জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, তার দল পরবর্তী সরকার গঠন করতে না পারলেও, তারা এমন একটি রাজনৈতিক শক্তির সূচনা করেছেন যা আগামী কয়েক দশক ধরে প্রভাবশালী থাকবে।
তিনি এই মন্তব্যটি বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে করেছেন, যা শুক্রবার (৭ মার্চ) প্রকাশিত হয়েছে।
এনসিপির ১৫১ সদস্যের কমিটি ঘোষণার পর, কমিটিতে একজন সমকামী অধিকারকর্মীর অন্তর্ভুক্তি নিয়ে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটির ডানপন্থি বিভিন্ন মহল থেকে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। এর পর, কমিটি ঘোষণার কয়েক দিন পর ওই সদস্যকে কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হয়।
এদিকে, অভ্যুত্থানের পর ইনক্লুসিভ রাজনীতির ঘোষণা দিয়ে কমিটি গঠনের পর দেশটির উদারপন্থি মহলের পক্ষ থেকে সমালোচনা উঠেছে। তবে এনসিপি এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো স্পষ্ট অবস্থান প্রকাশ করেনি।
এ প্রসঙ্গে নাহিদ এএফপিকে বলেন, ‘আমরা অন্তর্ভুক্তিতে বিশ্বাস করি, কিন্তু ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক রীতিনীতি দ্বারা নির্ধারিত কিছু সীমানা আছে।’
বৈচিত্র্য বিবেচনায় তার দল এনসিপির এখনো প্রশংসনীয় রেকর্ড রয়েছে বলেও দাবি করেন সাবেক এই উপদেষ্টা।
সব নাগরিকের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা নারীদের সামনে এনেছি এবং সব বর্ণ ও ধর্মের প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করেছি। সব নাগরিক যাতে তাদের অধিকার উপভোগ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করার জন্য আমরা চেষ্টা করব।’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী বছরের মার্চের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নির্বাচনে দেশটির অন্যতম প্রাচীন রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি জয়ী হবে বলে ব্যাপকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে আন্দোলনকারীদের নতুন দল বিএনপিকে রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে পারে।
নাহিদ মনে করেন, তার দল পরবর্তী সরকার গঠন করতে না পারলেও, তারা এমন একটি রাজনৈতিক শক্তির সূচনা করেছেন, যা আগামী কয়েক দশক ধরে প্রভাবশালী থাকবে।
এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, ‘কেউ জানত না যে একটা বিদ্রোহ হবে, কিন্তু তা ঘটেছে। আমি আন্তরিকভাবে আশা করি এবং আমি বিশ্বাস করি যে আমরা এবার জিততে যাচ্ছি। কিন্তু এই নির্বাচন পৃথিবীর শেষ নয়...আমাদের লক্ষ্য হলো আরও ৫০, ১০০ বা তারও বেশি বছর ধরে এই শক্তি বজায় রাখা।
পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন কখন অনুষ্ঠিত হবে, তা নিয়ে এনসিপি এবং বিএনপির মধ্যে মতানৈক্য রয়েছে। বিএনপি মনে করে জনসমর্থিত সরকারকে ক্ষমতায়িত করার জন্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচন আয়োজন করা উচিত।
বিএনপির অনেক নেতাই অভিযোগ করেন যে এনসিপি নির্বাচন পিছিয়ে দিতে চায়। তবে এমন অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে নাহিদ বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে প্রায়ই নির্বাচন বিলম্বিত করার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করা হয়, কিন্তু এটা সত্য নয়।’
তবে তিনি মনে করেন, শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির পরও দেশে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার সমস্যা থাকলে নির্বাচন আয়োজন করা ‘সম্ভব নয়'৷
সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে একযোগে সংবিধান সংস্কারের জন্য গণপরিষদ নির্বাচনের প্রচারণাও চালাচ্ছে তার দল এনসিপি।