দুই দলকে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হবে : হারুন

রাজধানীতে দুই দলকে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) বিকেল পৌনে ৪টায় রাজধানীর নাইটিঙ্গেল মোড়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

হারুন বলেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি মহাসমাবেশ করার জন্য অনুমতি চেয়েছে। আমার ধারণা তারা অনুমতি পাবে। তবে, স্থানের বিষয়ে এখন বলা যাচ্ছে না। স্থানের বিষয়টি খুব দ্রুতই জানিয়ে দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, সমাবেশকে ঘিরে লাখ লাখ মানুষের জমায়েত হবে। এ কারণে ঢাকা শহরের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছে পুলিশের টহল টিম। ঝুঁকির কথা বিবেচনা করেই থানা পুলিশ, ডিবি পুলিশ ও অন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল ও চেকপোস্ট জোরদার করা হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি করা হচ্ছে।

এর আগে, রাজধানীর নয়াপল্টনে ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশের ঘোষণা দেয় বিএনপি। একই দিন বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে শান্তি সমাবেশের ডাক দেয় আওয়ামী লীগ। মাত্র তিন কিলোমিটার দূরত্বে একই দিন দুই দলের সমাবেশ ঘিরে জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

বিএনপির পক্ষ থেকে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি শেষ করার ঘোষণা দেওয়া হলেও বিশৃঙ্খলা এড়াতে নেতাকর্মীদের রাজধানীর প্রতিটি পাড়া-মহল্লার মোড়ে সতর্ক পাহারায় থাকতে বলেছে ক্ষমতাসীন নেতারা।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমরা কাউকে আক্রমণ করব না, এই পর্যন্ত করিনি। এবার আমরা সতর্ক পাহারায় আছি, আক্রমণ করলে পাল্টা আক্রমণ হবে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, আগামী ২৮ অক্টোবর ঢাকা শহর থাকবে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানের দখলে। সমাবেশে ১০ লাখ লোকের সমাগমের মাধ্যমে বিএনপির কবর রচনা করা হবে। সারাদেশ থেকে ঢাকায় যে সন্ত্রাসীদের ঢুকিয়েছে বিএনপি, ঢাকাবাসীর শান্তির শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য ওই সব সন্ত্রাসীদের মোকাবিলা করা হবে।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ২৮ অক্টোবর সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের এক দফা দাবি আদায়ে সারাদেশ থেকে গণমানুষের ঢাকামুখী প্রবল তরঙ্গ, স্রোত ধেয়ে আসছে। স্বৈরাচার পতনের আওয়াজ আসছে রাজপথ থেকে। ফুঁসে উঠেছে গোটা দেশবাসী।

দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ২৮ অক্টোবরের সমাবেশের মধ্য দিয়ে আমরা সরকারকে একটি বার্তা দিতে চাই। চাপ প্রয়োগ করে দাবি আদায় করতে চাই। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নিতে সরকারকে বাধ্য করা হবে। মহাসমাবেশ বাধা দিলে এর সম্পূর্ণ দায়-দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে।

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেছেন, সমাবেশ ঘিরে আমরা এখন পর্যন্ত কোনো শঙ্কা অনুভব করছি না। তবে সবকিছু বিবেচনায় রেখে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। কেউ যদি জনগণের জানমালের নিরাপত্তা ব্যবস্থার হুমকির সৃষ্টি করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঢাকা মহানগর (ডিএমপি) পুলিশের কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেছেন, সংবিধানে যে কোনো রাজনৈতিক দলের শান্তিপূর্ণভাবে রাজনৈতিক আন্দোলন, মিছিল, মিটিং ও সমাবেশ করার অধিকার রয়েছে। এসব ক্ষেত্রে পুলিশ নিরাপত্তাও দিয়ে থাকে। কিন্তু কর্মসূচির আড়ালে কেউ সহিংস পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করলে কঠোর হস্তে দমন করা হবে।

র‌্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানিয়েছেন, সমাবেশের সময় যাতে নাশকতার জন্য কেউ কোনো অস্ত্র ও বিস্ফোরক বহন করতে না পারে সেজন্য ২৮ অক্টোবর ঢাকার প্রবেশ পথগুলোতে তল্লাশি চৌকি বসাবে র‌্যাব।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, রাজনৈতিক দলগুলো একই দিনে কাছাকাছি স্থানে কর্মসূচি পালন করলে সংঘাত সৃষ্টির আশঙ্কা থাকে। রাজনৈতিক দলগুলোকেও সহনশীলতা ও দূরদর্শিতার পরিচয় দিতে হবে। বিশৃঙ্খলা মোকাবিলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক থাকতে হবে।

Share this news on: