ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিবারের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধানে একের পর এক বেড়িয়ে আসছে থলের বিড়াল। এবার হাসিনা কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগের কথা জানিয়েছে সংস্থাটি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মনোনয়ন নেয়ার সময় তিনি কানাডার নাগরিক ছিলেন বলেও অভিযোগ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দুদক জানিয়েছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের পদায়নে রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপব্যবহার ও নিয়মবহির্ভূত কার্যকলাপের অভিযোগ করা হয়েছে।
দুর্নীতির তদন্ত চলমান থাকার পরেও কোনো ব্যক্তি বাংলাদেশের মনোনয়নে ডব্লিউএইচও'র একটি সম্মানজনক পদে দায়িত্ব পালন করে যাওয়া দেশের জন্য মর্যাদাহানিকর। এমন মন্তব্য করে, সায়েমা ওয়াজেদ পুতুলের কারণে বিশ্বপরিমন্ডলে দেশের সুনাম ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশংকা করছেন দুদক কর্মকর্তারা।
দুদক জানায়, ‘বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, যুক্তিযুক্ত কোন কারণ ছাড়াই সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় সফরে শেখ হাসিনার সফরসঙ্গী করা হয়েছে। এমনকি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রার্থীর যোগ্যতা হিসেবে প্রদত্ত তথ্যাদি সরবরাহ করেননি সায়মা ওয়াজেদ পুতুল।
ওই মনোনয়নকালে পুতুল কানাডার পাসপোর্টধারী অর্থাৎ কানাডার নাগরিক ছিলেন বলেও তথ্য পাওয়া গেছে দুদকের অনুসন্ধানে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০২৩ সালের ৩০ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত ডব্লিউএইচও-এর ৭৬তম সম্মেলনে রাষ্ট্রীয় অর্থ অপচয় করে শতাধিক কর্মকর্তা ও প্রতিনিধি দল দিল্লিতে উপস্থিত হয়। এসময় নিজের পারিবারিক প্রভাব এবং নিকটাত্মীয়দের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহার করে বাংলাদেশ সরকারের বিপুল অর্থ অপচয় করেন সায়মা ওয়াজেদ পুতুল।
দুর্নীতি দমন কমিশনে দায়েরকৃত ভিন্ন একটি অভিযোগের তদন্তে দেখা যায়, দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে এবং পরিবারিক রাজনৈতিক প্রভাবের অপব্যবহার করে বেআইনিভাবে ঢাকার পূর্বাচল নতুন শহর আবাসিক প্রকল্পের ডিপ্লোমেটিক জোনে ১০ কাঠা প্লট করায়ত্ব করেন পুতুল। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে পুতুল এবং তার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা করেছে দুদক।
এছাড়াও সায়মা ওয়াজেদ পুতুল 'সূচনা ফাউন্ডেশন' নামের একটি প্রতিষ্ঠান খুলে বিভিন্ন সামাজিক ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান থেকে জোরপূর্বক উপঢৌকন আদায় ও অর্থ আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। কেবল তাই নয়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য বিভাগের আওতায় অটিস্টিক সেলকে ব্যবহার করে ভূয়া প্রকল্প দেখিয়ে রাষ্ট্রের বিপুল অর্থ আত্মসাৎ করে পুতুল নিজে লাভবান হয়েছেন বলে অভিযোগের তদন্ত চলছে।
টিএ/