প্রতিবেশী দেশ ভারতের মিডিয়া আমাদের সম্পর্কে অনেক মিথ্যা প্রচার করছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম। সোমবার (২ ডিসেম্বর) সকালে রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারত ও তার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশে কোনো অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি হয়নি। প্রতিবেশী দেশের (ভারতের) মিডিয়া আমাদের সম্পর্কে অনেক মিথ্যা প্রচার করছে। আমাদের দেশের সাংবাদিকরা সত্যি ঘটনাই বলে। আপনারা সত্যি ঘটনা প্রকাশ করুন। তাহলে যারা অপপ্রচার করছে তাদের মুখে চুনকালি পড়বে।
আবু সাঈদ হত্যায় কাউকে ছাড় দেয়া হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, এ পর্যন্ত আবু সাঈদ হত্যা মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমরা এ মামলার শুনানি শুরু করবো। অন্য যেসব আসামিরা ঘুরে বেড়াচ্ছে পুলিশ ও আপনারা (মিডিয়া) তাদের শনাক্ত করতে পারলে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে। কোনো অবস্থায় কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
ইসকন নিষিদ্ধের ব্যাপারে সংবাদিকাদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এ বিষয়ে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। তবে এমন পরিকল্পনা হলে অবশ্যই জানতে পারবেন। কেউ হয়রানিমূলক মামলায় ভুক্তভোগী হলে অবশ্যই ছাড়া পাবেন। এছাড়া আন্দোলন ঘিরে যারা মিথ্যা মামলা দিচ্ছেন তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে। এ সময় মিথ্যা মামলায় যেন কাউকে শাস্তি ভোগ করতে না হয় সে জন্য পুলিশের পাশাপাশি ডিসিদের সমন্বয়েও কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
জনগণকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যাবে। দেশের উন্নতির জন্য আমাদের সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। মিডিয়ার কাছে অনুরোধ করবো আপনারা সত্যি ঘটনা প্রকাশ করুন। আমাদের ভেতরে কোনো দুর্নীতি পেলে সেটিও প্রকাশ করুন। একই সময় পুলিশ নিয়োগসহ সিলেকশনে কোনো ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতি পেলেও সাংবাদিকদের তা তুলে ধরার আহ্বান জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
এর আগে সকালে রংপুরের পীরগঞ্জে মদনখালী ইউনিয়নের জাফরপাড়ার বাবনপুর গ্রামে আবু সাঈদের কবর জিয়ারতের পাশাপাশি তার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। পরে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তার সঙ্গে অন্যদের মধ্যে বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আসফাকুজ্জান, র্যাবের মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান, রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি আমিনুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শরীফ উদ্দিন ছাড়াও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।