সংস্কার ও নির্বাচনকে মুখোমুখি দাঁড় করানো হচ্ছে: তারেক রহমান

‘সংস্কার ও নির্বাচনকে মুখোমুখি দাঁড় করানো দুঃখজনক’-এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।তিনি বলেন, ‘আড়াই বছর আগে পরিবর্তনের লক্ষ্যে ৩১ দফা রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের প্রস্তাব উত্থাপন করেছে বিএনপি।দুঃখজনকভাবে আমরা দেখছি, একটি পরিস্থিতির উদ্ভব হচ্ছে। সংস্কার এবং নির্বাচনকে মুখোমুখি দাঁড় করানো হচ্ছে। এখানে আপনারা সবাই রাজনীতিবিদ।গণতন্ত্র বলতে একজন সাধারণ মানুষের কাছে কি বুঝা যায়? সাধারণ মানুষের কাছে এক কথায় নির্বাচন, নির্ভয়ে ভোট দেওয়ার যে সিস্টেম , সেটিকে আমরা গণতন্ত্র বলি।'


শনিবার ১২ দলীয় জোটের ইফতার মাহফিলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
রাজধানীর মালিবাগের স্কাই সিটি হোটেলে এই ইফতার মাহফিল আয়োজন করা হয়। এতে ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা অংশ নেন।

তারেক রহমান বলেন, ‘কেউ কেউ বলছেন যে সংস্কার শেষ হবে তারপরে নির্বাচন হবে। আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি, যেটা শেষ হয়ে যায় সেটা তো সংস্কার হতে পারে না। সংস্কার একটা চলমান প্রক্রিয়া। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় যে গাফিলতিগুলো আছে, সেই ত্রুটিগুলোকে আমরা সংস্কার করব, পরিবর্তন করব। সময়ের সঙ্গে সামনে এগিয়ে নিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করব। দেশের মানুষের জন্য যে চিকিৎসা ব্যবস্থা আছে, সেটিকে আমরা পরিবর্তন করব, উন্নত করব। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সেটি এগিয়ে যাওয়ার পর আরও ভালো করার চেষ্টা করব।

‘মতভিন্নতা’ থাকলেও যেকোনো মূল্যে ঐক্য ধরে রাখার আহ্বান বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আমাদেরকে যেকোনো মূল্যে ঐক্যকে ধরে রাখতে হবে। মত-ভিন্নতা থাকবে, আমরা বসব, আলোচনা করব। আমরা এমন কিছু বলা ও করা থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করব, যাতে করে কোনোভাবেই স্বৈরাচার বা তার প্রেত্মাতারা আবার এদেশের মানুষের কাঁধে চেপে বসতে না পারে। এটি হোক আমাদের প্রত্যাশা, এই হোক আমাদের শপথ আজকের এই ইফতার মাহফিলে।

আন্দোলনে সহকর্মী-আপনজনদের হারানোর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আসুন যে ঐক্যকে নিয়ে আমরা স্বৈরাচারকে বিদায় করেছিলাম সেই ঐক্যকে আমরা ধরে রাখি। আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে আগামী দিনে এই ঐক্যকে বজায় রেখে, এই ঐক্যকে ধরে রেখে, এদেশের মানুষের প্রত্যাশিত গণতন্ত্রকে আমরা প্রতিষ্ঠিত করব। এদেশের মানুষের প্রত্যাশিত সংস্কার প্রক্রিয়াকে আমরা সবাই মিলে আলোচনার মাধ্যমে সবাই মিলে বাস্তাবায়ন করব।

তারেক রহমান বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক ভিন্নমত আছে, আদর্শ সবার এক নয়। কিছু কিছু ভিন্নতা আছে। একটি জায়গা আমরা সবাই এক-তা হচ্ছে বাংলাদেশ, বাংলাদেশের মানুষ ও গণতন্ত্র। এখানে কিন্তু কোনো বিভেদ নেই। ব্যাসিক বিষয়টিতে আমরা সবাই এক। ’


১২ দলীয় জোটের সমন্বয়ক জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে ও মুখপাত্র জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদার সঞ্চালনায় ইফতারপূর্ব আলোচনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জেএসডির শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, গণঅধিকার পরিষদ ফারুক হাসান ও জাতীয় পার্টির (জাফর) কাজী নাহিদ বক্তব্য দেন।

ইফতারে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ড. মাহাদি আমিন, বিএনপির তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক রিয়াজুদ্দিন নসু, নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী, আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, ইসলামী ঐক্যজোটের মাওলানা আবদুর রকীব, জাগপার রাশেদ প্রধান, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন পারভেজ, বাংলাদেশ লেবার পার্টি ফারুক রহমান, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মুফতি মহিউদ্দিন ইকরাম, সাম্যবাদী দলের সৈয়দ নুরুল ইসলামসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশ নেন।

এমআর/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ওমানে কর্মরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য বড় সুখবর Jul 04, 2025
img
মাল্টা ও লিবিয়া উপকূলে অভিযান, উদ্ধার ১১৭ অভিবাসী Jul 04, 2025
img
বনানীর জাকারিয়া হোটেল হামলা: অভিযুক্তরা শনাক্ত, গ্রেফতারে চলছে পুলিশের অভিযান Jul 04, 2025
img
পিআর চায় অযোগ্যরা, ব্যালট চায় জনগণ : আমিনুল হক Jul 04, 2025
img
ভালুকের আক্রমণে প্রাণ গেল মোটরসাইকেল চালকের Jul 04, 2025
img
বিয়ের আগের দিন ক্যাম্পাসে এসে আটক জবি ছাত্রলীগ নেতা Jul 04, 2025
img
রাজনীতিতে যোগ দিয়ে ‘সাকিব ও মাশরাফির মতো আমারও ভুল হয়েছে’ Jul 04, 2025
img
দ্বিপাক্ষিক ওয়ানডে সিরিজগুলো বাদ দেওয়ার আহ্বান ক্লাসেনের Jul 03, 2025
img
এইচএসসি পরীক্ষায় নকল করায় একই কলেজের ১০ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার Jul 03, 2025
img
সীমান্তে হত্যাকাণ্ড পঞ্চাশ বছরেও কোনো সরকার বন্ধ করতে পারে নাই : নাহিদ ইসলাম Jul 03, 2025
img
পনেরো বছর পর গানে ফিরলেন শঙ্কর চক্রবর্তী Jul 03, 2025
img
‘বর্ডার ২’ করলেও ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত দিলজিতের Jul 03, 2025
স্ত্রীকে ডিভোর্স দেওয়ার পরও বৈবাহিক সম্পর্ক;শ্রীঘরে মানবাধিকার কর্মী Jul 03, 2025
বিচার বিভাগের সংস্কার নিয়ে যে জটিলতার কথা জানালেন তারেক Jul 03, 2025
ছোট উদ্যোক্তাদের বিপদে ফেলতে পারে বিটিআরসি নীতি, অভিযোগ বিএনপির Jul 03, 2025
যেকারনে হোয়াইট হাউস থেকে বেড়িয়ে যেতে হয় জাকারবার্গকে Jul 03, 2025
মাত্র ৮ মাসেই বদল পররাষ্ট্র সচিব, নীতিহীনতায় অচল মন্ত্রণালয়! Jul 03, 2025
চাঁ'দা না পেয়ে রাজবাড়ী বালু ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে গুরুতর জখম Jul 03, 2025
সুভাষ ঘাইয়ের নতুন সিনেমায় ‘হিরোইন’ চরিত্রে অভিনেতা রীতেশ Jul 03, 2025
img
নতুন চমকের আভাস দিলেন রণবীর সিং Jul 03, 2025