নিত্যপণ্যের বাজারে আগুন, মাছ-মাংসেও অস্বস্তি

লাগামহীন নিত্যপণ্যের বাজারে স্বস্তি ফিরছে না কিছুতেই; বরং দাম বাড়ছে প্রতিনিয়ত। এতে হাঁসফাঁস অবস্থা সাধারণ মানুষের। সরবরাহে খুব একটা ঘাটতি না থাকলেও বেশিরভাগ পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। এছাড়া অস্থিরতা তৈরি হয়েছে ডিম ও মুরগির বাজারেও। শুক্রবার (১০ মে) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারের তুলনায় মিরপুরের বাজারগুলোতে ডিম ও মুরগির দাম বেশি বেড়েছে। কারওয়ান বাজারে বর্তমানে প্রতি ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগেও ১২০ টাকা ছিল। এছাড়া সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা ডজন, যা এক সপ্তাহ আগে ১১৫ টাকা ছিল। অন্যদিকে দাম বেড়েছে সোনালী জাতের মুরগির। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪১০-৪২০ টাকায়। যা দুই সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় ৮০ টাকা বেশি। তবে ব্রয়লার ২২০-২৩০ টাকার মধ্যে কেনা যাচ্ছে। আবার বাজারে ফার্মের মুরগির ডিমের দামও এক সপ্তাহের ব্যবধানে দর প্রতি ডজনে ২০ টাকা বেড়ে ১৪০ টাকায় ঠেকেছে।

মালিবাগ বাজারে কেনাকাটা করতে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী সাইদুল রহমান। ব্রয়লার মুরগির দাম বৃদ্ধির বিষয়ে তিনি বলেন, অন্য মুরগির যে দাম, তাতে মুরগি কেনা তো দূরে থাক, হাতই দেয়া যায় না। সাধারণ মানুষ মাংসের চাহিদা মেটানোর জন্য ব্রয়লার মুরগির ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু বর্তমান বাজারে সেই ব্রয়লার মুরগির দামও বেড়েই চলছে।

তিনি বলেন, ২২০ টাকা কেজি দরে একটি দেড় কেজি ওজনের ব্রয়লার কিনলাম। আসলে ব্রয়লার মুরগির দাম তো এত হওয়ার কথা নয়। যখন যেভাবে ইচ্ছা, ব্যবসায়ীরা এর দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। অথচ সাধারণ ক্রেতার কথা ভেবে বাজার মনিটরিংয়ের কোনও উদ্যোগ দেখি না। এত দাম দিয়ে সাধারণ নিম্নআয়ের ক্রেতাদের ব্রয়লার মুরগি কিনে খাওয়া সম্ভব নয়।

মুরগির দাম বাড়ার কারণ হিসেবে রহিম হক নামে এক বিক্রেতা বলেন, গরমের কারণে অনেক মুরগি মারা গেছে। এ কারণে বাজারে মুরগির ব্যাপক সংকট রয়েছে। তাই দাম বাড়ছে।

অন্যদিকে বাজারগুলোতে পটল আর ঢেঁড়শ বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ৬০-৮০ টাকার মধ্যে। গাজর-শসা ও টমেটোও ৮০-১০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতিকেজি কাঁচা মরিচের দাম ৪০ টাকা বেড়ে ১৬০ টাকায় উঠেছে।

সবজি বিক্রেতারা বলছেন, সপ্তাহ ব্যবধানে প্রতিকেজি সবজিতে দাম বেড়েছে ১০-১৫ টাকা পর্যন্ত। মূলত তীব্র গরমে গ্রাম পর্যায়ে সবজির দাম বাড়ায় রাজধানীর বাজারগুলোতেও এর প্রভাব পড়েছে।

এদিকে স্বস্তির খবর নেই মাছের বাজারেও। ক্রেতারা মাছ কিনতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন। নদী ও হাওরের মাছ সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে গেছে অনেক আগেই। চাষের মাছও এখন বেশ চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে।

ঈদের আগে এক কেজি ছোট ও মাঝারি আকারের পাঙাশের দাম ছিল ১৮০-২২০ টাকা, সেই একই পাঙাশ এখন বিক্রি হচ্ছে ২০০-২৫০ টাকায়। দাম বেড়ে তেলাপিয়া মাছের কেজি ২৫০ টাকা ছাড়িয়েছে। মাঝারি ও বড় মানের তেলাপিয়া প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০-২৮০ টাকায়। ঈদের আগে যা ছিল ২২০-২৫০ টাকা। চাষের কই বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২৫০ টাকার ওপরে। আর ৬০০-৭০০ গ্রাম ওজনের চাষের রুই মাছের দাম হাঁকানো হচ্ছে ২৮০-৩০০ টাকা কেজি। বড়গুলো ৩৬০-৪০০ টাকা।

বাজারে ইলিশের সরবরাহ তেমন নেই। ৪০০-৫০০ গ্রামের ইলিশের দাম চাওয়া হচ্ছে প্রতিকেজি ১২০০-১৪০০ টাকা। ৭০০-৮০০ গ্রাম হলে ১৬০০-১৮০০ টাকা। আর কেজি সাইজের হলে দাম দুই হাজারের ওপরে।

Share this news on:

সর্বশেষ

img
সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকা ছাপিয়ে দুর্বল ব্যাংকে দেয়া হয়েছে: গভর্নর Nov 28, 2024
img
সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার দায়িত্ব বাংলাদেশ সরকারের: সংসদে ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী Nov 28, 2024
img
সংগঠনকে নি‌ষিদ্ধ করার আগে তদন্ত করা হবে: উপদেষ্টা মাহফুজ Nov 28, 2024
img
হজ নিবন্ধনের সময় বাড়ল Nov 28, 2024
img
প্লাস্টিক দূষণ মোকাবিলায় প্রয়োজন বাস্তবমুখী পদক্ষেপ Nov 28, 2024
img
ডেঙ্গুতে প্রাণ গেল আরও ৭ জনের Nov 28, 2024
img
আমাকে রংপুরের একজন উপদেষ্টা হিসেবে বিবেচনা করুন,আবু সাঈদের পরিবারকে ড. ইউনূস Nov 28, 2024
img
শিক্ষার্থীদের আরও দায়িত্ববান হওয়ার আহ্বান সেনাবাহিনীর Nov 28, 2024
img
ঐশ্বরিয়ার নামে নেই ‘বচ্চন’ পদবি, বিচ্ছেদ জল্পনা তুঙ্গে Nov 28, 2024
img
বাংলাদেশ ইস্যুতে মোদির সঙ্গে জয়শঙ্করের বৈঠক Nov 28, 2024