সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেছেন, বিশেষ পরিস্থিতিতেও প্রস্তাবিত বাজেট গতানুগতিক, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার স্বার্থে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং রিজার্ভ বাড়ানোর পদক্ষেপ অপর্যাপ্ত ও দুর্বল। এ ছাড়া ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা উচ্চাকাঙ্ক্ষী। সবকিছু মিলিয়ে প্রস্তাবিত এই বাজেট অতি উচ্চাভিলাষী।
আজ শুক্রবার (৭ জুন) সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক বাজেট পর্যালোচনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন ফাহমিদা খাতুন।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক বলেন, বাজেটে অর্থনৈতিক সূচকের অনেক লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না। পাশাপাশি চলমান অর্থনৈতিক উদ্বেগ মোকাবিলায় যেসব পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন, তা ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে আমলে নেওয়া হয়নি। মূল্যস্ফীতি রোধ ও নিম্ন আয়ের মানুষকে স্বস্তি দিতে বাজেটে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা যথেষ্ট নয় বলেও মনে করেন তিনি।
ফাহমিদা খাতুন আরও বলেন, ‘আগামী অর্থবছরে মোট রিজার্ভ প্রাক্কলন করা হয়েছে ৩২ বিলিয়ন ডলার। গত ৫ জুন রিজার্ভ ছিল ২৪ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার। অন্যদিক বাজেটে ডলারের বিনিময় হার ধরা হয়েছে ১১৪ টাকা, যা গত ৫ জুন ছিল ১১৭ টাকা ৯ পয়সা। রিজার্ভ বাড়ানোর লক্ষ্য থাকলেও টাকার মান বাড়ানো হচ্ছে, যা বোধগম্য নয়।’
বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলনে বাস্তবতাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি জানিয়ে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘সরকারের বৈদেশিক ঋণ বাড়ছে, যার পরিমাণ আগামী অর্থবছরগুলোতে আরও বাড়বে। এ ছাড়া আগামী অর্থবছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধি, বেসরকারি ও ব্যক্তিখাতের বিনিয়োগের অবাস্তব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। দুই বছর ধরে ৯ শতাংশের ওপরে থাকা মূল্যস্ফীতি আগামী অর্থবছরের মধ্যে ৬ দশমিক ৫০ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য উচ্চাকাঙ্ক্ষা ছাড়া কিছু নয়।’
ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘প্রত্যাশা ছিল আগামী বাজেট অনেক উদ্ভাবনী হবে। বাজেটে সৃজনশীলসহ সাহসী বেশকিছু পদক্ষেপ থাকবে। কারণ, অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জিংয়ের এই সময়ে গতানুগতিক বাজেট কোনো ধরনের সমস্যার সমাধান দিতে পারবে না। আসন্ন বাজেট আমাদের কাছে অতীতের বাজেটের মতোই মনে হয়েছে। বর্তমান নানান সমস্যা ও ক্রান্তিকালীন সংকট দেখা দিয়েছে অর্থনীতিতে, সেগুলো সমাধানে এই বাজেট যথোপযুক্ত দিকনির্দেশনা দিতে পারেনি।’