অনেকেরই কলা খুব পছন্দের ফল। কেউ কেউ সকালের নাশতা থেকে শুরু করে সন্ধ্যার হালকা খাবারেও কলা রাখেন। আবার প্রতিদিনের ডায়েটেও কলা রাখার অভ্যাস আছে অনেকের। কলা অবশ্য পুষ্টিকর খাবার। এ জন্য ছোট থেকে বড় সবাই কলা খেয়ে থাকেন।
কলার মতো এমন উপকারী ফল নিয়েও অনেকের মধ্যে ভুল ধারণা রয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় স্বঘোষিত কিছু বিশেষজ্ঞদের বলতে দেখা যায়, প্রতিদিন কলা খেলে নাকি ক্ষতি। এ থেকে স্বাস্থ্য হঠাৎ করেই অনেক বেড়ে যায়। আবার সুগারও নাকি বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু আসলেই কি তাই হয়? সম্প্রতি এ নিয়ে ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন কলকাতা শহরের বিশিষ্ট পুষ্টিবিদ কোয়েল পাল চৌধুরী। এবার তাহলে কলা খাওয়া সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।
পুষ্টির ভাণ্ডার: কলাকে বলা হয় পুষ্টির ভাণ্ডার। এতে পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ভিটামিন সি, ফোলেট, নিয়াসিন, কপারসহ নানা উপকারী উপাদান রয়েছে। এসব উপাদান শরীরের গঠন ভালো করতে সহায়তা করে। আবার এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট রয়েছে। দুটি উপাদানই শরীরের প্রদাহ কমায়। এ কারণে একাধিক অসুখ দূরে থাকে। তাই নিয়মিত কলা খাওয়ার কথা বলা হয়।
কলা কি সত্যিই ওজন বাড়ায়: কলা খাওয়ার ফলে সত্যিই ওজন বাড়ে। এতে কার্বোহাইড্রেট রয়েছে। এ কারণে প্রতিদিন কলা খেতে পারেন। যাদের ওজন ঠিক রয়েছে, তারাও প্রতিদিন একটি করে কলা খেতে পারেন। শরীরের উপকার হবে। আবার যাদের ওজন বেশি, বিএমআই অনেক বেশি, তাদের কলা না খাওয়াই ভালো। এতে ওজন বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে।
ডায়াবেটিসে কলাকে না: ডায়াবেটিস খুবই জটিল অসুখ। এ ধরনের অসুখ থাকলে শরীরের অবস্থা খারাপ হতে বেশি সময় লাগবে না। আবার সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখাও জরুরি। এ জন্য ডায়াবেটিসে সুস্থ থাকতে কলা খাওয়া যাবে না। এতে প্রাকৃতিক মিষ্টির পরিমাণ বেশি। ক্যালোরি ভ্যালুও বেশি। এ জন্য ডায়াবেটিস থাকলে কলা খাওয়ার কথা নিষেধ করে থাকেন বিশেষজ্ঞরা।
ওজন কমাতে ডায়েটে পরিবর্তন: যদি অল্প সময়ের মধ্যে স্বাস্থ্য কমাতে চান, তাহলে প্রথমেই ফাস্টফুড খাওয়া ছেড়ে দিতে হবে। এসব খাবার তেলের ভাণ্ডার। এটা সবারই জানা যে, যেকোনো তেল সমৃদ্ধ খাবার ওজন বাড়ায়। মিষ্টি, কোল্ড ড্রিংকস, প্রসেসড ফুড, আইসক্রিম, চকোলেটের মতো খাবার ও পানীয় খাওয়া যাবে না। এসবের পরিবর্তে শাক-সবজি খেতে পারেন। পাশাপাশি ব্রাউন রাইস, আটার রুটি, ডালিয়া ও ওটস খেতে পারেন। এতে উপকার পাবেন।
অবশ্যই ব্যায়াম: শুধুই খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনলে হবে না। পাশাপাশি প্রতিদিন নিয়ম করে ব্যায়াম করতে হবে। দিনে অন্তত ৩০ মিনিট ব্যায়াম করা চাই-ই। সবচেয়ে ভালো হয় জিমে গিয়ে ঘাম ঝরানো। আর জিমে যেতে না চাইলে বাসা-বাড়িতে ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ করতে পারেন। এতে চর্বি কাটবে।