কার্যালয় ছাড়লেন বিএসইসি চেয়ারম্যান। কর্মবিরতিতে বিএসইসি কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও। এর আগেও চার ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপে কার্যালয় ছাড়েন বিএসইসির চেয়ারম্যান সহ তিন কমিশনার। কর্মচারীদের কাজ বন্ধের এমন ঘোষণায় শঙ্কিত বিনিয়োগকারীরা।
এদিন নির্বাহী পরিচালকসহ সংস্থাটির বেশির ভাগ কর্মকর্তা-কর্মচারী কার্যালয়ে উপস্থিত থাকলেও তারা কোনো কাজে অংশগ্রহন করেননি।পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিএসইসির কার্যালয়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
সকালে ৮ থেকে ১০ জন বিনিয়োগকারী বিএসইসির কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে জড়ো হয়ে সংস্থাটির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে আয়োজিত এই বিক্ষোভ থেকে ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান আবু আহমেদেরও পদত্যাগ দাবি করা হয়।
ঢাকা স্টক ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায়, দেশের পুঁজিবাজার দীর্ঘদিন ধরে নানা সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বিনিয়োগকারীদের পুঁজি হারানোর পাশাপাশি বাজার মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানগুলো অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, বিএসইসি-এর অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলার ঘটনা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
ডিবিএর প্রেসিডেন্ট এ প্রসঙ্গে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নেতিবাচক পরিস্থিতির কারণে পুঁজিবাজার ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, এমন সময়ে বিএসইসির কর্মকর্তাদের মধ্যে সৃষ্ট বিশৃঙ্খলা বাজারের জন্য আরও ক্ষতিকর হতে পারে। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, যদি এই পরিস্থিতির দ্রুত সমাধান না করা হয়, তাহলে এই সংকট আরও প্রকট হবে এবং দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাজার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারেন।
এদিকে, বুধবার বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের পদত্যাগের দাবিতে সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিক্ষোভ করেন। তারা প্রায় চার ঘণ্টার বেশি সময় চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। এই বিক্ষোভের মূল কারণ ছিল নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো।
বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, পুঁজিবাজারের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়া হয়েছে। তদন্ত কমিটি ১২টি তালিকাভুক্ত কোম্পানির অনিয়ম খতিয়ে দেখছে, যার প্রতিবেদন জমা পড়েছে এবং অভিযোগ গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। এতে কিছু অসন্তুষ্ট কর্মকর্তা তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। বিশ্লেষকদের মতে, এই পরিস্থিতি দীর্ঘায়িত হলে দেশের পুঁজিবাজার আরও বড় সংকটে পড়তে পারে।