শেখ হাসিনার বিচার হতে হবে, নির্বাচন পেছানো যাবে না: টুকু

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেছেন, যে সরকারই আসুক শেখ হাসিনার বিচার করতেই হবে। কিন্তু এজন্য জাতীয় সংসদ নির্বাচন পেছানো যাবে না।

শনিবার (২২ মার্চ) রাজধানীর আসাদ গেটে ফ্যামিলি ওয়ার্ল্ডের মিলনায়তনে ঢাকাস্থ সিরাজগঞ্জ সাংবাদিক সমিতি বার্ষিক সাধারণ সভা ও ইফতার মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের যখন পতন হয় তখন তারা হওয়া হয়ে যায় মন্তব্য করে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে, ড. ইউনূস সাহেব আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন একজন সম্মানিত ব্যক্তি।

তাকে অসম্মান করাটা ঠিক হবে না। তাকে সুযোগ করে দেওয়া হোক, যে অতি দ্রুত নির্বাচন দিয়ে উনি চলে যান। এখন কেউ যদি বলে, হাসিনার বিচার যতদিন পর্যন্ত না হবে, নির্বাচন ততদিন হবে না! এখন হাসিনার বিচার কি আমরা চাই না? সে কি আমাদের নির্যাতন করেনি? হাসিনার বিচার অবশ্যই হতে হবে, যে সরকারই আসুক না কেন। এখন তার বিচার যদি নির্বাচনের সঙ্গে ট্যাগ করা হয়..., তার বিচার হতে সাত বছর লাগবে।

তাহলে কি আমরা এই সাত বছর বসে-বসে তামাক খাব? বললেই তো হবে না। অপ্রাপ্তবয়স্কদের মতো কথা বললে তো হবে না। সব মিলিয়ে আমাদের জুলাই আন্দোলনের যে বিজয়, এটা যেন উহুদের যুদ্ধের মতো না হয়। এটা খেয়াল রাখতে হবে।
আওয়ামী লীগের ইতিহাস শুধুই পালানোর মন্তব্য করে তিনি বলেন, দেখেন ৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পর্যন্ত গাছের পাতা পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ছিল। যেই সকাল বেলা খবর হল শেখ মুজিবুর রহমান সাহেব নিহত হয়েছেন, আওয়ামী লীগ কোথায় হাওয়া হয়ে গেল, কেউ খুঁজে পেল না। আবার যদি এরও পেছনে যাই, আমি ৭০ নির্বাচনে জনগণের হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা দিয়ে তাদেরকে নির্বাচিত করল। তারপরে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য আলোচনা সমালোচনা অনেক কিছু করেছে। ৭ মার্চের ভাষণ যদি শোনেন গায়ের লোম দাঁড়িয়ে যাবে। কিন্তু ওই ভাষণে সমঝোতার কথা ছিল। ভাষণের শেষের গিয়ে বললেন এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। জয় বাংলা জয় পাকিস্তান। তো এইটা তো স্বাধীনতার ঘোষণা হলো না। তখন বলছিলেন আসুন বসুন, আলোচনা করুন পার্লামেন্টে আসুন, এটা কি স্বাধীনতার ঘোষণা? তারপরে ২৫ মার্চ নিরস্ত্র বাঙালির উপরে পাকিস্তানিরা যখন হামলা করল, তখনো আওয়ামী লীগ নাই। নাইতো নাই। এই সাত কোটি মানুষ কি করবে? কোথায় যাবে? কার কাছে যাবে? কার কাছে আশ্রয় নেবে? এমপি নেতা সব ভেগে গিয়েছিল। কেউ ছিল না। এই হলো আওয়ামী লীগ। তাদের ভেগে যাওয়ার অভ্যাস সেই ৭১ সাল থেকে।

বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী কমিটির এই সদস্য বলেন, আওয়ামী লীগ জন্মগতভাবে ফ্যাসিস্ট। এ কথা এজন্য বললাম, যে মাওলানা ভাসানী এই দলটা তৈরি করেছিলেন। কিন্তু তিনি দলে থাকতে পারেনি। উনি যেদিন ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি করলেন, সেদিনও এই আওয়ামী লীগ উনাকে হেনস্থা করেছিল। তার মানে ওরা ছাড়া আর কেউ মানুষ না। এটাই হচ্ছে আওয়ামী লীগ। এমন চিন্তা ভাবনায় কি হয়? যখনই এদের (আওয়ামী লীগের) পতন হয় তখন এরা হাওয়া হয়ে যায়।

সম্প্রতি রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, গতকাল সারা ঢাকা শহরে একটা রিউমার ছড়িয়েছিল। তার মানে দেশে স্টাবিলিটি নাই। এ সরকার ভালো করেছে। এই যে রোজাটা গেল, এটলিস্ট মার্কেট দাম নিয়ে কেউ কথা বলতে পারে নাই। আলুর, পেঁয়াজের দাম তো কমই ছিল। পেঁয়াজের দামে প্রতি রোজাতেই আগুন লেগেছে, এবার লাগে নাই। কিন্তু এই অর্জনটা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি (অবনতি) দিয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

টুকু তার এলাকা সিরাজগঞ্জের উন্নয়ন নিয়ে বলেন, আমি সিরাজগঞ্জবাসীর উন্নয়নে দলীয়করণ বিবেচনা করিনি। দল দেখে মুখ দেখে কারও উপকার করিনি। আওয়ামী লীগের বিন্দু মাত্র মায়া মমতা নেই। আমাদের উন্নয়নকে অস্বীকার করে। আওয়ামী লীগের চরিত্র সবাই জানে।

ইফতার মাহফিলে আরো উপস্থিত ছিলেন, ঢাকাস্থ সিরাজগঞ্জ সাংবাদিক সমিতির নবগঠিত কমিটির সভাপতি কাওসার আজম, সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম মল্লিক, সংগঠনের সাবেক সভাপতি সেলিম খান, সদস্য সিনিয়র সাংবাদিক শহীদুল ইসলাম ও রায়হান মোর্শেদসহ ঢাকায় কর্মরত সিরাজগঞ্জ জেলার প্রায় দেড় শ সাংবাদিক।

আরএইচ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ঋতুপর্ণা হলেন বাংলাদেশের মেসি, বললেন বাফুফে কর্মকর্তা Jul 04, 2025
img
রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এলে বিনিয়োগ বাড়বে : গভর্নর Jul 04, 2025
img
ইতিহাসে প্রথমবার, ৩৫টি ভাষায় সরাসরি অনুবাদ হবে মক্কায় জুমার খুতবা Jul 04, 2025
img
ওমানে কর্মরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য বড় সুখবর Jul 04, 2025
img
মাল্টা ও লিবিয়া উপকূলে অভিযান, উদ্ধার ১১৭ অভিবাসী Jul 04, 2025
img
বনানীর জাকারিয়া হোটেল হামলা: অভিযুক্তরা শনাক্ত, গ্রেফতারে চলছে পুলিশের অভিযান Jul 04, 2025
img
পিআর চায় অযোগ্যরা, ব্যালট চায় জনগণ : আমিনুল হক Jul 04, 2025
img
ভালুকের আক্রমণে প্রাণ গেল মোটরসাইকেল চালকের Jul 04, 2025
img
বিয়ের আগের দিন ক্যাম্পাসে এসে আটক জবি ছাত্রলীগ নেতা Jul 04, 2025
img
রাজনীতিতে যোগ দিয়ে ‘সাকিব ও মাশরাফির মতো আমারও ভুল হয়েছে’ Jul 04, 2025
img
দ্বিপাক্ষিক ওয়ানডে সিরিজগুলো বাদ দেওয়ার আহ্বান ক্লাসেনের Jul 03, 2025
img
এইচএসসি পরীক্ষায় নকল করায় একই কলেজের ১০ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার Jul 03, 2025
img
সীমান্তে হত্যাকাণ্ড পঞ্চাশ বছরেও কোনো সরকার বন্ধ করতে পারে নাই : নাহিদ ইসলাম Jul 03, 2025
img
পনেরো বছর পর গানে ফিরলেন শঙ্কর চক্রবর্তী Jul 03, 2025
img
‘বর্ডার ২’ করলেও ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত দিলজিতের Jul 03, 2025
স্ত্রীকে ডিভোর্স দেওয়ার পরও বৈবাহিক সম্পর্ক;শ্রীঘরে মানবাধিকার কর্মী Jul 03, 2025
বিচার বিভাগের সংস্কার নিয়ে যে জটিলতার কথা জানালেন তারেক Jul 03, 2025
ছোট উদ্যোক্তাদের বিপদে ফেলতে পারে বিটিআরসি নীতি, অভিযোগ বিএনপির Jul 03, 2025
যেকারনে হোয়াইট হাউস থেকে বেড়িয়ে যেতে হয় জাকারবার্গকে Jul 03, 2025
মাত্র ৮ মাসেই বদল পররাষ্ট্র সচিব, নীতিহীনতায় অচল মন্ত্রণালয়! Jul 03, 2025