যাদের রোজা কবুল হয় না, তারা সাধারণত কিছু বিশেষ কারণে রোজা রাখার মূল উদ্দেশ্য থেকে বিচ্যুত হন। এক্ষেত্রে, শুধুমাত্র পানাহার ও খাওয়া-দাওয়া না করা, অথবা শারীরিক কষ্ট সহ্য করা, রোজার সওয়াব পাওয়ার জন্য যথেষ্ট নয়। রোজা কবুল হওয়ার জন্য সঠিক উদ্দেশ্য, আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস, আন্তরিকতা এবং রোজার নিয়ম-নীতি মেনে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বলেছেন, "তোমাদের ওপর রোজা ফরয করা হয়েছে, যেমনটা করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর। যাতে তোমরা মুত্তাকী বা আল্লাহভীরু হতে পারো।" (সূরা বাকারা, আয়াত ১৮৩)
হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘কত রোজাদার আছে, যাদের রোজার বিনিময়ে ক্ষুধা ছাড়া আর কিছুই জোটে না!’ -(সুনানে ইবনে মাজাহ : ১৬৯০)
তারা কারা? হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি মিথ্যা বলা ও সে অনুযায়ী আমল বর্জন করেনি, তার এ পানাহার পরিত্যাগ করায় আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই।’ -(সহিহ বোখারি : ১৯০৩)
অর্থাৎ রমজান মাস শুধুমাত্র উপোস থাকার মাস নয়। কেবল না খেয়ে থাকলেই রোজা হবে না। রোজার সওয়াব পেতে হলে আপনাকে চরিত্রবান হতে হবে। মিথ্যা বলা ত্যাগ করতে হবে, আমানত রক্ষা করতে হবে, কাউকে গালি দেওয়া যাবে না, পরনিন্দা করা যাবে না। অথচ আমরা অহরহই এমন করি।
বাইরে কাজকর্ম করে বাসায় এসে কোনো কিছু এলোমেলো দেখলে স্বামী রাগারাগি করে, স্ত্রীকে বকা দেয়, গালি দেয়। রিক্সা ভাড়া ঠিক না করে রিক্সায় চড়ে নামার সময় ঝগড়া করে। সময় কাটানোর জন্য বন্ধুদের সঙ্গে বসে বসে পরনিন্দা করে। রোজা রেখে মিথ্যা বলে, ঘুষ খায়।
আপনি হয়তো ভাবছেন রোজা রাখছেন। কিন্তু, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলছেন, এগুলো রোজা নয়, এমন রোজার আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই। আল্লাহ এমন রোজা কবুল করেন না। তাহলে কীভাবে পরিপূর্ণভাবে রোজার সওয়াব পাওয়া যাবে? নিজের চরিত্রকে উন্নত করা। সচ্চরিত্রবান হওয়া।
হাদিসে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি তার চরিত্রকে সৌন্দর্যমন্ডিত করেছে, আমি তার জন্য জান্নাতের সর্বোচ্চ স্থানে
একটি ঘরের জিম্মাদার।’ -(সুনানে আবু দাউদ : ৪৮০০)
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু রাসুল স: থেকে বর্ননা করেন। তিনি বলেছেন, রমজান মাসের সর্বাধিক লাভ তো তারাই অর্জন করে, যারা সিয়াম ও কিয়াম পালন করে।
এস এস / এস এন