সরকার গোষ্ঠীস্বার্থে ঐক্যবদ্ধ জাতিকে বিভক্ত করেছে: জিএম কাদের

বর্তমান সরকার গোষ্ঠীস্বার্থে ঐক্যবদ্ধ জাতিকে বিভক্ত করেছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জিএম কাদের। তিনি বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অন্যায়ভাবে আমাদের সভা, সমাবেশ ও মিছিলের ন্যায় স্বাভাবিক রাজনীতিতে বাধা দিচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) জাপার বনানী কার্যালয়ে জাতীয় পার্টি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, বর্তমান সরকার বিভাজন সৃষ্টি করে দেশকে অন্ধকারের পথে নিচ্ছে। ঘৃণা ও প্রতিহিংসার প্রসার ঘটিয়ে দেশকে সংঘাত ও সহিংসতার পথে নেয়া হচ্ছে। দেশের আইন শৃঙ্খলা কারো নিয়ন্ত্রণে নেই। দেশ অরাজক পরিস্থিতির মধ্যে চলছে। কে কোথায় বেইজ্জত হবে, কার বাড়ি-ঘর ভাঙচুর হবে, বা কে কখন দুর্বৃত্তের হাতে নিহত হবে... কেউ বলতে পারে না।

তিনি বলেন, ২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়ে সংগ্রাম করেছে। বর্তমান সরকার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আমাদের অবদান অস্বীকার করতে চাচ্ছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও হয়রানি করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, বড় দুটি রাজনৈতিক দল সব সময় জাতীয় পার্টিকে ধ্বংস করতে চেয়েছে। ১৯৯০ সালের পর আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর মামলা-হামলা দিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। আমাদের অফিস ভাঙচুর করা হয়েছে। আমাদের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বাঁধা দেওয়া হয়েছে। যা এখন আবার নতুন করে শুরু হয়েছে। আর একটি দল আমাদের দলের মাঝে বিভক্তি সৃষ্টি করে আমাদের দুর্বল করার চেষ্টা করেছে। সকল বাঁধা বিপত্তি মোকাবেলা করে জাতীয় পার্টি জনগণের সকল অধিকারের প্রশ্নে মাঠে ছিল, মাঠে থাকবে।

তিনি বলেন, ২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আমরা দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে মাঠে ছিলাম। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যোগ দিয়ে রংপুরে আমাদের নেতা-কর্মীরা হামলা ও মামলার শিকার হয়েছে। গ্রেফতার হয়ে জেল খেটেছে। রংপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আমাদের ২ জন নেতা শহীদ হয়েছেন।

তিনি বলেন, সরকার বড় বড় কথা বলছে। কিন্তু, তাদের কোনো দায়িত্ব আছে বলে মনে হয় না। প্রতিদিন দ্রব্যমূল্য বেড়েই চলছে। আয় দিয়ে মানুষের দিন চলছে না। দেশে বেকারত্বের হার বেড়েই চলছে। চাঁদাবাজি ও দখলদারি চলছে আগের মতই, শুধু ব্যক্তির পরিবর্তন হয়েছে। সামাজিক অস্থিরতা বাড়ছে। সঙ্গে সঙ্গে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বিনষ্ট হচ্ছে। ফলশ্রতিতে অর্থনীতির বিপর্যস্ত হাল। দেশে পরিবর্তনের হাওয়া বইছে। সাধারণ মানুষ পরিবর্তন চায়। আমরাই দেশের মানুষকে দুর্নীতি ও দুঃশাসন থেকে মুক্তি দেবো। সেই লক্ষ্যেই আমাদের বর্তমান রাজনীতি।

অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মহাসচিব মোঃ মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, উপস্থিত ছিলেন, প্রেসিডিয়াম সদস্য নাসরিন জাহান রতনা, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, এ্যাড. মোঃ রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, সৈয়দ দিদার বখত, লিয়াকত হোসেন খোকা, জহিরুল ইসলাম জহির, মোস্তফা আল মাহমুদ, শেরীফা কাদের, মাশরুর মওলা, জসীম উদ্দিন ভূঁইয়া।

বক্তব্য রাখেন চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহমুদুর রহমান মাহমুদ, এ্যাড. লিয়াকত আলী খান, ইঞ্জিঃ মোস্তফা মহসিন, ভাইস চেয়ারম্যান সালাহ উদ্দিন আহমেদ মুক্তি, আহমেদ শফি রুবেল, হুমায়ুন খান, যুগ্ম মহাসচিব এবিএম লিয়াকত হোসেন চাকলাদার, আলহাজ¦ আব্দুর রাজ্জাক প্রমুখ।

Share this news on:

সর্বশেষ

img
‘ধূমকেতু’র প্রবেশপত্র নিয়ে কারচুপি, ক্ষোভে দেব-রানা সরকার Jul 30, 2025
img
সিলেটে স্কুলছাত্র হত্যার ঘটনায় ৮ জনের ফাঁসি, ৭ জনের যাবজ্জীবন Jul 30, 2025
img
সিনেমা হিট করাতে মিথ্যা বলেছিলেন আমির খান, চাইলেন ক্ষমা Jul 30, 2025
img
নতুন লুকে নেটদুনিয়ায় ঝড় তুললেন কুসুম শিকদার Jul 30, 2025
img
এনসিপির অনুরোধে স্থান পরিবর্তন, কাঁটার বদলে ফুলের বার্তা ছাত্রদলের Jul 30, 2025
img
সরকারের ভেতর সরকার আছে : এহসানুল হক Jul 30, 2025
img
৩ আগস্টের ছাত্র সমাবেশ শহীদ মিনারের পরিবর্তে শাহবাগে করবে ছাত্রদল Jul 30, 2025
img
২ দিনের রিমান্ডে সাবেক এমপি সোলায়মান সেলিম Jul 30, 2025
img
লাপাতা লেডিজের কাহিনী অবলম্বনে শুরু হচ্ছে নতুন ধারাবাহিক Jul 30, 2025
img
আমি এখনো কোনো দলের চাকর নই : নীলা ইস্রাফিল Jul 30, 2025
না ফেরার দেশে মিষ্টি জান্নাতের বাবা Jul 30, 2025
img
নিজের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগকে ‘নট কারেক্ট’ বললেন সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক Jul 30, 2025
img
মেসিদের লিগে নাম লেখাচ্ছেন বায়ার্নের তৃতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা Jul 30, 2025
img
আয়-ব্যয় বেড়েছে জাপার Jul 30, 2025
img
‘হ্যাপি বার্থ ডে’ গান গাইতে গিয়েই পোশাক বিড়ম্বনায় জেনিফার লোপেজ Jul 30, 2025
img
দুপুরে অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছেন বিসিবি সভাপতি বুলবুল Jul 30, 2025
img
২৪ ঘণ্টার অভিযানে ঢাকায় গ্রেপ্তার ১৮৬ Jul 30, 2025
img
‘বিগ বস’-এর প্রস্তাব ফেরালেন তারা, কিন্তু কেন? Jul 30, 2025
img
আজ বিকেলে সিইসির সঙ্গে এনসিপি প্রতিনিধি দলের বৈঠক Jul 30, 2025
img
শহীদ মিনার থেকে ছাত্রদলের সমাবেশ সরিয়ে নেওয়ায় ধন্যবাদ জানিয়েছে এনসিপি Jul 30, 2025