দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০ বিলিয়নের ঘরে ওঠানামা করছে। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর রিজার্ভ থেকে ডলার খরচ ও অর্থ পাচার অনেকটা বন্ধ থাকলেও ২১ বিলিয়নের গণ্ডি পার হয়নি রিজার্ভ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে আমদানি ব্যয় সংকুচিত করা ছিল। সম্প্রতি সংকট ঠেকাতে আমদানি বাড়ানো হয়েছে। যে কারণে রিজার্ভ একটি নির্দিষ্ট জায়গায় আটকে আছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্য বলছে, চলতি মাসের ৬ তারিখ পর্যন্ত দেশের গড় রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬ দশমিক ৬০ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৬৬০ কোটি ডলার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২১ দশমিক ৪০ বিলিয়ন বা ২ হাজার ১৪০ কোটি ডলার।
তবে গত ৭ মার্চ এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের বিল বাবদ ১ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন বা ১৭৫ কোটি ডলার পরিশোধ করে বাংলাদেশ। এতে বৈদেশিক মুদ্রার প্রকৃত রিজার্ভ কমে ২০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে আসে। যদিও এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে তথ্য হালনাগাদ করা হয়নি।
বিপিএম-৬ অনুযায়ী, ২০২৩ সালের জুনে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২৩ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ডলার। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে তা ছিল ১৯ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন ডলার। ওই বছরের জুন শেষে রিজার্ভ দাঁড়ায় ২১ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলারে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়ায় ২১ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলারে। আর সর্বশেষ গত ২৭ ফেব্রুয়ারি তা ২০ দশমিক ৯০ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়ায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের বিল পরিশোধের পর দেশের গড় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫২৩ কোটি ডলার বা ২৫ দশমিক ২৩ বিলিয়ন ডলার। আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী, ১ হাজার ৯৯৫ কোটি ডলার বা ১৯ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলার।
গড় রিজার্ভ ও বিপিএম-৬ এই দুই হিসাবের বাইরে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের আরও একটি হিসাব রয়েছে, সেটি হচ্ছে ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ। এ তথ্য আনুষ্ঠানিকভাবে শুধু আইএমএফকে জানায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ হিসাবে আইএমএফের এসডিআর খাতে থাকা ডলার, ব্যাংকগুলোর বৈদেশিক মুদ্রা ক্লিয়ারিং হিসাবে থাকা বৈদেশিক মুদ্রা এবং এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের বিল বাদ দিয়ে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভের হিসাব করা হয়। সেই হিসাবে দেশের ব্যয়যোগ্য প্রকৃত রিজার্ভ এখন ১৫ বিলিয়ন ডলারের কিছুটা উপরে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের শুরুতে গড় রিজার্ভ ছিল ২৯ দশমিক ৭৩ বিলিয়ন ডলার। আর বিপিএম-৬ অনুযায়ী ছিল ২৩ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ডলার। তবে বাইরে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিট বা প্রকৃত রিজার্ভের আরেকটি হিসাব আছে, যা শুধু আইএমএফকে দেওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সেই হিসাবে দেশের ব্যবহারযোগ্য প্রকৃত রিজার্ভ এখন ১৫ বিলিয়ন ডলারের ঘরে।
টিএ/