আয়নাঘরে পাওয়া মেটালের চেয়ার নিয়ে লিখেছেন ভারতের সাংবাদিক অর্ক দেব। চেয়ারের ছবি নিজের ফেসবুকে পোস্ট করে তিনি লেখেন, ‘এই চেয়ারটা দেখে রাখা জরুরি। ফ্যাসিবাদের জননী শেখ হাসিনার আয়নাঘরের একটি কক্ষে রাখা এই চেয়ার। ‘হাই ভ্যালু’ বন্দিদের ইলেকট্রিক শক দিতে ব্যবহার হতো এই চেয়ার।’
১২ ফেব্রুয়ারি দেশ-বিদেশের গণমাধ্যমের প্রতিনিধি ও ভুক্তভোগীদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আয়নাঘর পরিদর্শন করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এসময় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গী হয়েছিলেন ভারতীয় সাংবাদিকরাও। তাদের মধ্যেই একজন এই অর্ক দেব।
ওই সাংবাদিক আরো লেখেন, ‘ডিজিএফআইয়ের কাউন্টার টেররিজম ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো (সিটিআইবি) এই আয়নাঘরের দায়িত্বে ছিল। সারাক্ষণ একজস্ট ফ্যান চলত এই ঘরগুলিতে, ফ্যান বন্ধ হলেই কান্না আর গোঙানির শব্দ শুনতে পাওয়া যেত। আর কিছুক্ষণ। আজ থেকে গোটা বিশ্ব আয়নাঘরের সব ছবি দেখবে।’ অর্ক দেব ‘ইনস্ক্রিপ্টি ডট মি’-এর সম্পাদক। এর আগে তিনি আনন্দবাজার ও নিউজ১৮ সংবাদমাধ্যমে কাজ করেছেন।
অন্য এক পোস্টে অর্ক বলেন, “এখানে বন্দি ছিলেন মাইকেল চাকমা। তিনি মাইকেল চাকমার বক্তব্য তুলে ধরে বলেন, ‘প্রথম যে দুটো রুম দেখা যাচ্ছে ঠিক এই রুমগুলোর মধ্যে ১১৩ নম্বর সেল যেটি একেবারে বাথরুমের পাশে এবং সেলের ভেতর ঢোকার সময় বাঁ সাইডের কোনায় একটি সিসি ক্যামেরা ২৪ ঘণ্টা চালু থাকে। এই সেলে আমি প্রায় দুই বছর বন্দি ছিলাম। একই লাইনের ১১৭ নম্বর রুমে ছিলাম প্রায় দেড় বছরের একটু বেশি। নিচের রুমগুলোর মধ্যে ১০৪ নম্বর রুমে ছিলাম এক বছরের কাছাকাছি। ১০৪-এর পরে ১০৫ নম্বর সেল। এর পরে টয়লেট, বাথরুম ও চুল কাটার সেল। চুল কাটার সেল নম্বর ১০৬। এ ছাড়া আরো অনেক রুমে আমাকে রাখা হয়।”
পুরো দেশজুড়ে ৭০০ থেকে ৮০০ আয়নাঘর থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর এসব আয়নাঘরে নিয়ে যেয়ে নির্যাতন করা হতো বছরের পর বছর। জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার নির্দেশেই এসব হয়েছে।