বাজারে অস্বাভাবিক দাম নিয়ন্ত্রণে ও ভোক্তাদের স্বার্থরক্ষায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের আমদানি অনুমতি বা আইপি দেয়ার খবরে কমতে শুরু করেছে পেঁয়াজের ঝাঁজ। আমদানি করা পেঁয়াজ দেশে পৌঁছালে দাম আরও কমবে বলে জানিয়েছে ব্যবসায়ীরা।
বেশ কিছুদিন ধরে দেশের পেঁয়াজের বাজার অস্থির। পেঁয়াজ উৎপাদন করে কৃষক যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেজন্য কৃষকের স্বার্থ সুরক্ষায় বিগত ১৫ মার্চ থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি বন্ধ রাখা হয়েছিল। এরপর থেকেই বাড়তে থাকে মসলাজাতীয় এ পণ্যের দাম।
রমজানের ঈদের আগেও যে পেঁয়াজ ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে, তা বাড়তে বাড়তে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে রোববারও (৪ জুন) কেজিতে সেঞ্চুরি ছুঁয়েছিল।
বাজারের অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে পেঁয়াজের কেজি সেঞ্চুরি' হাঁকায়। এমন পরিস্থিতি সরকার ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করার ঘোষণা দেয়। ঘোষণার একদিনের মধ্যে পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ২০ টাকা কমেছে।
চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে গিয়ে দেখা যায়, যেই পেঁয়াজ একদিন আগেও ৯০ থেকে ৯৫ টাকা বিক্রি হচ্ছিল, সেই একই পেঁয়াজ সোমবার বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকায়।
পেঁয়াজের পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, আমদানির অনুমতি দেয়ার পর থেকে পাবনা, ফরিদপুর, কুষ্টিয়ায় কৃষক পর্যায়ে পেঁয়াজের দাম পড়ে যায়। যার প্রভাব পড়েছে খাতুনগঞ্জেও। বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ প্রবেশ শুরু হলে দাম আরও কমবে। তখন পেঁয়াজের দাম আগের পর্যায়ে নেমে আসবে।
আমদানির খবরে দিনাজপুরের হিলিতেও কমেছে পেঁয়াজের দাম। কেজি প্রতি পেঁয়াজের দাম কমেছে ১০ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত। বর্তমানে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৭০ টাকা থেকে ৭৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
আমদানি খবরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, বর্তমানে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৮৫ থেকে ৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে আমদানি শুরু হলে দাম আরও কমবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, দেশে পেঁয়াজের বার্ষিক চাহিদা প্রায় ৩০ লাখ টন। গত অর্থবছরে দেশে পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়েছে প্রায় ৩৬ লাখ টন। এ হিসেবে চাহিদার চেয়ে উৎপাদন বেশি হয়।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, দেশে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ উৎপাদন হওয়ায় ১৫ মার্চ থেকে আমদানি বন্ধ রাখে সরকার। চাহিদার পুরোটা মেটানো হয় দেশি পেঁয়াজ দিয়ে। তবে সরবরাহ ও মজুত ঠিক থাকলেও আমদানি বন্ধের অজুহাতে দিন দিন বাড়তে থাকে পেঁয়াজের দাম। একপর্যায়ে সরকার পণ্যটি আমদানির অনুমতি দেয়।