'ক্ষমতা আঁকড়ে রাখতে জুলাই অভ্যুত্থানে নৃশংসতা চালানো হয়েছিল'

ক্ষমতা আঁকড়ে রাখতে সাবেক সরকার জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নৃশংসতা চালিয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশন এক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সাবেক সরকারের নৃশংসতা নিয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেই প্রতিবেদনে হাইকমিশনার এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘এই নৃশংস প্রতিক্রিয়া ছিল সাবেক সরকারের একটি পরিকল্পিত এবং সমন্বিত কৌশল, যা জনতার বিরোধিতার মুখে ক্ষমতা আঁকড়ে রাখতে চেয়েছিল। বিক্ষোভ দমন করার কৌশলের অংশ হিসেবে রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং ঊর্ধ্বতন নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের জ্ঞাতসারে, তাদের সমন্বয় ও নির্দেশনায় শত শত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, ব্যাপক নির্বিচারে গ্রেপ্তার ও আটক এবং নির্যাতন চালানো হয়েছে বলে বিশ্বাস করার যুক্তিসংগত কারণ রয়েছে।’

ভলকার তুর্ক বলেন, আমরা যে সাক্ষ্য এবং প্রমাণ সংগ্রহ করেছি তা ব্যাপক রাষ্ট্রীয় সহিংসতা এবং লক্ষ্যভিত্তিক হত্যাকাণ্ডের এক উদ্বেগজনক চিত্র তুলে ধরে, যা মানবাধিকার লঙ্ঘনের মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর এবং যা আন্তর্জাতিক অপরাধও গঠন করতে পারে। জাতীয় নিরাময় এবং বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য দায়বদ্ধতা এবং ন্যায়বিচার অপরিহার্য।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের অনুরোধে, জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় সেপ্টেম্বর মাসে একটি দল প্রেরণ করে, যার মধ্যে মানবাধিকার অনুসন্ধানকারী, একজন ফরেনসিক চিকিৎসক এবং একজন অস্ত্র বিশেষজ্ঞ অন্তর্ভুক্ত ছিলেন, যাতে মরণঘাতী ঘটনাগুলোর বিষয়ে একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তথ্য অনুসন্ধান পরিচালনা করা হয়।

হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশের জন্য এগিয়ে যাওয়ার সর্বোত্তম পথ হলো একটি বিস্তারিত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই সময়ে সংঘটিত ভয়াবহ অন্যায়গুলোর সত্য উন্মোচন, নিরাময় এবং জবাবদিহিতার মুখোমুখি হওয়া, এবং গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ধারাবাহিকতার প্রতিকার করা এবং এর পুনরাবৃত্তি যাতে আর কখনও না ঘটতে পারে তা নিশ্চিত করা।

‘আমার কার্যালয় এই গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় জবাবদিহিতা এবং সংস্কার প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করতে প্রস্তুত রয়েছে,’ বলেও উল্লেখ করেন ভলকার তুর্ক।

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বাবা ও মাকে বড় রেস্তোরাঁয় নিয়ে ধনীদের মাঝে নার্ভাস ছিলাম : অমিতাভ Aug 13, 2025
img
বাজে মৌসুম কাটিয়েও রাঙ্কিংয়ে রিয়ালের ধারে কাছেও নেই বার্সা Aug 13, 2025
img
ইতালির উপকূলে অভিবাসীদের বহনকারী নৌকাডুবির ঘটনায় প্রাণ গেল ২০ জনের Aug 13, 2025
img
বাংলাদেশে নিজের বিচার হওয়া নিয়ে যা বললেন টিউলিপ Aug 13, 2025
img
চক্রান্তে হেরে গেছেন নেতানিয়াহু, দাবি নিউজিল্যান্ডের Aug 13, 2025
img
আগামী নির্বাচনে পেশিশক্তি, টাকার খেলা ও ডিক্লারেশন বন্ধ হতে হবে : হারুন চৌধুরী Aug 13, 2025
img
দীর্ঘ বিরতির পর ফিরছেন সামীরা রেড্ডি Aug 13, 2025
img
মিথিলাকন্যা আইরাকে নিয়ে আবেগঘন স্ট্যাটাস দিলেন সৃজিত Aug 13, 2025
img
‘টুপিটি জয়ার মাথায় মুরগির ঝুঁটির মতো দেখতে লাগছে’ Aug 13, 2025
img
মালয়েশিয়া সফর শেষে দেশে ফিরলেন প্রধান উপদেষ্টা Aug 13, 2025
img
একশ’র নিচে অলআউট হওয়ায় পাকিস্তানের কড়া সমালোচনা করলেন শোয়েব আখতার Aug 13, 2025
img
আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না : জি এম কাদের Aug 13, 2025
img
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণের আহ্বান তথ্য উপদেষ্টার Aug 13, 2025
img
সৌদি ক্রাউন প্রিন্সের সঙ্গে ইতালির প্রধানমন্ত্রীর ফোনালাপ Aug 13, 2025
img
টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিলেন দুদকের তিন কর্মকর্তা Aug 13, 2025
img
'দেখতে পুরুষের মতো' ম্রুণালের কটাক্ষের ইঙ্গিতপূর্ণ জবাব দিলেন বিপাশা Aug 13, 2025
img
নির্বাচন করার ইচ্ছা আছে, এনসিপি’র হয়ে করবো কি-না সিদ্ধান্ত নেইনি: আসিফ মাহমুদ Aug 13, 2025
img
১২ দিনে রেমিট্যান্স এলো ১০৫ কোটি ডলার Aug 13, 2025
img
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ৩ গভর্নর ও ৬ ডেপুটি গভর্নরের ব্যাংক হিসাব তলব Aug 13, 2025
img
নিজের জীবন নিয়ে আশঙ্কার অভিযোগ রাহুল গান্ধীর Aug 13, 2025