প্রাথমিক পর্যায়ে প্রতিটি স্কুলে কম্পিউটার ল্যাব করা হবে : প্রধানমন্ত্রী

শিক্ষাই দারিদ্রমুক্তির মূল শক্তি হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেন, সুষম-জনকল্যাণমুখী শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলা হচ্ছে। প্রাথমিক পর্যায়ের প্রতিটি স্কুলে কম্পিউটার ল্যাব করে দেওয়া হবে। এছাড়া শিশুদের মেধা বিকাশে নতুন শিক্ষা কারিকুলাম তৈরি করা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) সকাল ১০টায় ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে প্রাথমিক শিক্ষা পদক-অনুষ্ঠানে সরকারপ্রধান এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, দারিদ্র্য মুক্তির মূল শক্তি হবে শিক্ষা। শিশুদের মেধা বিকাশে নতুন শিক্ষা কারিকুলাম তৈরি করা হচ্ছে। শিশুদের প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা দুই বছরের করার পরিকল্পনা করছে সরকার।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশের পরিচালক হবে আজকের শিশুরাই৷ প্রযুক্তি-জ্ঞানসম্পন্ন নতুন প্রজন্মই দেশকে এগিয়ে নেবে সমৃদ্ধির দিকে৷ আর তাই কোমলমতি শিশুদের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশে এগিয়ে আসতে হবে সবাইকে।

তিনি বলেন, শিশুদের প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা দুই বছরের করার পরিকল্পনা করছে সরকার। সার্বজনীন মানসম্পন্ন শিক্ষা দরকার। শুধু কেতাবি শিক্ষা নয়, বিভিন্ন ক্ষেত্রে শিশুদের মেধা বের করে আনতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রযুক্তি-জ্ঞানসম্পন্ন নতুন প্রজন্মই দেশকে এগিয়ে নেবে সমৃদ্ধির দিকে। একসময় চাঁদেও যাবে আমাদের ছেলেমেয়েরা-এ কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোমলমতি শিশুদের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশে এগিয়ে আসতে হবে সবাইকে।

তিনি বলেন, স্কুল ফিডিং কার্যক্রমটা কমিউনিটিভিত্তিক করতে হবে। পুষ্টিকর বিস্কুটের স্বাদে চকোলেট-ভ্যানিলা ফ্লেভার দিতে বলেছি। স্কুলে যে বিস্কুট দেয়, সেটাতে তেমন কোনো টেস্ট ছিল না। তাই বাচ্চারা সেটা খেতেও একঘেঁয়েমি বোধ করত। আমি নিজে টেস্ট করে এ বিস্কুটের স্বাদ বদলানোর নির্দেশ দিয়েছি।

গত ১৫ বছরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নারী শিক্ষকের সংখ্যা তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখ্য করে তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার শিক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন করেছে এবং মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের জনগণ আমাদের ভোট দিয়ে বারবার নির্বাচিত করে তাদের সেবা করার সুযোগ দেওয়ায় তাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞতা জানাই।
শেখ হাসিনা বলেন, স্বজন হারিয়ে বেঁচে থাকার কষ্টটা অনেক বেশি, তারপরও সেই শোক, ব্যথা বুকে নিয়েই নিজের ছোট ছোট ছেলে-মেয়েকে মাতৃস্নেহ বঞ্চিত করে চলে এসেছিলাম।

শেখ হাসিনা বলেন, ৬ বছর আসতে পারিনি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে হত্যা করে যারা অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছিল, তারা আমাদের আসতে দেবে না। ছয় বছর পর যখন আমার দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আমাকে সভাপতি নির্বাচিত করে এবং জনগণের সমর্থনে এক প্রকার জোর করেই ফিরে আসি। বিচার চাওয়ার আমাদের কোনো অধিকার ছিল না। বাবা-মা, ভাই হত্যার বিচার আমরা চাইতে পারিনি। আইন করে বন্ধ করা হয়েছিল। খুনিদের বহিষ্কৃত করা হয়েছিল, কিন্তু সাজা যাতে না হয় তার জন্য আইন করা হয়েছে। যাতে কেউ মামলা করতে না পারে।

তিনি বলেন, একাত্তরে যারা গণহত্যা চালিয়েছে, পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর সাথে গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়ে ছারখার করেছে, সেই যুদ্ধাপরাধী, যাদের বিচার হয়েছিল, আবার অনেকে কারাগারেই ছিল, যারা পাকিস্তানি পাসপোর্ট নিয়ে চলে গিয়েছিল, তাদের ফিরিয়ে এনে এখানে ক্ষমতায় বসানো হয়। এমন একটা সময় ফিরে আসি একদিকে ঘাতকের দল এবং অন্যদিকে যুদ্ধাপরাধী... তারাই ক্ষমতায়। শুধুমাত্র বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের কথা চিন্তা করে, স্বাধীনতার সুফলটা যেন মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছাতে পারি, সেই লক্ষ্য নিয়েই দেশে ফিরে এসেছি। তারপরও অনেক বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে আজকের বাংলাদেশ।

শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার পর আমাদের দেশটার কী অবস্থা ছিল? জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আমাদের একটি সংবিধান দিয়েছিলেন, সেই সংবিধানে মানুষের যে মৌলিক চাহিদা অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা এবং পল্লী বিদ্যুতের ব্যবস্থাও সুনির্দিষ্ট উল্লেখ করা ছিল।

এর আগে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক-২০২৩ তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ। আর বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী টুসি।

এবারের জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা দিবসের প্রতিপাদ্য ‘শিশুবান্ধব প্রাথমিক শিক্ষা, স্মার্ট বাংলাদেশের দীক্ষা’।

২০২২ সালে প্রাথমিক শিক্ষা পদক নীতিমালায় ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে কয়েকটি নতুন পদক সংযোজন করে মোট ১৮ ক্যাটাগরিতে উন্নীত করা হয়।

প্রাথমিক শিক্ষা পদক প্রদানের মূল লক্ষ্য হচ্ছে, শিশুদের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশের মাধ্যমে নিজ সংস্কৃতির উন্নয়ন, আত্ম-উন্নয়ন, আত্ম-নির্ভরশীলতা অর্জন এবং দেশ ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে নিজ দেশের সংস্কৃতি উন্মোচন করা।

Share this news on:

সর্বশেষ

img
সারাদেশে বৃষ্টি থাকবে, কমবে দিনের তাপমাত্রা Jul 07, 2025
img
৩৬৭ রানে ইনিংস ঘোষণা, লারার রেকর্ড না ভাঙার কারণ জানালেন মুল্ডার Jul 07, 2025
img
রাজনীতির হিসাব বদলে যাচ্ছে : রনি Jul 07, 2025
img
কক্সবাজারে টানা বৃষ্টিতে লাখো মানুষ পানিবন্দী Jul 07, 2025
img
যুক্তরাষ্ট্র-ফ্রান্স-তুরস্কসহ ৮ দেশে ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম শুরুর উদ্যোগ Jul 07, 2025
img
‘তারে জমিন পার’ পেরিয়ে ‘গেমারলগ’ দিয়ে দর্শিলের নতুন সফর শুরু Jul 07, 2025
img
২০ বছর বয়সে কেন কটাক্ষের শিকার হন গায়িকা নেহা? Jul 07, 2025
img
সিরিজ জিততে আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ : ইমন Jul 07, 2025
img
পরিবার থেকে সন্তানধারণের চাপ নিয়ে জানালেন অঙ্কিতা Jul 07, 2025
img
জুলাই শহীদদের আদর্শ ও প্রেরণা অনুসরণ করে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়া সম্ভব: উপদেষ্টা মাহফুজ Jul 07, 2025
img
আরও একবার মেসির পায়ের জাদু দেখল ফুটবল বিশ্ব, ৫ জনকে বোকা বানিয়ে জাদুকরী গোল Jul 07, 2025
মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ বিক্রি! ব্যবসায়ীকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা Jul 07, 2025
img
‘আমি এটা কখনোই করব না’, দুই কোটির প্রস্তাব ফিরিয়েছিলেন সাই পল্লবী Jul 07, 2025
img
এ দেশে থাকবে গণতন্ত্র ও ইনসাফ, এটি তরুণ প্রজন্মের আকাঙ্ক্ষা: নাহিদ ইসলাম Jul 07, 2025
img
দিলীপ কুমারের মৃত্যুবার্ষিকীতে স্ত্রী সাইরার আবেগঘন পোস্ট Jul 07, 2025
img
টলিপাড়ার দেবলীনা-তথাগত জুটি দুজনেই এগোচ্ছেন নতুন সম্পর্কে Jul 07, 2025
img
হবিগঞ্জে দুই গ্রামের সংঘর্ষে আহত ৫০, ১৪৪ ধারা জারি Jul 07, 2025
img
বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১৭ কোটি ৫৭ লাখ: ইউএনএফপিএ Jul 07, 2025
img
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ ইরানের প্রেসিডেন্টের Jul 07, 2025
img
বিমানে প্রেমিকের সঙ্গে ধরা পড়লেন শ্রদ্ধা, গোপন মুহূর্ত ফাঁস নিয়ে ক্ষুব্ধ রাভিনা Jul 07, 2025