নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, কে এম নূরুল হুদা ও কাজী হাবিবুল আওয়াল এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বিগত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী সংসদ সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) একরামুল করিম নামের এক মুক্তিযোদ্ধা বাদী হয়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরীফুল ইসলামের আদালতে প্রতারণা ও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলাটি করেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- সাবেক নির্বাচন কমিশনার আবু হাফিজ, মো. জাবেদ আলী, আবদুল মোবারক, মো. শাহনেওয়াজ, রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম, শাহাদাত হোসেন চৌধুরী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অব. আহসান হাবিব খান, বেগম রাশেদা সুলতানা, মো. আলমগীর ও আনিসুর রহমান, নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ ও জাহাঙ্গীর আলম, সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এ ছাড়া তিনটি সংসদ নির্বাচনে জয়ী সব সংসদ সদস্য।
বাদীর আইনজীবী কফিল উদ্দিন বলেন, আদালত পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের সংসদ নির্বাচনে বিরোধী দলসহ অনেক জনপ্রিয় নেতার অংশগ্রহণ ছিল না। সাধারণ মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেননি। যারা কমিশনে ছিলেন, তাদের ব্যর্থতার কারণে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও নির্বাচনী মাঠে একপেশে আচরণ করেছে। বিপুল টাকা ব্যয়ে যে তিনটি নির্বাচন হয়েছে, তাতে সংবিধানের খেলাপ করেছেন নির্বাচন কমিশনারসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা। তাই রাষ্ট্রদ্রোহ ও প্রতারণা মামলা করা হয়েছে। একই সঙ্গে এসব নির্বাচনে সংসদ সদস্য যারা নির্বাচিত হয়েছেন, অবৈধভাবে সুযোগসুবিধা ভোগ করায় তাদেরও মামলায় আসামি করা হয়েছে।
মামলার বাদী একরামুল হক বলেন, মামলাটি যথাযথ তদন্ত করে প্রতারণার মাধ্যমে জয়ী সংসদ সদস্যদের সব বেতন–ভাতা রাষ্ট্রের অনুকূলে ফেরত নেয়া হোক।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ও ইন্ধনে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে জনগণের সব গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ, দেশের সংবিধান ও আইনকে লঙ্ঘন করে একপেশে, জনগণের অংশগ্রহণবিহীন ভুয়া নির্বাচনের মাধ্যমে কিছু অনির্বাচিত লোককে সংসদ সদস্য ঘোষণা করেন। পরে তাদের মন্ত্রী ও স্পিকার ঘোষণা করা হয়। দেশের মানুষ ভোট দিতে না পারায় নির্বাচনবিমুখ হয়ে পড়েন। বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে গণতন্ত্র। দেশে স্বৈরচারী লুটেরা ব্যবস্থার আবির্ভাব হয়। দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করে দেশের অর্থনীতি পঙ্গু করে দেন সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীরা।