১০ নয়, ঋণের ৫ শতাংশ অর্থ দিলেই মিলবে এক্সিট সুবিধা

।ঋণ থেকে প্রস্থান-সংক্রান্ত নীতিমালা (এক্সিট পলিসি) আরও সহজ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে খেলাপি কিংবা ভালো যেকোনো ব্যবসায়ী গ্রাহক ব্যবসা ও শিল্পের ঋণস্থিতির ন্যূনতম ৫ শতাংশ অর্থ এককালীন পরিশোধ (ডাউন পেমেন্ট) করে তিন বছরের মধ্যে পুরো ঋণ পরিশোধের সুযোগ পাবেন। এতদিন এ সুবিধা নিতে ১০ শতাংশ অর্থ আগে জমা দিতে হতো।

এছাড়া ব্যাংক এ ধরনের আবেদন নিষ্পত্তি করতে সর্বোচ্চ ৬০ দিনের সুযোগ পাবে। আর নির্ধারিত সময়ে নির্দিষ্ট ঋণ কোনো অবস্থাতে সেই পুনঃতফসিল বা পুনর্গঠন করার সুযোগ পাবেন না গ্রাহক।

সোমবার (১০ মার্চ) বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ে সার্কুলার জারি করেছে।

সার্কুলারে বলা হয়, অনেক গ্রাহক তাদের নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কিংবা বিরূপ আর্থিক অবস্থায় ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়, কিংবা খেলাপি হয়ে যায়। নতুন এই সুবিধার মাধ্যমে খেলাপি গ্রাহকরা ব্যাংকগুলোর থেকে এককালীন বিভিন্ন সুবিধা নিয়ে ঋণ পরিশোধ করতে পারবে। কিংবা ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের মাধ্যমে সর্বোচ্চ তিন বছরের মধ্যে একাধিক কিস্তিতে পরিশোধ করতে পারবেন। ব্যাংকের তারল্য প্রবাহ অব্যাহত রাখা ও খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনতে এই নীতিমালা জারি করা হয়েছে। আর এক্সিটের আওতায় ঋণ আদায় ও সমন্বয়ের কোন নির্দিষ্ট নীতিমালা না থাকায় ব্যাংকগুলো এক্সিটের ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন মানদণ্ড অনুসরণ করছে। তাই এমন নীতিমালার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে এই সার্কুলার করা হয়েছে। 

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, ভবিষ্যতে আদায়ের সম্ভাবনা ক্ষীণ এমন বিরূপভাবে শ্রেণিকৃত ঋণ আদায়ের লক্ষ্যে অথবা নিয়ন্ত্রণবহির্ভূত কারণে প্রকল্প বা ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেলে অথবা ঋণগ্রহীতা কর্তৃক প্রকল্প বা ব্যবসা বন্ধ করার ক্ষেত্রে নিয়মিত ঋণের প্রস্থান সুবিধা দেওয়া যাবে। বিদ্যমান ঋণস্থিতির ন্যূনতম ৫ শতাংশ এককালীন নগদে পরিশোধপূর্বক এই সুবিধার জন্য আবেদন করতে হবে। ঋণগ্রহীতার আবেদন প্রাপ্তির ৬০ দিনের মধ্যে ব্যাংক কর্তৃক তা নিষ্পত্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ বা নির্বাহী কমিটির দ্বারা এই সুবিধা অনুমোদন হতে হবে বলে সার্কুলারে বলা হয়েছে। তবে মূল ঋণ সর্বোচ্চ ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত এক্সিট সুবিধা প্রদানের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের ওপর অর্পণ করা যাবে। যা আগে ছিল ১০ লাখ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, এই নীতিমালার আওতায় সব ধরনের ছোট-বড় গ্রাহক সুবিধা পাবেন। এতে ব্যাংকের নিয়মিত কিংবা খেলাপি গ্রাহকও এক্সিট পলিসির মাধ্যমে সুবিধা নিতে পারবেন। এই নীতিমালাটি দীর্ঘদিন পরিকল্পনাধীন ছিল। এতদিন একেক ব্যাংক একেক নিয়ম অনুসরণ করত। এখন নির্দিষ্ট নীতিমালা করা হয়েছে, যার কারণে নির্দিষ্ট সীমার বেশি সুবিধা কোনো গ্রাহক পাবেন না।

নীতিমালার সাধারণ নির্দেশনায় বলা হয়, এ নীতিমালা এক্সিট প্রদানের ক্ষেত্রে ন্যূনতম মানদণ্ড হিসেবে বিবেচিত হবে। এ নীতিমালার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ব্যাংকগুলো এক্সিট সংক্রান্ত নিজস্ব নীতিমালা প্রণয়ন করবে যা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক অনুমোদিত হবে। ব্যাংক কর্তৃক প্রণীতব্য নীতিমালায় সার্কুলার বর্ণিত শর্তাদির চেয়ে নমনীয় কোনো শর্ত যুক্ত করা যাবে না। ভবিষ্যতে আদায়ের সম্ভাবনা ক্ষীণ এরূপ বিরূপমানে শ্রেণিকৃত ঋণ আদায়ের লক্ষ্যে অথবা নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কারণে প্রকল্প বা ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেলে অথবা ঋণগ্রহীতা কর্তৃক ব্যবসা বন্ধ করার ক্ষেত্রে নিয়মিত ঋণের এক্সিট সুবিধা প্রদান করা যাবে।

এক্সিট সুবিধার আওতায় এক বা একাধিক কিস্তিতে ঋণ পরিশোধ করা যাবে। একাধিক কিস্তিতে ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে পরিশোধসূচি প্রণয়ন করতে হবে। ঋণ পরিশোধের মেয়াদ সাধারণভাবে দুই বছরের অধিক হবে না। তবে পরিচালনা পর্ষদ যুক্তিসঙ্গত কারণ বিবেচনায় সর্বোচ্চ আরও এক বছর সময় বৃদ্ধি করতে পারবে।

Share this news on:

সর্বশেষ

img
চেষ্টা করেছি হতাশ না হয়ে ধৈর্য রাখার: রিশাদ Oct 19, 2025
img
পল্লী চিকিৎসকের ধারণা জিয়াউর রহমানের, বিএনপি তা বজায় রাখবে: তারেক রহমান Oct 19, 2025
img
৮ মাস পর দেশে ফিরলেন ভারতের উপকূলে উদ্ধার হওয়া বাংলাদেশি ১২ নাবিক Oct 19, 2025
img
৩০ দিন ফাস্টফুড না খেলে শরীরে হবে যে পরিবর্তন Oct 19, 2025
img
শত্রুর সঙ্গে থাকা যায় কিন্তু বিশ্বাসঘাতকের সঙ্গে নয়: রিয়া মনি Oct 19, 2025
img
বয়কট করা ক্লাবগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসছে কোয়াব Oct 19, 2025
img
কক্সবাজার থেকে ঢাকায় ৬ ঘণ্টা পর বিমান চলাচল শুরু Oct 18, 2025
img
আফগানদের না বলায় পাকিস্তানের ত্রিদেশীয় সিরিজে সুযোগ পেল জিম্বাবুয়ে Oct 18, 2025
img
আহত জুলাই যোদ্ধা আতিকুলের সার্বিক খোঁজ নিলেন নাহিদ ইসলাম Oct 18, 2025
img
আরাউহোর শেষের গোলে রোমাঞ্চকর জয়ে শীর্ষে বার্সেলোনা Oct 18, 2025
img
চট্টগ্রাম বন্দরে ১২০০ টন পণ্য নিয়ে জাহাজডুবি Oct 18, 2025
img
রেকর্ডগড়া বোলিংয়ে বাংলাদেশকে জেতালেন রিশাদ, ম্যাচশেষে আবেগঘন প্রতিক্রিয়া Oct 18, 2025
img
মিষ্টি কম দেয়া নিয়ে টর্চ জ্বালিয়ে দুই গ্রামের সংঘর্ষ Oct 18, 2025
img
আন্তর্জাতিক আদালতে ইসরায়েলের আপিল প্রত্যাখ্যান, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বহাল Oct 18, 2025
img
‘জুবিনদা আমার কণ্ঠ ছিলেন’ মন্তব্যে কটাক্ষের মুখে দেব Oct 18, 2025
img
তারকাদের ইনজুরিতে নতুনদের সুযোগ দেখছেন বার্সা কোচ হ্যান্সি ফ্লিক Oct 18, 2025
img
বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের আভাস Oct 18, 2025
img
জনগণের বিশ্বাস অগ্নিকাণ্ড পূর্বপরিকল্পিত: ফখরুল Oct 18, 2025
img
তদন্ত শেষে বোঝা যাবে কিভাবে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে: ফায়ার সার্ভিসের ডিজি Oct 18, 2025
সুস্থতার জন্য নবীজি যে আমল করতেন | ইসলামিক টিপস Oct 18, 2025