সপ্তাহের ব্যবধানে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) আরেক দফা অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।বিএসইসির ‘সার্ভেইল্যান্স’ কার্যক্রমের একটি সফটওয়্যারের অবৈধ সংযোগ দিয়ে তথ্য পাচার, অর্থ আত্মসাৎ এবং প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে এ অভিযানে যাওয়ার কথা বলেছে দুদক।
সোমবার (১০ মার্চ) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয় বলে জানিয়েছেন দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম।
দুদক জানায়, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে সার্ভেইল্যান্স কার্যক্রমে ব্যবহৃত সফটওয়্যারের অবৈধ সংযোগ প্রদান করে তথ্যপাচার ও অর্থ আত্মসাতসহ প্রকল্প বাস্তবায়নে নানাবিধ অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানকালে সার্ভেইল্যান্স কক্ষ পরিদর্শন, সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য যাচাই এবং প্রাপ্ত তথ্যাদি বিশ্লেষণে দেখা যায় যে, ২০১২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সময়ে সার্ভেইল্যান্স কক্ষের বাইরে পরিচালকের ব্যক্তিগত কক্ষে সফটওয়্যারটির ডেডিকেটেড সংযোগ ছিল, যা বর্তমানে নেই। অত্যন্ত গোপনীয় তথ্য সম্বলিত এ সংযোগ, যা পুঁজিবাজারে ইনফ্লুয়েন্স করতে পারে, তা কোন উদ্দেশ্যে সার্ভেইল্যান্স কক্ষের বাইরে ছিল তা খতিয়ে দেখার লক্ষ্যে সব তথ্যাদি সংগ্রহ করে দুদক টিম।
এ ছাড়া, অভিযানকালে এডিবির অর্থায়নে ক্যাপিটাল মার্কেটের ক্যাপাসিটি বিল্ডিং বিষয়ক সিএমডিপি প্রকল্পের অধীনে আরআইএস সফটওয়্যার সিস্টেম বাস্তবায়ন কার্যক্রমের প্রকল্প সংক্রান্ত তথ্য খতিয়ে দেখে এনফোর্সমেন্ট টিম। ২০১৮ সালে গৃহীত প্রকল্পটির মেয়াদ ২০২৪ সালে শেষ হয়।
কিন্তু সরেজমিন পরিদর্শন ও সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য পর্যালোচনায় প্রায় ২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে গৃহীত প্রকল্পটির প্রজেক্ট কমপ্লিশন রিপোর্ট (পিসিআর) সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে দাখিল করা হলেও আরআইএস সফটওয়্যারটি এখনও ইনস্টল ও হস্তান্তর করা হয়নি। সার্বিক বিবেচনায় এ প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিয়ম হয়েছে। দুদকের টিম শিগগিরই বিস্তারিত প্রতিবেদন কমিশনে দাখিল করবে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ভেতরের একটি চক্র টানা ৭ বছর ধরে এ কাজ করে আসছে। নিয়ম লঙ্ঘন করে সার্ভেইল্যান্স এরিয়ার বাইরে সফটওয়্যারের সংযোগ স্থাপন করে কাজ করছে তারা। এর সঙ্গে জড়িত আছে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকসহ কয়েকজন কর্মকর্তার একটি চক্র।
শেয়ারবাজারের সবচেয়ে স্পর্শকাতর সার্ভেইল্যান্স সফটওয়্যার বাজারের লেনদেন, নজরদারি এবং গোয়েন্দা কার্যক্রম পরিচালনার গোপন তথ্যভান্ডার। এখানে দৈনন্দিন লেনদেন, কারা কীভাবে লেনদেন করছে, কে কোন শেয়ার কিনছে সেসব তথ্য থাকে। চারটি প্রতিষ্ঠানের সার্ভেইল্যান্স রয়েছে। এগুলো হলো- বিএসইসি, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) এবং ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে শেয়ার সংরক্ষণকারী কোম্পানি সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল)। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সফটওয়্যার বিএসইসির। এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে লেনদেন মনিটরিং করা হয়।
এসএম/টিএ