আজ ২১শে ফেব্রুয়ারি, মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। দিনটি আবার শুক্রবার। সে হিসেবে প্রাণের বই মেলায় দর্শনাথীদের আনাগোনা বেশি। লোকে লোকারণ্য ছিল বইমেলার প্রতিটি প্রাঙ্গণ। তবে অন্যদিনের তুলনায় এদিন বিক্রি হয়নি বলে অভিমত দিয়েছেন প্রকাশক তথা বিক্রেতারা। তারা জানান, বইমেলায় দর্শনার্থীরা আসছেন, ছবি তুলছেন, পরে চলে যাচ্ছেন। ফলে বইমেলায় কাঙ্ক্ষিত পাঠকের উপস্থিতি কম লক্ষ করা গেছে।
শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বইমেলার ২১তম দিনে মেলা প্রাঙ্গণে ঘুরে এমন চিত্রই দেখা যায়। এদিন সকাল ৭টায় মেলা শুরু হওয়ায় তখন থেকেই মানুষের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দর্শনার্থীদের আগমন বেড়েছে কয়েকগুণ।
বইমেলায় ২০ দিনে (বৃহস্পতিবার পর্যন্ত) সর্বমোট নতুন বই এসেছে ১ হাজার ৯১০টি। শুধু বৃহস্পতিবারই মেলায় বই এসেছে ১১২টি।
বইমেলায় এখন পর্যন্ত প্রকাশিত বইগুলোর মধ্যে সর্বাধিক এসেছে কবিতার বই। এ পর্যন্ত ছয়শর বেশি কবিতার বই প্রকাশিত হয়েছে। তবে কেনার ক্ষেত্রে পাঠকদের অপছন্দের তালিকায়ও অন্যতম কবিতার বই। কবিতার বইয়ের মান কমে যাওয়ায় পাঠকরা কবিতার বইয়ের প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছেন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। অন্যদিকে মেলায় দর্শনার্থীদের পছন্দের বইয়ের মধ্যে উপন্যাস, থ্রিলার, সায়েন্স ফিকশন, সাহিত্য, অনুবাদধর্মী বই উল্লেখযোগ্য।
বইমেলা ঘুরে দেখা যায়, দর্শনার্থীরা সেজেগুঁজে দলবেঁধে মেলায় ঢুকছেন। তারা বিভিন্ন স্টলের সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন। কেউ কেউ কোনো স্টল বা প্যাভিলিয়নের সামনে বই হাতে নিয়ে ছবি তুলছেন। কিন্তু এরপর বই না কিনেই তারা বিদায় নিচ্ছেন। বিক্রয় কর্মী ও প্রকাশকদের মতে, গতবছরও পাঠকের এমন খরা ছিল না।
সময় প্রকাশনের বিক্রয় কর্মী আসিফ বলেন, মেলায় এত এত মানুষ আসছেন কিন্তু বিক্রি তেমন হচ্ছে না। গত বছরও এমন পরিস্থিতি ছিল না। এবার সবাই এসে শুধু ছবিই তুলছেন, এরপর চলে যাচ্ছেন।
অন্যপ্রকাশের দুজন বিক্রয় কর্মী বলেন, আমাদের স্টলে সবসময়ই ভালো বিক্রি হয়। তবে যে পরিমাণ দর্শনার্থী আসে, সে হিসেবে বিক্রি তেমন একটা হচ্ছে না।
এ এইচ প্রকাশনীর প্রকাশক শাহ আলম বলেন, গত বছর অনেক বেশি বিক্রি হয়েছে কিন্তু এ বছর তেমন বিক্রি হচ্ছে না। মেলায় যেমন মানুষ হচ্ছে সে অনুযায়ী বিক্রি নেই বললেই চলে। মানুষ বইয়ের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে।
লেখাপ্রকাশের প্রকাশক আলমগীর হোসেন বলেন, মানুষের বই কেনায় আগ্রহ দেখতে পাচ্ছি না। ২১শে ফেব্রুয়ারি, আবার শুক্রবার হিসেবে অনেক বেশি বিক্রির আশা করেছিলাম। কিন্তু সকাল থেকে ১২টা পর্যন্ত কেউ একটি বইও কেনেননি। জুমার পর অল্প কিছু বই বিক্রি হয়েছে। আশা করি বিকেল বা সন্ধ্যার দিকে ভালো বিক্রি হবে।