জনগণের সমস্যা সমাধানে রাজনীতিবিদদের ঐক্যবদ্ধ কাজ করতে হবে: তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জানিয়েছেন, জনগণের সমস্যা সমাধানে রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান।

তিনি বলেছেন, জনগণকে ঘিরে আমরা রাজনীতি করি। সুতরাং আজকে দেশের মানুষ দ্রব্যমূল্য নিয়ে সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছে। রাজনীতিবিদরা কেন এসব বিষয়ে বেশি বেশি ডিবেট করছে না যে, আমি কীভাবে বাজার ব্যবস্থাপনা সাজাব? উৎপাদন কীভাবে বাড়ানো হবে? এসব নিয়ে আলোচনা হচ্ছে না। জাতির সামনে এসব নিয়েও কথা বলা উচিত।

মঙ্গলবার (১১ মার্চ) ন্যাশনালিস্ট ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের (এনপডিএম) ইফতার মাহফিলে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, শুধু সংস্কার, তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে আলোচনা হলেই চলবে না। কোনো দল ক্ষমতায় আসলে কীভাবে সমস্যার সমাধান করবে? এসব নিয়ে আলোচনা করতে হবে।

তারেক রহমান বলেন, আমাদের ভিন্ন-ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শ থাকতে পারে। কিন্তু আমরা গণতন্ত্র ও একটি মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার প্রশ্নে সবাই ঐকমত্য। যেখানে মানুষের কথা বলার অধিকার থাকবে।

দেশের বহুল আলোচিত বিষয় হচ্ছে সংস্কার উল্লেখ করে বিএনপি শীর্ষ এই নেতা বলেন, বিশেষ করে আমরা ছোট, বড়, মাঝারি সব রাজনৈতিক দল মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও একটি সুন্দর পরিবেশের জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। প্রায় সব দল মিলে জাতির সামনে আড়াই বছর আগে ৩১ দফা প্রণয়ন করেছি। যখন অনেকেই সংস্কারের কথা বলেননি। আমরা স্বৈরাচারের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে সংস্কারের কথা বলেছি। আজকে অনেকেই অনেক কথা বলছেন সংস্কার নিয়ে। আমরা স্বাগত জানাই। তবে, রাজনীতির মূল লক্ষ্য হলো জনগণ এবং দেশ। অবশ্যই সংস্কারের প্রয়োজন আছে। এসব নিয়ে আলোচনা থাকবেই।

বাংলাদেশে এক কক্ষ বিশিষ্ট সংসদের পরিবর্তে দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট হলে কী কী হবে, এসব নিয়ে আলোচনা আছে উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, একজন ব্যক্তি দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী নিয়ে কথা হচ্ছে। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্যের বিষয়ে কথা হচ্ছে।

তারেক রহমান বলেন, প্রায় ২০ কোটি মানুষের দেশে চিকিৎসা ব্যবস্থা কী হবে? বাজার ব্যবস্থা কী হবে? এসব নিয়ে কথা বলার নামও তো সংস্কার। শুধু কী নির্বাচনের সময় বা তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে কথা বলাই কী সংস্কার? যাতে মানুষ মিনিমাম চিকিৎসা সুবিধা পায় সেটিও ভাবতে হবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সঠিক শিক্ষা দিতে হলে একটি শিক্ষা ব্যবস্থা প্রণয়ন করতে হবে। এ বিষয়েও ডিবেট বা কর্মপরিকল্পনা থাকা উচিত প্রত্যেকটি দলের। শিক্ষা ব্যবস্থাকে কীভাবে দেখতে চাই, সেটিও সংস্কারের অংশ।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আমাদেরকে কৃষির উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে। ২০ কোটি মানুষের খাদ্য সংস্থান করা ও চাহিদা মেটাতে হলে এটা করতে হবে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যেমন খাল খননের মাধ্যমে কৃষক যে জমিতে এক ফসল হতো সেখানে দুইবার ফসল ফলিয়েছেন। যেখানে দুইবার ফসল হতো সেখানে তিনবার ফসল ফলিয়েছেন। বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে বন্যা নিয়ন্ত্রণ করেছিলেন। তিনি কৃষকের মেরুদণ্ড ধীরে ধীরে মজবুত করেছিলেন। এটিও তো অনেক বড় সংস্কার। আমাদেরকে শিল্পন্নোয়নের কথা ভাবতে হবে। কীভাবে উদ্যোক্তাদের নিরাপত্তা দেওয়া যায় সে বিষয়েও চিন্তা করতে হবে। শ্রমিকদের ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে হবে। এটাও কিন্তু অনেক বড় সংস্কার।

তারেক রহমান আরও বলেন, আমি বহু বছর ধরে দেশের বাইরে। ঢাকা শহরসহ সারা দেশে পরিবেশ দূষণ তীব্রতর হচ্ছে। পরিবেশ হুমকির সম্মুখীন। আমরা কী রাজনৈতিক দলগুলো এসব নিয়ে প্রস্তাব উত্থাপন করতে পারি না? কীভাবে উন্নতি ঘটাতে পারি? দূষণ কমাতে পারি। আমি তো মনে করি এই দূষণ কমানোও সংস্কারের অংশ। কারণ লাখ-লাখ মানুষ দূষণের কারণে অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। দেশ ও দেশের মানুষকে রক্ষা করতে হলে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের পরিকল্পনা উপস্থাপন করতে পারে।

এনডিএম’র চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও অংশ নেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ড. মাহদী আমিন, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, কূটনীতিক এবং পেশাজীবীরা।

আরএইচ/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
পাশবিক এই হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া হবে: আসিফ নজরুল Jul 12, 2025
img
অনুমতি ছাড়া মাছ ধরায় সৌদিতে বাংলাদেশি আটক Jul 12, 2025
img
ঠাকুরগাঁও সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে প্রাণ গেল ১ বাংলাদেশির Jul 12, 2025
img
গাজাকে শিশুদের কবরস্থান বানাচ্ছে ইসরাইল: জাতিসংঘ Jul 12, 2025
img
মিটফোর্ডে হত্যাকাণ্ড নিয়ে রাষ্ট্রদূত মুশফিকের আবেগঘন প্রতিক্রিয়া Jul 12, 2025
img
উইম্বলডন থেকে বিদায় নিলেন সার্বিয়ান তারকা জোকোভিচ Jul 12, 2025
img
বিচ্ছেদের গুঞ্জনে মুখ খুললেন নয়নতারা Jul 12, 2025
img
ডোমিনিকান উপকূলে নৌকা ডুবে প্রাণ গেল ৪ জনের, নিখোঁজ ২০ Jul 12, 2025
img
বছর না ঘুরতেই রাজনীতি নিয়ে মত বদলালেন কঙ্গনা Jul 12, 2025
img
কিসাসই এসব কসাইয়ের সমাধান: আহমাদুল্লাহ Jul 12, 2025
img
মেঘলা আকাশ, শুষ্ক পরিবেশে রাজধানীতে বাড়ছে গরম Jul 12, 2025
img
নয়াদিল্লিতে ধসে পড়ল ৪ তলা ভবন, অনেকে আটকা পড়ার আশঙ্কা Jul 12, 2025
img
অপরাধী যেই হোক, তার স্থান কখনোই আইনের ঊর্ধ্বে নয়: মির্জা ফখরুল Jul 12, 2025
img
সহশিল্পীর সঙ্গে রোম্যান্টিক ভঙ্গিমায় জয়া, ছবি ঘিরে চমক Jul 12, 2025
img
সুনামগঞ্জ সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে প্রাণ গেল ১ বাংলাদেশির Jul 12, 2025
img
গাইবান্ধায় পৃথক দুই ঘটনায় প্রাণ গেল ২ জনের Jul 12, 2025
img
বিএনপির ত্রাণ ও দুর্যোগ বিষয়ক কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেল গঠন Jul 12, 2025
img
ডব্লিউএইচও থেকে অনির্দিষ্টকালের ছুটিতে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল Jul 12, 2025
img
হজ শেষে দেশে ফিরলেন ৮৭ হাজার ১০০ হাজি Jul 12, 2025
img
প্রেসিডেন্টকে টিভিতে দেখতে না চাওয়ায় ৬ মাসের কারাদণ্ড Jul 12, 2025