বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তাদের লকার হঠাৎ ফ্রিজ করার আদেশ। আদালতের নির্দেশ পেলেই শুরু করা হবে অভিযান। ভল্টে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তাদের থাকা সম্পদের পরিমাণ জানতে, তাই আদালতের অনুমতির অপেক্ষায় রয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন। এমন তথ্য গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন খোদ দুদকের মহাপরিচালক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নিরাপত্তা ভল্টে কর্মকর্তাদের অর্থ-সম্পদ জমা রাখার ব্যক্তিগত সব লকার সাময়িকভাবে ফ্রিজ করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে গভর্নরকে চিঠি দিয়েছে - দুদক। এসব বিশেষ লকারে অপ্রদর্শিত বিপুল পরিমাণ অর্থ-সম্পদ জমা রয়েছে বলে মনে করছে দুদকের কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, রবিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের কাছে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পাঠিয়েছেন দুদক পরিচালক।বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে দেওয়া ঐ চিঠিতে বলা হয়, আদালতের অনুমতি নিয়ে অনুসন্ধানের উদ্দেশ্যে গঠিত দুদক টিম বাংলাদেশ ব্যাংকের কয়েন ভল্টে সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরীর সেইফ ডিপোজিট তল্লাশি করে। যেখানে মেলে বিপুল পরিমান সম্পদের সন্ধান।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে এসকে সুরের জমা করা তিনটি সিলগালা কৌটা খুলে মোট ৫৫ হাজার ইউরো, ১ লাখ ৬৯ হাজার ৩০০ মার্কিন ডলার, প্রায় ১ কেজি স্বর্ণ ও ৭০ লাখ টাকার এফডিআর পাওয়া গেছে। যা তার নিয়মিত আয়কর রিটার্নে উল্লেখ করেনি এসকে সুর।
তল্লাশিকালে রেজিস্ট্রার পরীক্ষা করে দেখা যায়, সেখানে বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্য কিছু কর্মকর্তাও সিলগালা করে সেফ ডিপোজিট রেখেছেন। দুদকের ধারনা এসব সিলগালা কৌটাতেও অপ্রদর্শিত সম্পদ থাকার অবকাশ রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারসহ বিভিন্ন অভিযোগে দুদকের অনুসন্ধান চলমান রয়েছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, গত ৩০ জানুয়ারি বিকেল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যানের “দুদক ও সম্পদ পুনরুদ্ধার বিষয়ক” আলোচনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে রক্ষিত সম্পদ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। অর্থ উপদেষ্টা ওই ভল্টে রক্ষিত সম্পদ সাময়িকভাবে ফ্রিজের সম্মতি দিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গভর্নরকে দেওয়া দুদকের চিঠি ও অর্থ উপদেষ্টার সম্মতি থাকায় ভল্টের সব লকারের সম্পদ ফ্রিজ করা হয়েছে। ফলে এখন থেকে ভল্টের মালিকরা তাদের লকার থেকে কোনো ধরনের অর্থ-সম্পদ সরিয়ে নিতে পারবেন না।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঐসব লকার খোলা ও লকারে থাকা অর্থ-সম্পদের তালিকা তৈরির অনুমতির জন্য সোমবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র স্পেশাল জজের কাছে আবেদন জমা দিয়েছে দুদক। মঙ্গলবার আদালত এ সংক্রান্ত আদেশ দেবেন বলে, দুদকের পক্ষ থেকে আশা করা হচ্ছে।
আদালতের আদেশ পেলেই বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে কর্মকর্তাদের লকারে অভিযান চালাবে দুদক। তবে, অনেকেই ধারনা করছেন অনেক কর্মকর্তারই অবৈধ সম্পদের তথ্য পাওয়া যাবে ভল্টে। আবার কারও কারও ধারনা আগেই সরিয়ে নেয়া হয়েছে দুর্নীতিগ্রস্থ কর্মকর্তাদের ভল্টের সম্পদ।
টিএ/