সাভারে দাফন করা ব্যক্তিটি হারিছ চৌধুরীই ছিল:ডিএনএ রিপোর্ট হাইকোর্টে

সাভারে দাফন করা ব্যক্তিটি বিএনপি নেতা আবুল হারিছ চৌধুরী। কবর থেকে তুলে করা ডিএনএ টেস্ট তার পরিবারের সঙ্গে মিলেছে। এখন পরিবারের পছন্দমতো কবরস্থানে হারিছ চৌধুরীর মরদেহ দাফন করা যাবে।

বুধবার (৪ ডিসেম্বের) বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। পরে আদালতের আদেশে বলা হয়, এখন পরিবারের পছন্দমতো কবরস্থানে হারিছ চৌধুরীর মরদেহ দাফন করা যাবে। আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মাহদীন চৌধুরী।

এর আগে ৫ সেপ্টেম্বর তার মেয়ে ব্যারিস্টার সামিরা তানজিনের করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট বেঞ্চ আবুল হারিছ চৌধুরীর পরিচয় নির্ধারণে কবর থেকে তুলে করা ডিএনএ টেস্ট করার নির্দেশ দেন।

২০২১ সালে গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ওই সালের ৪ সেপ্টেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব ও বিএনপির সাবেক নেতা আবুল হারিছ চৌধুরী ‘মাহমুদুর রহমান’ পরিচয়ে ঢাকার সাভারের জালালাবাদ এলাকায় একটি মাদ্রাসার কবরস্থানে দাফন করা হয়।

হারিছ চৌধুরীর মেয়ে জানান, সদ্য বিদায়ী স্বৈরাচারী সরকার ওদের গোয়েন্দা বিভাগ একটা নাটক রচনা করে বাবার মৃত্যুকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। মিডিয়া একটার পর একটা রিপোর্ট করেছে হারিছ চৌধুরীর মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা কাটছে না। এটা নিয়ে যেন কখনো প্রশ্ন না উঠে সেটা ডিটারমিন করার জন্য এ রিট করেছি। আমার বাবার মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ থাকবে সন্তান হিসেবে এটা খুব মর্মান্তিক, কষ্টদায়ক। এখনো মানুষ জিজ্ঞেস করে সত্যিই কি মারা গেছেন! আমাদের হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। তাই এটা শেষ করতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি। আদালত নিরাশ করেননি।   

সাভারের জামিয়া খাতামুন নাবিয়্যিন মাদ্রাসার কবরস্থানে মাহমুদুর রহমান নামে কবর দেওয়া হয় আবুল হারিছ চৌধুরীকে।  

তার পরিচয় নির্ধারণে কবর থেকে তুলে ডিএনএ টেস্ট করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং ডিএনএ টেস্টের রিপোর্ট পজিটিভ আসার পর আবুল হারিছ চৌধুরীর নামে ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু করা হবে না ও তার নামে থাকা ইন্টারপোল রেড নোটিশ কেন প্রত্যাহার করা হবে না, তার শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী নিজ জেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধার যথাযথ সম্মান দিয়ে কেন কবরস্থ করা হবে না এই মর্মে রুল জারি করা হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র সচিব, স্থানীয় সরকার সচিব, রেজিস্ট্রার জেনারেল( জন্ম ও মৃত্যু), সিআইডির পরিচালক, ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার ও সাভার মডেল থানার ওসিকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।   

২০০৭ সালে দেশে জরুরি অবস্থা জারির পর হারিছ চৌধুরী সস্ত্রীক তার গ্রামের বাড়ি সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার দর্পনগরে যান। রাত ১২টার পর তার ব্যক্তিগত সহকারী আতিক মোবাইল ফোনে জানান, ঢাকায় বিএনপি নেতাদের বাসভবনে যৌথ বাহিনীর অভিযান চলছে। কয়েক ঘণ্টা পর যৌথ বাহিনী হারিছের বাড়িতে হানা দেয়। কিন্তু তার আগেই তিনি সটকে পড়েছিলেন। কিছুদিন সিলেটে এখানে-ওখানে লুকিয়ে থাকার পর ওই বছরের ২৯ জানুয়ারি জকিগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে রাতের আঁধারে ভারতে চলে যান। ভারতের আসামের করিমগঞ্জ জেলার বদরপুরে তার নানাবাড়ি। সেখানেই তিনি ওঠেন। সেখান থেকেই বিদেশে যাতায়াত করতেন।

Share this news on:

সর্বশেষ

img
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে প্রধান বিচারপতির সাক্ষাৎ Dec 04, 2024
img
অর্থ পাচার:কীভাবে গোটা দেশের অর্থনীতি খালি করে দেয়া হলো,চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ Dec 04, 2024
img
সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয় ঘোষণা আসবে:জামায়াত আমির Dec 04, 2024
img
ভারতের সঙ্গে রামপালসহ ক্ষতিকর চুক্তিগুলো বাতিলের দাবি রাজনৈতিক দলগুলোর Dec 04, 2024
img
দেশকে অস্থির করার চেষ্টা চলছে,সবাইকে একজোট থাকতে হবে:ড. ইউনূস Dec 04, 2024
img
সংবিধান সংস্কার সংক্রান্ত জাতীয় জনমত জরিপ ৫-১০ ডিসেম্বর Dec 04, 2024
img
অবশেষে মুক্তি পাচ্ছে নায়ক বাপ্পির 'ডেঞ্জার জোন' Dec 04, 2024
img
ব্রিটিশ পার্লামেন্টে যে তথ্য তুলে ধরা হয়েছিল তা সঠিক নয়:পররাষ্ট্র উপদেষ্টা Dec 04, 2024
img
জুনের মধ্যে মুদ্রাস্ফীতি ৪-৫ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য:গভর্নর Dec 04, 2024
img
বন্ধ হলো বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বাসিন্দাদের মিলনমেলা Dec 04, 2024