শরীরে যেসব ভিটামিনের অভাবে কাঁপুনি দেখা দিতে পারে

মাঝে মাঝে মানসিক চাপ, ক্যাফেইন বা ক্লান্তির মতো কারণে হাত, পা, অথবা পুরো শরীর হঠাৎ কাঁপতে শুরু করতে পারে। তবে ঘন ঘন কম্পন অন্তর্নিহিত ভিটামিন বা খনিজ ঘাটতির ইঙ্গিত দিতে পারে। শরীরের কম্পনের জন্য দায়ী মূল পুষ্টির ঘাটতিগুলো এবং খাদ্যের মাধ্যমে কীভাবে সেগুলো মোকাবিলা করতে পারেন তা জেনে নেওয়া যাক-

১. ম্যাগনেসিয়ামের ঘাটতি
ম্যাগনেসিয়াম স্নায়ু এবং পেশীর কার্যকারিতার পাশাপাশি রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর অভাবে কম্পন, খিঁচুনি এবং পেশীর খিঁচুনি হতে পারে। যারা অতিরিক্ত পরিমাণে অ্যালকোহল, প্রক্রিয়াজাত খাবার বা ক্যাফেইন গ্রহণ করেন তাদের ম্যাগনেসিয়ামের ঘাটতি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। ম্যাগনেসিয়ামের ঘাটতি দূর করতে আপনার খাদ্যতালিকায় ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার যেমন সবুজ শাকসবজি, বাদাম এবং বীজ, আস্ত শস্যদানা যোগ করুন।

২. ক্যালসিয়ামের ঘাটতি
শক্তিশালী হাড়, দাঁত এবং পেশী এবং স্নায়ুর সঠিক কার্যকারিতার জন্য ক্যালসিয়াম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কম ক্যালসিয়ামের মাত্রা পেশীতে টান, খিঁচুনি এবং কাঁপুনি সৃষ্টি করতে পারে। পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম গ্রহণ নিশ্চিত করতে দুগ্ধজাত দ্রব্য (দুধ, দই, পনির), বাদাম, তিল বীজ এবং চিয়া বীজ নিয়মিত খেতে হবে। সেইসঙ্গে সবুজ শাক-সবজিও খেতে হবে নিয়মিত।

৩. ভিটামিন ডি এর অভাব
ক্যালসিয়াম শোষণ এবং স্নায়ু কার্যকারিতার জন্য ভিটামিন ডি অত্যাবশ্যক। এর অভাবে পেশী দুর্বলতা, কম্পন এবং ভারসাম্যে সমস্যা দেখা দিতে পারে। ভিটামিন ডি-এর অভাবের প্রধান কারণ হলো সূর্যের আলোতে সীমিত উপস্থিতি এবং দুর্বল খাদ্যাভ্যাস। ভিটামিন ডি-এর মাত্রা বাড়ানোর জন্য আপনাকে প্রাকৃতিক সূর্যালোকে সময় কাটাতে হবে। এর পাশাপাশি চর্বিযুক্ত মাছ, ডিম এবং মাশরুম খেতে হবে নিয়মিত। এছাড়া দুধ ও দুগ্ধজাত খাবারেও মিলবে কিছুটা ভিটামিন ডি।

৪. পটাশিয়ামের ঘাটতি
পেশী সংকোচন, স্নায়ু সংকেত, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ এবং তরল ভারসাম্যের জন্য পটাসিয়াম অপরিহার্য। পটাশিয়ামের অভাবের ফলে কাঁপুনি, খিঁচুনি এবং অনিয়মিত হৃদস্পন্দন হতে পারে। ভারী ঘাম, পানিশূন্যতা এবং মূত্রবর্ধক পদার্থের মতো কারণে পটাসিয়ামের মাত্রা কমে যেতে পারে। পটাসিয়ামের ঘাটতি পূরণের জন্য খেতে হবে কমলা, কলা, মিষ্টি আলু, আলু, অ্যাভোকাডো এবং পালং শাক।

৫. ভিটামিন বি১২ এর অভাব
লোহিত রক্তকণিকা উৎপাদন এবং ডিএনএ সংশ্লেষণের জন্য ভিটামিন বি১২ অপরিহার্য। এই ভিটামিনের অভাবে কাঁপুনি, ঝিঁঝিঁ ধরা এবং পেশী দুর্বলতা সহ স্নায়বিক লক্ষণ দেখা দিতে পারে। ভিটামিন বি১২ এর অভাবের ঝুঁকি বেশি থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছে বয়স্ক প্রাপ্তবয়স্ক এবং নিরামিষাশীরা। সুস্থ বি১২ এর মাত্রা বজায় রাখতে আপনার খাদ্যতালিকায় দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য, ডিম, মাছ মুরগির কলিজা ইত্যাদি যোগ করুন।

Share this news on:

সর্বশেষ

img
যথাসময়ে অফিসে না আসায় ৬৯ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে শোকজ ইসির Feb 25, 2025
img
সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় আব্দুল্লাহ আল নোমানের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত Feb 25, 2025
img
আবদুল্লাহ আল নোমানের মৃত্যুতে চট্টগ্রাম জামায়াতের শোক প্রকাশ Feb 25, 2025
img
নাহিদ একদিন প্রধানমন্ত্রী হবেন: উপ প্রেস সচিব Feb 25, 2025
img
চলন্ত বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানির ঘটনায় ২ ডাকাত গ্রেপ্তার Feb 25, 2025
img
পদোন্নতির দাবি, আট মার্চ থেকে কর্মবিরতির ঘোষণা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের Feb 25, 2025
img
হানিয়ার চেহারা আর্টিফিশিয়াল, গালের টোল নকল! Feb 25, 2025
আমিরাতে লটারি জিতে কোটিপতি বাংলাদেশি গাড়িচালক Feb 25, 2025
জামায়াত নেতা আজহারের রিভিউ শুনানি পেছানো হলো Feb 25, 2025
পদত্যাগ করেছেন উপদেষ্টা নাহিদ, উপদেষ্টা পরিষদের জরুরী বৈঠক! Feb 25, 2025