ে নাটক সাজাচ্ছে বিএনপি। ভিসানীতি বলা আছে বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠ ও
নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে বাধা দিলে ভিসানীতি প্রয়োগ করা হবে।’

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা ফ্রি অ্যাণ্ড ফেয়ার ইলেকশন চাই। আমরা ফ্রি অ্যাণ্ড ফেয়ার ইলেকশনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। যারা এতে বাধা দেবে, তাদের উপর ভিসানীতি কার্যকর করবে। বিএনপি তো ঘোষণা দিয়ে এতে বাধা দিচ্ছে। ভিসা নিয়ে আমরা মাথা ঘামাই না। সামনের চারটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনও ফ্রি অ্যাণ্ড ফেয়ার হবে। জাতীয় নির্বাচনও ফ্রি ফেয়ার হবে। মানুষ আমাদের ভোট দিলে আছি, না দিলে নেই।’

কাদের বলেন, ‘আমাদের শান্তি সমাবেশ নির্বাচন পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। আমাদের কর্মসূচি নেত্রীর নির্দেশে। আমরা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই, তাই শান্তি সমাবেশ করবো। কেরানীগঞ্জে বিএনপি আমাদের উপর হামলা করে আমাদেরই আক্রমনকারী হিসেবে দেখাতে চেয়েছে। তাই সবাইকে মাথা ঠাণ্ডা রেখে চলতে হবে। আক্রমণ করবো না তবে আক্রমণ করলে ছেড়ে দেব না।’

বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের উপর অমানবিক নির্যাতন করেছে অভিযোগ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিমকে অর্ধমৃত করেছে। সাবের হোসেন চৌধুরীকে প্লেট চুরির মামলা দিয়েছে। এই বিএনপি জামায়াত অপরাজনীতও করে। এদের হাতে দেশ তুলে দেওয়া যাবে না। এরা এলে ভোট চুরি করবে, দুর্নীতিতে বাংলাদেশকে আবার চ্যাম্পিয়ন করবে।’

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘নিজেরা নিজেদের বিরুদ্ধে কথা বললে দল ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সবাই একসঙ্গে গণসংযোগ করে নৌকার পক্ষে ভোট চাইবেন। নিজেরা ঝগড়া করবেন না। মনোনয়ন বোর্ড ও নেত্রী যাকে মনোনয়ন দেবে তার জন্য কাজ করবেন। আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ থাকলে কেউ পরাজিত করতে পারবে না। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে শেখ হাসিনার হাত শক্তিশালী হবে।’

যেকোনো দুর্যোগ দুর্বিপাকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মানুষের পাশে থাকে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কৃষকের ধান কাটায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের কর্মীরা অত্যন্ত আন্তরিকভবে সহায়তা করায় সবাইকে ধন্যবাদ।’

যৌথসভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ডা. দীপু মণি, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হকসহ অনেকেই।

Share this news on: