মিললো দুদকের অভিযানে সত্যতা, এটুআই প্রকল্পে লুটপাট

অ্যাসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই) প্রকল্পে ব্যাপক লুটপাট, অর্থপাচার, বিদেশে সফর, সম্পদ অর্জন, ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দেওয়া, অবৈধ বিল/ভাউচারের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ, অবৈধ নিয়োগ, নারী সহকর্মীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ, রাজনৈতিক দলের প্রচার এবং দল বেঁধে নাইট ক্লাবে গিয়ে নেশায় মত্ত থাকাসহ বিভিন্ন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। 

মঙ্গলবার আগারগাঁওয়ের আইসিটি টাওয়ারে দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম সরেজমিন পরিদর্শনে এটুআই প্রকল্প-সংশ্লিষ্ট ১৫০-এর অধিক ক্রয়ের টেন্ডার পর্যবেক্ষণ করে। অভিযানে দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে সংস্থাটির জনসংযোগ দপ্তর নিশ্চিত করেছে। 

পিপিআর বিধির লঙ্ঘনপূর্বক উক্ত টেন্ডারসমূহে নির্দিষ্ট কিছু ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে কাজ প্রদান করা হয় মর্মে টিমের নিকট পরিলক্ষিত হয়েছে। এ ছাড়া স্পেসিফিক/লজিক্যাল জাস্টিফিকেশন ছাড়া কার্যাদেশের ব্যয়ের পরিমাণ বৃদ্ধি করা হয়, যার মাধ্যমে ঠিকাদারদের সঙ্গে যোগসাজশে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে দুদক টিমের নিকট প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে।

অভিযানকালে সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, এটুআই প্রকল্পের প্রাথমিক ব্যয় ৪৮৫.৪৫ কোটি টাকা ধরা হলেও পরবর্তীতে এর ব্যয় দাঁড়ায় ৮৫৫.৪৮ কোটি টাকা। যা প্রাথমিক প্রজেক্টেড ব্যয়ের প্রায় দ্বিগুণ। অভিযানকালে প্রাপ্ত অনিয়মসমূহের বিষয়ে বিস্তারিত যাচাইয়ের উদ্দেশ্যে টিম সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করে। রেকর্ডপত্রসমূহ পূর্ণাঙ্গরূপে বিশ্লেষণপূর্বক পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণপূর্বক কমিশন বরাবর বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে জানিয়েছে দুদক টিম।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, এটুআই আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠদের লুটপাটের বড় একটি প্রকল্প। প্রকল্প-সংশ্লিষ্ট ক্রয় প্রক্রিয়ায় ব্যাপক লুটপাট, অর্থপাচার, বিদেশে সফর, সম্পদ অর্জন, ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দেওয়া, অবৈধ বিল/ভাউচারের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ, অবৈধ নিয়োগ, নারী সহকর্মীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ, রাজনৈতিক দলের প্রচার এবং দল বেঁধে নাইট ক্লাবে গিয়ে নেশায় মত্ত থাকাসহ একগাদা অভিযোগ রয়েছে।

সেখানে আরও বলা হয়, আওয়ামী লীগ সরকার ২০২০ সালে অ্যাকসেস টু ইনফরমেশনের নাম পরিবর্তন করে অ্যাসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই) রাখা হয়। পরে সেটিকে ‘এজেন্সি টু ইনোভেট (এটুআই) বিল-২০২৩’ নামে বিল হিসেবে সাবেক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের নেতৃত্বে জাতীয় সংসদে তোলা হয় এবং বিলটি পাসও হয়। প্রকল্পটির মেয়াদ ছিল ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত।

Share this news on:

সর্বশেষ

img
জামায়াত আমিরের সঙ্গে শিল্প মালিক প্রতিনিধিদের সৌজন্য সাক্ষাৎ Sep 16, 2025
img
মিয়ানমারে অবৈধভাবে পণ্য পাচারের সময় ১১ জনকে আটক করেছে নৌবাহিনী Sep 16, 2025
img
চবিতে ‘হোস্টেল সংসদ’ নির্বাচনের ঘোষণা Sep 16, 2025
img
সাতক্ষীরা সীমান্তে ১৫ বাংলাদেশিকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করল বিএসএফ Sep 16, 2025
img
বিশ্ববাজারে ফের বাড়ল স্বর্ণের দাম Sep 16, 2025
img
দুই জয়ে ‘বি’ গ্রুপের শীর্ষে শ্রীলঙ্কা, খালি হাতে বিদায় নিল হংকং Sep 16, 2025
img
ভোজ্যতেল আমদানিতে ব্যয় বৃদ্ধি করল এনবিআর Sep 16, 2025
img
ইভ্যালি থেকে বেরিয়ে একই কৌশলে প্রতারণা, নারী গ্রেপ্তার Sep 16, 2025
img
এশিয়া কাপ জিতেনি বাংলাদেশ গুগোল করে নিশ্চিত হলেন ট্রট Sep 16, 2025
img
ড. ইউনূস ব্যর্থ হলে বাংলাদেশের স্বপ্ন বিনষ্ট হবে : রাশেদ খান Sep 16, 2025
img
ডাকসুর ভোট ম্যানুয়ালি গণনার জন্য উমামার লিখিত আবেদন Sep 16, 2025
img

মাসুদ সাঈদী

জনগণের ভালোবাসা অর্জন করুন, তাহলে নির্বাচন বর্জনের দরকার হবে না Sep 16, 2025
img
আরও ১ মাস বাড়লো ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ Sep 16, 2025
img
আগস্টে ৪৯ মামলায় জড়িত ৩১১ দুর্নীতিবাজ Sep 15, 2025
img
১৫ কেজির কোরাল মাছ বিক্রি ১৮ হাজারে Sep 15, 2025
img
শ্রীলঙ্কার সামনে হংকংয়ের ১৫০ রানের চ্যালেঞ্জ Sep 15, 2025
img
নিকুঞ্জে নাগরিক জাগরণ: হারানো শান্তি ফিরে পাওয়ার গল্প Sep 15, 2025
img
সুপার ফোরে খেলবে বাংলাদেশ, আত্মবিশ্বাসী কোচ Sep 15, 2025
img
ম্যাচের আগে বাংলাদেশের প্রশংসায় জনাথন ট্রট Sep 15, 2025
img
অসুস্থ অমিতাভকে ২০০ জন ৬০ ব্যাগ রক্ত দিয়েছিলেন Sep 15, 2025