প্রধান উপদেষ্টাকে জাতিসংঘ মহাসচিবের চিঠি

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে তিনি প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে চলমান সংস্কার কার্যক্রমের প্রতি দৃঢ় সমর্থন জানিয়েছেন।

প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে চিঠিটি শেয়ার করা হয়েছে। জানা গেছে, এর আগে প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘের মহাসচিবের উদ্দেশে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন, যার উত্তরে ২৫ ফেব্রুয়ারি গুতেরেস এই চিঠি প্রেরণ করেন।

চিঠিতে জাতিসংঘ লিখেছেন, ৪ ফেব্রুয়ারি আপনি যে চিঠি দিয়েছেন তার জন্য আপনাকে আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই, যা ৭ ফেব্রুয়ারি সাক্ষাতের সময় আপনার রোহিঙ্গা সংকট ও অগ্রাধিকার বিষয়ক প্রতিনিধি খলিলুর রহমান আমার কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। আমি বাংলাদেশের সঙ্গে জাতিসংঘের দৃঢ় সংহতি এবং আপনার নেতৃত্বে সংস্কার প্রক্রিয়ার প্রতি আমাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করতে চাই।

আন্তোনিও গুতেরেস লিখেছেন, বাংলাদেশ ও ওই অঞ্চলের ওপর রোহিঙ্গা সংকটের প্রভাবের পাশাপাশি রাখাইন রাজ্যে ক্রমবর্ধমান মানবিক পরিস্থিতি সম্পর্কে আপনি (ড. ইউনূস) যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আমিও তার সঙ্গে একমত। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন আদায়ের কাজ অব্যাহত রাখবে জাতিসংঘ। মিয়ানমারের সংকট রাজনৈতিকভাবে সমাধানের লক্ষ্যে আঞ্চলিক সংস্থা, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সংগঠন আসিয়ান এবং অন্যান্য অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ অব্যাহত থাকবে। বিশেষ করে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ এবং স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসনের অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি করা হবে।

রাখাইনের সম্প্রদায়গুলোর কাছে মানবিক সহায়তা এবং তাদের জীবিকা নির্বাহের জন্য জাতিসংঘের কান্ট্রি টিমগুলোকে নির্দেশ দেওয়ার কথা জানিয়ে মহাসচিব লেখেন, আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুরোধ করেছি তারা যেন, রাখাইনের সম্প্রদায়গুলোর কাছে মানবিক সহায়তা এবং তাদের জীবিকা নির্বাহের জন্য সর্বাধিক সহায়তা প্রদানে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের জাতিসংঘের স্থানীয় টিমগুলোকে নির্দেশ দেন। এ সকল বিষয়ে সম্পৃক্ত প্রতিটি বিষয়কেই অগ্রাধিকার দেবে জাতিসংঘ। রাখাইন এবং সমগ্র মিয়ানমারের অভাবী মানুষের কাছে নিরাপদ, টেকসই এবং বাধাহীন মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে সমন্বয়কে অগ্রাধিকার দেবে জাতিসংঘ। এই অগ্রাধিকারের মধ্যে মিয়ামারের জন্য জরুরি ত্রাণ এবং আবাসিক ও মানবিক সমন্বয়কারী এ.আই. অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

চিঠির শেষ অংশে মহাসচিব লিখেছেন, আমি আশাবাদী যে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিম এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চ স্তরের সম্মেলনটি নতুন করে বিশ্বব্যাপী মনোযোগ আকর্ষণ করবে। এর মাধ্যমে রোহিঙ্গা ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের জন্য বিস্তৃত সমাধান বিকাশে অবদানের সুযোগ তৈরি হবে। সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে পরামর্শের পর জাতিসংঘ কীভাবে সর্বোত্তম পথে বিষয়টিকে সমর্থন করতে পারে তার জন্য সম্মেলনের ফলাফল এবং পরিকল্পনার অপেক্ষা করছি। 

আগামী ১৩ মার্চ ঢাকা সফর করবেন জাতিসংঘের মহাসচিব। ওই সফরে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সার্বিক বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনার কথা জানিয়েছেন তিনি।

চিঠিতে লিখেছেন, মার্চে, পবিত্র রমজান মাসে আমার আসন্ন বাংলাদেশ সফরে এই আলোচনা আরও এগিয়ে নেওয়ার জন্য আমি অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি।  

Share this news on:

সর্বশেষ

img
সুদানে সামরিক বিমান বিধ্বস্ত; ৪৬ জন নিহত Feb 26, 2025
img
নতুন ছাত্রসংগঠন আত্মপ্রকাশের সাথে সাথেই পদবঞ্চিতদের বিক্ষোভ Feb 26, 2025
img
আফগান নারীরা ক্রিকেট মাঠে ফিরুক,চাওয়া ছেলেদের অধিনায়কের Feb 26, 2025
img
বাংলাকে জাতিসংঘের অফিসিয়াল ভাষা অন্তর্ভুক্তির পদক্ষেপ নিতে নোটিশ Feb 26, 2025
img
বৃষ্টিতে বাংলাদেশ-পাকিস্তানের ম্যাচ পন্ড হওয়ার শঙ্কা Feb 26, 2025
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে নিয়ে যা বললেন ফারুক Feb 26, 2025
নির্বাচনমুখী যাত্রা শুরু হচ্ছে বিএনপির Feb 26, 2025
দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি নিয়ে যা বললেন সেলিমা রহমান Feb 26, 2025
img
নিরাপত্তা দিতে না পারলে দ্রুত পদত্যাগের আহ্বান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার প্রতি Feb 26, 2025
img
আত্মপ্রকাশ করলো শিক্ষার্থীদের নতুন সংগঠন ‘বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ’ Feb 26, 2025