এবার লেবানন থেকে ইসরায়েলে হামাসের হামলা

ফিলিস্তিন অবরুদ্ধ গাজায় গত ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় নিহত ছাড়িয়েছে ১০ হাজারে। এ তালিকায় রয়েছে ৪ হাজারের অধিক শিশু। এদিকে পাল্টা প্রতিরোধ চালিয়ে যাচ্ছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসও।

এদিকে চলমান এ সংঘাতে যুক্ত হয়েছে নতুন মাত্রা। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী এবার গাজার পাশাপাশি লেবানন থেকেও ইসরায়েলে হামলা চালাচ্ছে বলে জানিয়েছে হামাসের সশস্ত্র শাখা। তারা বলছে, গাজায় ইসরায়েলি হামলার জবাবে দক্ষিণ লেবানন থেকে ইসরায়েলে সিরিজ রকেট নিক্ষেপ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার টেলিগ্রামে এক বিবৃতিতে হামাসের কাসাম ব্রিগেডের লেবানন শাখা বলেছে, তারা উত্তর ইসরায়েলি শহর নাহারিয়া এবং হাইফা শহরের দক্ষিণ উপকণ্ঠে ১৬টি রকেট নিক্ষেপ করেছে।

অন্যদিকে ইসরায়েল জানিয়েছে, তারা এক ঘণ্টার মধ্যে লেবানন থেকে প্রায় ৩০টি রকেট নিক্ষেপের ঘটনা শনাক্ত করেছে। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) বলেছে, ‘যে স্থান থেকে রকেট উৎক্ষেপণ করা হচ্ছে সেদিকে কামানের গোলাবর্ষণ করছে আইডিএফ।

কাসাম ব্রিগেডস বলেছে, গাজায় আমাদের জনগণের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি আগ্রাসন ও গণহত্যার বিরুদ্ধে প্রতিশোধ হিসেবে এসব রকেট নিক্ষেপ করা হয়েছে। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ, গত ৭ অক্টোবর থেকে নিরলস ইসরায়েলি বিমান হামলায় এখন পর্যন্ত ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।

সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার পর লেবাননের সঙ্গে ইসরায়েলের সীমান্তেও উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেখানে শক্তিশালী ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহসহ বেশ কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠী প্রায় এক মাস ধরে ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে গুলি বিনিময় করে চলেছে। এ ঘটনায় লেবাননে অন্তত ৮১ জন নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে ৫৯ জন হিজবুল্লাহ যোদ্ধা। অন্যদিকে হিজবুল্লাহর হামলায় ইসরায়েলি ছয় সৈন্যসহ দুই বেসামরিক নাগরিকও নিহত হয়েছে।

এদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় শহরে নিহত হয়েছে কমপক্ষে ১০ হাজার ২২ জন। এর মধ্যে ৪ হাজার ১০৪ জন শিশু। আর আহত মানুষের সংখ্যা অন্তত ২৫ হাজার ৪০৮ জন। তালিকায় থাকা নিহত ব্যক্তিরা ছাড়াও অন্তত ২ হাজার মানুষ এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। নিখোঁজদের মধ্যে ১ হাজারের বেশি শিশু রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, নিখোঁজদের প্রায় সবাই বোমার আঘাতে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া ভবনগুলোর নিচে চাপা পড়ে আছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও জানায়, শুধুমাত্র তাদের তত্ত্বাবধানে থাকা অবস্থানগুলোতেই ২৭০টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে তিনটি প্রধান হাসপাতালেও বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া পুরো উপত্যকাজুড়ে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোর ৭১ শতাংশই জ্বালানি সংকটের কারণে হয় বন্ধ হয়ে গেছে। আঘাতপ্রাপ্ত অসংখ্য ব্যক্তি এবং গর্ভবতী নারীদের সন্তান প্রসবের ক্ষেত্রে চিকিৎসকেরা কোনো রকম চেতনানাশক ছাড়াই অস্ত্রোপচার করছেন।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে প্রবেশ করে এক আকস্মিক হামলা চালায় হামাস যোদ্ধারা। এতে ১ হাজার ৪০০ জন নিহত হয়। এ ছাড়া আরও দুই শতাধিক ব্যক্তিকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে গেছে হামাস। এ ঘটনার পর থেকেই গাজার ওপর হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী।

Share this news on:

সর্বশেষ

img
‘পরমাণু অধিকার’ নিয়ে আপস করবে না ইরান : পররাষ্ট্রমন্ত্রী May 11, 2025
img
শঙ্কা কাটেনি এখনো, অমৃতসরে রাত হলে সাইরেন সতর্কতা May 11, 2025
img
নিষিদ্ধ সংগঠনের কোনো কার্যক্রম ঢাকা রেঞ্জে চলবে না: ডিআইজি May 11, 2025
img
আ.লীগ নিয়ে হাসনাতের পোস্ট May 11, 2025
img
গুগলের কাছে ক্ষতিপূরণ চায় ইতালির টেক কোম্পানি মোটিপ্লাই May 11, 2025
img
ভারতে বন্ধ ইলিয়াস, পিনাকী ও জুলকারনাইনের ইউটিউব May 11, 2025
img
আ.লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করায় সরকারকে সাধুবাদ বিএনপির May 11, 2025
img
মোদিকে পাকিস্তানের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ চালুর আহ্বান জানিয়েছিলেন জেডি ভ্যান্স May 11, 2025
img
কুকুরের বাঁকা লেজ কখনও সোজা হয় না : পাকিস্তানকে শেবাগের ইঙ্গিত! May 11, 2025
img
দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রিতে হঠাৎ ব্যর্থতার ছায়া May 11, 2025